বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত: ‘১০ বছরে বিএসএফের গুলিতে নিহত ২৯৪ বাংলাদেশি’1 min read

জুলাই ১৬, ২০১৯ 2 min read

author:

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত: ‘১০ বছরে বিএসএফের গুলিতে নিহত ২৯৪ বাংলাদেশি’1 min read

Reading Time: 2 minutes

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন গত ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার  সংসদে বলেছেন ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

মন্ত্রী জানান ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ সালে ২৪ জন, ২০১২ সালে ২৪ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে ৩ জন বাংলাদেশী হত্যার শিকার হয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থল সীমান্ত ৪,০৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশকে তিন দিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে ভারত। বাংলাদেশের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম এই পাঁচটি রাজ্যের সীমান্ত সংযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারতের কূটনীতিক সম্পর্ক ভালো হলেও দু`দেশের সীমান্ত পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্তগুলোর একটি। তবে এই রক্তের ইতিহাস পুরোপুরিই একতরফা। বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত প্রসঙ্গে চ্যানেল ফোরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন রাগম্যান এক প্রতিবেদনে বলেছিলেন, সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে, যার ৯৫ শতাংশই বাংলাদেশি।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভূটান ও মিয়ানমারের সাথে স্থল সীমান্ত আছে। কিন্তু এক বাংলাদেশের সীমান্তেই নির্বিচারে গুলি চালিয়ে, ধরে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে বাংলাদেশী হত্যা করার সাহস দেখায় বিএসএফ।

মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, জাল মুদ্রা পরিবহণ, অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারীদের ঠেকাতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর শুট-অন-সাইট বা দেখামাত্র গুলি করার বিতর্কিত নীতিটি এখনো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বহাল আছে। এই নীতির অপব্যবহার করে ২০০০ সালের পর থেকে প্রায় ১০০০ এর বেশি সাধারণ ও বেসামরিক বাংলাদেশী হত্যা করেছে বিএসএফ।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিবিসির তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ১ হাজার ৩০৪ জন মানুষের প্রাণ গেছে। তাদের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ১৯৯৬ সালে ১৩ জন, ১৯৯৭ সালে ১১ জন, ১৯৯৮ সালে ২৩ জন, ১৯৯৯ সালে ৩৩ জন, ২০০০ সালে ৩৯ জন, ২০০১ সালে ৯৪ জন, ২০০২ সালে ১০৫ জন, ২০০৩ সালে ৪৩ জন, ২০০৪ সালে ১৩৫ জন, ২০০৫ সালে ১০৪ জন, ২০০৬ সালে ১৪৬ জন, ২০০৭ সালে ১২০ জন, ২০০৮ সালে ৬২ জন, ২০০৯ সালে ৯৬ জন, ২০১০ সালে ৭৪ জন, ২০১১ সালে ৩১ জন, ২০১২ সালে ৩৮ জন, ২০১৩ সালে ২৯ জন, ২০১৪ সালে ৩৩ জন, ২০১৫ সালে ৪৫ জন এবং
২০১৬ সালে ৩০ জন সীমান্তে নিহত হন।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারায় বাংলাদেশের কিশোরী ফেলানী। সীমান্ত কাঁটাতারে ফেলানীর লাশ ঝুলে থাকে প্রায় ৫ ঘণ্টা। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা অসহায় ফেলানীর ছবিটি সেই সময় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি খণ্ড চিত্র পুরো পৃথিবীর সামনে তুলে ধরেছিল।

লেখক- হাসান উজ জামান 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *