লাইফ স্টাইল

সুস্বাস্থ্যময় হোক পবিত্র রমজান 1 min read

এপ্রিল ৩০, ২০২০ 3 min read

author:

সুস্বাস্থ্যময় হোক পবিত্র রমজান 1 min read

Reading Time: 3 minutes

শুরু হয়ে গেছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান পবিত্র রমজান মাসটি ইসলামিক ক্যালেন্ডারের নবম মাস এই মাসের ২৯৩০ দিন সারা বিশ্বের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ধর্মীয় রীতি অনুসারে পানাহার এবং সকল ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে নিজেদের বিরত রাখেন। স্বাভাবিকভাবেই এই মাসটিতে খাদ্যাভাসে অনেকটা পরিবর্তন আসে। কিন্তু নিজেকে কাজ-কর্মের জন্য প্রস্তুত রাখতে সঠিক খাবারটি বেঁছে নেয়া অত্যন্ত জরুরী। রমজান মাসে শরীরকে সতেজ রাখে এমন কিছু খাদ্যের পুষ্টি গুনাগুণ সম্পর্কে আপনাদের জানিয়ে রাখছি

ইফতার

রোজা ভাঙ্গার সময় প্রচুর পরিমাণে পানীয়, স্বল্প চর্বিযুক্ত তরল খাবার এবং শক্তির জন্য কিছু প্রাকৃতিক শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত  

পানীয়: রোজা ভাঙ্গার সময় অতিরিক্ত ক্যালোরি বা চিনি ছাড়া হাইড্রেশন সরবরাহ করে তেমন পানীয় বেছে নিন  কৃত্রিম শরবতের জায়গায় শুদ্ধ খাবার জল, দুধ ফলের রস, লেবুর শরবত এক্ষেত্রে ভালো বিকল্প হতে পারে দুধ ফলের রস আপনার শরীরে প্রাকৃতিক শর্করার পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদানের যোগান দেবে ফলের রসের পাশাপাশি তৈলাক্ত খাবার পরিহার করে ইফতারের তালিকায় রাখুন ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলমূল

খেজুর: হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সময় থেকে রোজা ভাঙার জন্য ঐতিহ্যগতভাবে খেজুর এক দারুণ পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে খেজুরকে প্রাকৃতিক শর্করা, পটাসিয়াম, তামা, ম্যাঙ্গানিজের মতো খনিজ এবং ফাইবারের এক দুর্দান্ত উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় রমজানের এই মাসটিতে আপনি খেজুরের পাশাপাশি কিসমিসের মতো অন্যান্য পুষ্টিকর শুকনো খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন  

স্যুপ: আরব দেশগুলোতে ইফতারের একটি আবশ্যক খাবার হচ্ছে স্যুপ তাদের তৈরি স্যুপে সাধারণত মাংসের ঝোল, ডাল, পাস্তা মটর ব্যবহার করা হয় ইফতারে এই ধরনের হালকা খাবার আপনার বদহজম রোধে সহায়তা করবে 

সাধারণত ইফতারের খাদ্যতালিকা এক এক দেশের লোকজনের এক এক ধরনের হয়ে থাকে সবসময় চেষ্টা করবেন এমন সব খাবারের পদ ইফতারে রাখতে যা আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসমূহ সরবরাহ করবে ইফতারের সময় হালকা কিছু তরল পানীয় দিয়ে রোজা ভাঙ্গার পর আপনি মাছ, মাংস, শাকসবজি, ডাল-ভাত অথবা রুটি পরিবেশন করতে পারেন সবশেষে রাখতে পারেন দই৷ এই খাবারগুলোতে সব রকম খাদ্য উপাদানই বিদ্যমান রয়েছে 

