বেডরুম থেকেই শুরু হয়েছিল ‘মিলিয়ন ডলারের’ সফটওয়ার প্রতিষ্ঠান1 min read
Reading Time: 2 minutesবিশেষ প্রতিনিধি,
সাহেদ ইসলাম একজন সফটওয়ার ইন্জিনিয়ার। স্বপ্নের আমেরিকায় পাড়ি দেয়ার পর, এই দেশে বেশ ভালই চলছিল তার চাকুরী জীবন। টুইন টাওয়ারের এক প্রতিষ্ঠান চাকুরী করতেন তিনি। সেপ্টেম্বরের এগার তারিখে সেখানে সন্ত্রাসী হামলার পরে অনেকের সাথে তারও পাল্টে যায় জীবন। ভেঙে পড়া ভবনের যেই অফিসে চাকুরী করতেন, সেই প্রতিষ্টানও ভেঙে পড়ে, চাকুরী হারান তিনি। কিন্তু মনোবল হারান নি। নিয়মিত চাকুরী না পেয়ে ফ্রি লান্সিং কাজ শুরু করেন তিনি এবং তার স্ত্রী জেনি। সেটাও বেশি টাকার কাজ ছিল না প্রথম দিকে।কাজ ছোট ছোট হলেও, তাদের সৃষ্টিশীলতা দিয়ে যখন তাদের মালিককে খুশি করতে পারতেন, সেটাই কাজের গতি বাড়িয়ে দিত অনেক খানি।
সাহেদ ইসলাম বলছিলেন, তখনও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়ার ডেভলপমেন্ট এর আউটসোর্সিং কাজগুলো শুরু হচ্ছিল একটু একটু করে।সেসময় অনেকেই বাংলাদেশ থেকেই এখানকার কোম্পানীর জন্য কাজ করতেন।কিন্তু অনেকক্ষেত্রে দেখা যেত, কাস্টমার চাচ্ছেন একটি আপেল, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে তারা পাচ্ছেন, আপেল এর মতই, কিন্তু ভিন্ন একটি ফল কমলালেবু।এটা হতো কেবল মাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিন্নতার কারনে। সে কারনেই তারা উদ্যোগ নেন, তারা নিজেরাই দাড় করাবেন একটি সফওয়ার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠা। নিজের নামের থেকে এস’ আর স্ত্রীর ডাক নামে জেনি’ থেকে জে’ নিয়ে দুজনে মিলে দাড় করালেন, এসজে ইনোভেশন। যাত্রা শুরু হয়েছিল তাদের বেডরুম থেকেই।
‘এমনও দিন গেছে দিনভর আমি ১৮ শত মেইল করেছি কাজ পাওয়ার জন্য, কিন্তু উত্তর পেয়েছি মাত্র ১ টির। আমার স্ত্রীএই প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ মালিকানায় আছে, এবং সেও একজন সফটওয়ার ইন্জিনিয়ার।এমনও রাত গেছে সে বাচ্চাদের নিয়ে সে যে বিছানায় ঘুম দেয়ার চেষ্টা করছে, আমি সেই একই বিছানায় ল্যাপটপ নিয়ে সারারাত কাজ করেছি। এমনও দিন গেছে সারা রাত ধরে কাজ করেছি, কিন্তু সকাল ৭টায় যখন ঘুমের সময় তখন আমার ক্লায়েন্ট ফোন করেছে, সেটাওতেও আমি এবং আমরা খুশি থাকতাম। কেননা, তখন, ক্লায়েন্ট দের কে খুশি দেখতে চাওয়াটাই ছিল একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যের কারনেই আজ একটি বড় প্রতিষ্ঠান দাড় করাতে পেরেছি। আজ আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে, ইউক্রেন, ভারতের গোয়া, বাংলাদেশের ঢাকা এবং সিলেটে সহ মোট ৫টি শাখা অফিস সমানতালে কাজ করছে।এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীর সংখ্যা ১৪০ এর বেশি।আমাদের এখন বাৎসরিক আয় এক দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার, এবং এই বছরে সেটা আরো বাড়বে বলে আমাদের বিশ্বাস।’ -বলছিলেন সাহেদ ইসলাম।
‘নেইবারহুড ডট কম,নামে আমাদের তৈরী একটি ওয়েবসাইট নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস এ নিবন্ধ ছাপানো হয় ২০০৪ সালে।আমার মনে আছে, এর পর তারা প্রায় শতাধিক কর্মী নিয়োগ করেছিল প্রতিষ্ঠানের কাস্টমারদের বেড়ে যাওয়া চাহিদার যোগান দিতে। এখনও মুলত ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট তৈরী, কোম্পানীর প্রয়োজনমত সফটওয়ার ডেভোলপমেন্ট এর কাজ করছি।কিন্তু আমাদের সফলতা ছড়িয়ে আছে অনেক জায়গায়। টিচার্স পে টির্টাস ডট কম। শিক্ষকরা তাদের লেকচার বিক্রি করে তারা তাদের কাজ শুরু করেছিল মাত্র এক হাজার ডলার নিয়ে, এখন তাদের বাৎসরিক আয় দুই শত মিলিয়ন ডলার।এই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের হাতে গড়া। এর বাইরে, আমরা এখন জনসন এন্ড জনসন এর অফিসিয়াল ভেন্ডার হিসেবে কাজ করছি। এর বাইরে, আমরা কাজ করছি এডোবি’র সাথেও। মুভ অন নামে একটি উবারের মত একটি কোম্পানী তৈরী করার চেষ্টা করছি।’ -উঠে আসার গল্প বলতে গিয়ে বলছিলেন এসজে ইনোভেশন এর প্রধান নির্বাহী সাহেদ ইসলাম।
সম্প্রতি সাহেদ ইসলাম এবং তার স্ত্রী দুজনেই কম্পিউটার সায়েন্স এর শিক্ষার্থী। তাদের প্রতিষ্ঠান এসজে ইনোভেশন বাংলাদেশে তাদের কর্মক্ষেত্র বিস্তার করেছে। তরুনদের মধ্যে কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং এবং সফটওয়ার ডেভলপমেন্টকে এগিয়ে নিতে বুট ক্যাম্পের উদ্যোগ নিয়েছেন। উদ্দেশ্য, বর্তমান বাস্তবতায় তাদেরকে প্রশিক্ষন এবং ক্লায়েন্ট দের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করাতে শেখানো। আর যথাযত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিভাবে তরুনেরা আরো বেশি বিশ্বমাধ্যমে কাজ করতে পারে, সেটা প্রক্রিয়াগুলো শেখানো।
md sharukh hasan rakin
Very Inspiring story. I feel happy to read this article. I will start my company as soon as possible. In sha Allah.