খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন, হৃদরোগের ঝুঁকি দূর করুন1 min read
Reading Time: 2 minutesহৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এগুলো আমাদের সবার কাছেই এখন অতি পরিচিত সমস্যা। কারণ এইসব রোগের শিকার প্রচুর মানুষ প্রতিদিন আমাদের আশেপাশে মারা যাচ্ছে। হৃদরোগ বিশ্বজুড়ে অসংক্রামক মহামারী রোগের রূপ ধারণ করেছে। মূলত আমাদের অসচেতনতাই হৃদরোগের জন্য প্রধানতম দায়ী। গবেষকরা বলছেন, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অনেকাংশেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। কীভাবে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনবেন? এই লেখাটির মাধ্যমে সে সম্পর্কেই বিস্তারিত আজ আপনাদেরকে জানাবো।
খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন
আপনি কি অধিক খেতে পছন্দ করেন কিংবা অল্প সময়েই প্লেট ভর্তি খাবার খেয়ে শেষ করে ফেলেন? তাহলে এবার থামুন। কারণ আপনি যদি এরকম অনিয়ন্ত্রিতভাবে খাবার খেতে থাকেন, তাহলে খুব সহজেই বিভিন্ন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়বেন। আবার এমনটি যদি হয়, আপনি চেষ্টা করেও কম খেতে পারছেন না। তাহলে আপনি ছোট প্লেটে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এতে মনস্তাত্ত্বিকভাবে বেশি খাওয়ার ব্যাপারে আপনাকে বাঁধা দিবে। আর প্রতিবেলায় এক সাথে অনেক খাবার না খেয়ে, ভেঙ্গে ভেঙ্গে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
বেশি বেশি সবজি ও ফলমূল খাবেন
হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সবজি ও ফলমূল এই ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অন্যতম প্রধান উৎস। শাকসবজি, ফলমূল কিংবা উদ্ভিদ–ভিত্তিক খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক ভাবে সহায়তা করতে পারে। সবজি ও ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি খনিজ পদার্থ থাকে; যেগুলো উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধেও ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।
জমাটবাঁধা চর্বিযুক্ত খাদ্য কমিয়ে ফেলুন
যেসব খাবারে জমাট–বাঁধা চর্বি থাকে সেসব খাবার আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। কোলেস্টেরল আমাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। গরুর মাংস, মুরগি–হাঁসের মাংস, দুগ্ধজাত খাবার, ডিম ইত্যাদি আমাদের আমিষের প্রধান উৎস, তবে এগুলোতে বেশি পরিমাণে জমাটবাঁধা চর্বিও থাকে। আপনি যদি এগুলো একেবারেই খাওয়া বাদ দেন, তাহলে আপনার শরীরে আমিষের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আবার যদি বেশি পরিমাণে খান তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকবেন।
এই ক্ষেত্রে আপনাকে কৌশল অবলম্বন করে এমন খাবার খেতে হবে যেগুলোতে আপনার আমিষের চাহিদা পূরণ হবে এবং অতিরিক্ত চর্বি থেকেও রক্ষা পাবেন। যেমন: উচ্চ চর্বিযুক্ত মাংসের পরিবর্তে মাছ খেতে পারেন, এরপর দুগ্ধজাত খাবারের ক্ষেত্রে স্কিমড দুধ অর্থাৎ দুধ থেকে চর্বি সরিয়ে নিয়ে খাবেন, আবার গরুর মাংস থেকে চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করতে পারেন।
আমিষের বিকল্প হিসেবে শিম, মটরশুঁটি, মসুর ডাল ইত্যাদি খেতে পারেন; এগুলো আপনার শরীরে আমিষের চাহিদা পূরণ করবে এবং অধিক জমাটবাঁধা চর্বি জাতীয় খাবারের বিকল্প হিসেবেও কাজ করবে।
শস্য জাতীয় খাবার নির্বাচন করুন
শস্য জাতীয় খাবার আঁশ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের অন্যতম প্রধান উৎস; যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য খাদ্যতালিকায় গমের আটা, রুটি, হোলগ্রেইন-পাস্তা, বার্লি, বাদামী চাউল, ওটমিল বা জইচূর্ণ, মটরশুটি, কলাই ইত্যাদি রাখতে পারেন। কারণ এগুলোতে বেশ আঁশ পাওয়া যায়। আঁশযুক্ত খাবার এক ধরনের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে; যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।
খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমানো, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ও মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলার মাধ্যমে আপনি আপনার হার্টকে নিরাপদ ও সতেজ রাখতে পারেন।