রোজার এই সময়টাতে আপনার শরীরকে দীর্ঘক্ষণ খাবার থেকে দূরে রাখতে হয়৷ তাই দীর্ঘসময় বিরতির পর ইফতারের তালিকায় চর্বিযুক্ত, মিষ্টিজাতীয় খাবার পানীয়গুলো অল্প পরিমাণে রাখার চেষ্টা করুন মনে রাখবেন, রমজানের সময়টাতে নিজেকে সুস্থ রাখা সবচেয়ে বেশি গুরত্বপূর্ণ এই সময় খাবারের পরিমাণের চেয়ে গুণগত মানকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত খাবার শেষে বদহজমের সমস্যা এড়াতে হালকা হাঁটাহাটি করা যেতে পারে 

সেহরি

যেহেতু সেহরির খাবার আপনাকে পুরো দিনের শক্তির যোগান দেবে তাই এই সময়টাতে কার্বোহাইড্রেট উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার সমূহ বেছে নিন সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান হজমে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়তা করবে সেহেরির খাদ্যতালিকায় আপনি নিম্নের খাবারসমূহ রাখতে পারেন:

ওটস: তাজা বা শুকনো ফল, বাদাম, দুধ বা দইয়ের সাথে গমের তৈরী এই খাবারটি হতে পারে পুরো দিন আপনাকে সতেজ রাখার উৎকৃষ্ট একটি মাধ্যম ওটস আপনার শরীরে ফাইবার সরবারাহের পাশাপাশি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় তরলের চাহিদা পূরণ করবে যেহেতু এটি দুধের সাথে খাওয়া হয়, দুধ থেকে আপনি পাবেন ক্যালসিয়াম, আয়োডিন এবং বি ভিটামিনের মতো প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ 

শ্বেতসার সম্পন্ন খাবার: এশিয়ান দেশগুলোতে সেহেরিতে সবচেয়ে প্রচলিত খাবার হচ্ছে ভাত ভাতের পাশাপাশি আপনি ফলের তৈরী বিভিন্ন পুডিং খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন তবে এই সময়টাতে অতিরিক্ত নোনতা খাবার পরিহার করা শ্রেয় কারণ লবণযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে সারাদিন আপনি তৃষ্ণার্ত অনুভব করতে পারেন 

দই: যদি সম্ভব হয় তবে সকলেরই উচিত ভারী খাবার শেষে পাতে দই রাখা এতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন এবং বি ভিটামিন জাতীয় পুষ্টিকর উপাদানসমূহ আপনি আপনার পছন্দসই কোন ফলের সাথে একত্রিত করে দই পরিবেশন করতে পারেন 

রুটি: ফাইবারের একটি আদর্শ উৎস হচ্ছে রুটি তবে রমজান মাসে ফ্রিজে দীর্ঘদিন সংরক্ষিত আছে তেমন নোনতা মাংসের ঝোলের সাথে রুটি গ্রহণ পরিহার করা উচিত এই সময়টাতে মসুর ডাল, বাদামযুক্ত বাটার, নরম পনির বা কলা হতে পারে রুটির সাথে ভালো সংমিশ্রণ কিন্তু রুটি যেহেতু শুকনো খাবার তাই আপনাকে রুটির সাথে অবশ্যই প্রচুর জলপান নিশ্চিত করতে হবে 

রোজার সময় যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত

আমাদের দেশের মানুষ এমনিতেই খাদ্যের পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে সচেতন নন। তার উপরে রমজান মাস আসলে যেন অস্বাস্থ্যকর খাবার কেনার ধুম পড়ে যায়। যদি ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে চান তবে এই খাবারগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন- 

অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার- ভাজা সমূচা, ভাজা চিকেন, ফ্রাইড স্প্রিং রোলস, ভাজা আলুর চিপস ইত্যাদি

উচ্চ চিনি এবং উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার গুলাব জামুন, জিলাপি, বাদাম হালুয়া এবং বারফির মতো অতিরিক্ত  মিষ্টি জাতীয় খাবার 

উচ্চ ফ্যাটযুক্ত রান্না করা খাবার- তৈলাক্ত তরকারী কিংবা চিটচিটে প্যাস্ট্রি

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *