featured বিশ্ব

কাশ্মীর ইস্যু: পাকিস্তান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ কি বলছে?1 min read

আগস্ট ১০, ২০১৯ 2 min read

author:

কাশ্মীর ইস্যু: পাকিস্তান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ কি বলছে?1 min read

Reading Time: 2 minutes

সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে। সংবিধানের ৩৭০ ধারা জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল। কিন্তু এখন থেকে তারা পরিচালিত হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে। জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই টুকরো করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে লাদাখকে বের করে তৈরি করা হয়েছে নতুন এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না।

ইতিমধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। জম্মু ও কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করা নিয়ে ভারতের ঘোষণার ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা তা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তুলব। প্রতিটি ফোরামে প্রতিটি দেশের প্রধানের সঙ্গে আমরা এ নিয়ে কথা বলব…আমরা তা গণমাধ্যমে তুলব এবং বিশ্বকে জানাব।’

ইমরান খান আরও বলেন, ‘আমি ভয় পাচ্ছি যে ভারত কাশ্মীরে জাতিগত নিধন শুরু করবে। তারা স্থানীয় লোকজনকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করবে এবং বাইরে থেকে অন্যদের সেখানে নিয়ে এসে সংখ্যাগরিষ্ঠ বানাবে। এর ফলে স্থানীয় লোকজন দাসে পরিণত হওয়া ছাড়া আর কিছু হবে না।’ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধানও তার সেনারা কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছিলেন।

ভারতের সঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত ঘোষণা করেছে ইমরান খানের সরকার। পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনারকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত নিজেদের হাইকমিশনারকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান।

কাশ্মীরের উত্তর অংশের নিয়ন্ত্রণকারী চীন দিল্লীর এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে ভারতের এই সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছে বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেছেন, ‘ভারতের এই কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য’। তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্ষেত্রে ভারতের উচিত দুই দেশের মধ্যকার চুক্তিগুলো কঠোর ভাবে মেনে চলা। এতে করে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত বিষয়ক সম্পর্কের অবনতি এড়ানো যাবে।’

তবে কাশ্মীর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি হচ্ছে, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় ইস্যু। এতে তাদের নিজস্ব কোনো মতামত নেই। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মরগ্যান ওরটেগাস কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানকে শান্তি বজায় রাখতে ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মরগ্যান বলেন, ‘আমরা সব পক্ষকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা চাই সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক। আমরা অবশ্যই মনে করি, কাশ্মীরসহ উদ্বেগের অন্যান্য ইস্যুতেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংলাপ হোক।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসর মুখপাত্র স্টেফানে দুজারিক মহাসচিবের পক্ষ থেকে কাশ্মীর বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। স্টেফানে দুজারিক বলেছেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব উদ্বেগের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীর পরিস্থিতি নজরে রাখছেন এবং তিনি (ভারত ও পাকিস্তানকে) সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।’ কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের নাক গলানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে শিমলা চুক্তির কথাও গুরুত্বের সাথে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের কোনো প্রকার মন্তব্য বা কোনো প্রকার প্রশ্ন করার এখতিয়ার নেই। তবে প্রতিবেশী হিসেবে আমরা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

অপরদিকে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ কাশ্মীর নিয়ে দেশের পানি ঘোলা করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিজস্ব বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। আশা করব ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়টি নিয়ে দেশে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না।’

লেখক- হাসান উজ জামান 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *