বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায়  চীনের ৫ সুপার কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান1 min read

জুন ২৫, ২০১৯ 2 min read

author:

যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায়  চীনের ৫ সুপার কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান1 min read

Reading Time: 2 minutes

সামরিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের ৫টি সুপার কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে এটি একটি নতুন মাত্রা এনে দিবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপ আগামী সপ্তাহে জি২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যকার বৈঠককে জটিল করে তুলবে। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের টেক কোম্পানীগুলোকে পাঁচটি চীনা প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসা করার বিষয়ে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছে। বাণিজ্য বিভাগ আরও জানিয়েছে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে এমন ব্যবসার সাথে তারা কখনোই আপোষ করবেন না। ২৫ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। 

বাণিজ্য বিভাগের আরও একটি বিবৃতিতে জানানো হয় যে, যেসব চীনা কোম্পানি তাদের সুপার কম্পিউটার এবং যন্ত্রপাতি সামরিক ও পারমাণবিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে তাদের সাথে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিশেষ লাইসেন্স ছাড়া পণ্য সামগ্রী রপ্তানি করতে পারবে না। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেকটা একই রকম নিষেধাজ্ঞা চীনা মোবাইল ও প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের উপর জারি করেছিলো। 

নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হচ্ছে সুপার কম্পিউটার নির্মাতা সুগন ও এর তিনটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। অন্য প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ইউশি জিয়াননান ইনস্টিটিউট অব কম্পিউটিং টেকনোলজি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ এসব প্রতিষ্ঠানগুলো চাইনিজ আর্মি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মালিকানাধীন। চীনের আধুনিক সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানগুলো।

সুগন একাধারে চীনের অন্যতম ডাটা সেন্টার এবং সুপারকম্পিউটার সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এটি বিশ্বের উল্লেখযোগ্য কম্পিউটার সিস্টেম নির্মাতাদের মধ্যে একটি। সুগন তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, একটি প্রযুক্তি নির্ভর প্রোজেক্টে সুগন যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য কিছু কোম্পানির(ইন্টেল, এন.ভিডিয়া, এএমডি) সাথে সংযুক্ত হয়ে কাজ করে আসছিলো। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তকে সুগন কর্তৃপক্ষ চীনের উপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির আরেকটি উদ্যোগ বলে আখ্যায়িত করেছে। 

এদিকে এএমডি(অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস)- এর মুখপাত্র একটি ই-মেইল বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমানে আমরা শিল্প ও নিরাপত্তা ব্যুরো কর্তৃক পাঁচ চীনা কোম্পানির উপর গৃহীত সিদ্ধান্তের মূল্যায়ন করছি । এএমডি অবশ্যই এই তালিকায় উল্লেখিত বিধিনিষেধগুলি মেনে চলবে, যেমনটি আমরা আজ পর্যন্ত মার্কিন আইনগুলো মেনে চলেছি। আমরা চীনে আমাদের যৌথ উদ্যোগগুলোর সাথে সম্পর্কিত পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কি হতে পারে তা নির্ধারণ করার জন্য পর্যালোচনা করছি।” 

এনভিডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন কয়েক বছর ধরে সুপার কম্পিউটারের কর্তৃত্বের উপর ভিত্তি করে একটি তিক্ত যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বলছে যে সর্বাধিক শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারগুলো জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই তারা কখনোই নিরাপত্তার বিষয়ে গৃহীত কোন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবে না।   

কালো তালিকাভুক্তির ফলে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো যন্ত্রাংশ বিক্রি করতে অনুমতি লাগবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে চীনের প্রযুক্তি বা দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়ন দমন করা বা বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে চীনকে চাপ দেওয়ার কোন লক্ষ্য নেই যুক্তরাষ্ট্রের। এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রহন করা হয়েছে। 

লেখক- সালেহীন সাকিব 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *