বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

এবার মশা নিধন করবে গুগল!1 min read

আগস্ট ৩, ২০১৯ 2 min read

author:

এবার মশা নিধন করবে গুগল!1 min read

Reading Time: 2 minutes

বর্তমান বিশ্বে মশা এক আতংকের নাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ হলো মশা। ম্যালেরিয়া, ডেংগু, হলুদ জ্বর ও চিকুনগুনিয়ার মত রোগের কারণে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কোন ভাবেই যেন পরিত্রান পাওয়া যাচ্ছে না মশার হাত থেকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় সব মিলিয়ে ২১ হাজার ২৩৫ জন ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছেন। 

এডিস ইজিপ্টি মূলত এক ধরণের আফ্রিকান মশা তবে বর্তমানে ভারত সহ বিশ্বের ১২০ টিরও বেশি দেশের গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে এটির দেখা পাওয়া যায়। এই মশা নিধনে নানা ধরণের প্রযুক্তি তৈরিতে ব্যস্ত বিজ্ঞানীরা। এমন অবস্থায় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে গুগল। সম্প্রতি মশা নিধনের এক অভিনব উপায় আবিষ্কার করেছেন গুগল মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট। মূলত মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করার মাধ্যমে কাজ করে এই উদ্ভাবন।

মশা দিয়ে মশা নিধন 

২০১৭ সালে গুগলের অ্যালফাবেট একটি গবেষণা প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিলো মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। ‘ডিবাগ প্রজেক্ট’ নামের এ প্রকল্পে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গবেষণাগারে কৃত্তিম উপায়ে পুরুষ মশা উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। এই পুরুষ মশাগুলো ওলবাখিয়া নামের এক ধরণের ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রামিত, যা স্ত্রী মশার শরীরে বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি করে। এর ফলে মশার বংশ বৃদ্ধি আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকে। 

কতটা সফল এই ‘ডিবাগ প্রজেক্ট’? 

অ্যালফাবেট বিজ্ঞানীরা প্রায় ছয় মাস ধরে জন্ম দিয়েছে ১৫ মিলিয়নেরও বেশি সংক্রামিত পুরুষ মশা। এই বিপুল সংখ্যক মশা ক্রমান্বয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেস্নোতে। ডিবাগ এর আশানুরূপ ফলাফলও পেয়েছে। স্ত্রী মশার সংখ্যা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে এবং ডিবাগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে যে তারা গড় মশার সংখ্যার প্রায় ৯৫% কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তারা তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, এই পদ্ধতি মশার প্রজনন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনবে। তারা আরো জানায়, “আমরা বেশ কিছু কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করার জন্য আগ্রহী, যাতে ডিবাগ এই পদ্ধতিতে মশার সংখ্যা ও রোগীদের ওপর প্রকৃত প্রভাব ফেলতে পারে। আশা করি, হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘতর ও সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করতে পারব আমরা।”

এছাড়া তারা দ্রুত এই উদ্ভাবন বিশ্বের বিভিন্ন মশা-আক্রান্ত দেশের উপর প্রয়োগ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে একই ধরণের একটি গবেষণা চালানো হয় এবং মাত্র ৩ মাসে প্রায় ৮০% মশা হ্রাস পেয়েছিলো সে এরিয়াতে। 

বাংলাদেশে কতটা সম্ভাবনা আছে মশা নিয়ন্ত্রণে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে? 

অ্যালফাবেটের পক্ষ থেকে এই মশা উৎপাদন অথবা প্রযুক্তি ভাগাভাগির কোন স্থায়ী ঘোষণা এখনও জানানো হয়নি। তবে ইতিমদ্ধে থাইল্যান্ড ভারতসহ বেশ কিছু মশা-আক্রান্ত এশিয়ান দেশ এরকম মশা উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে বাংলাদেশে এখনও এরকম কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ডিবাগের সফলতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে একাধিকবার। সরকার বিষয়টি বিবেচনা করলেও এখনও তাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। হয়ত আগামীতে এরকম কোন সিদ্ধান্ত আমাদের দেশেও প্রয়োগ হতে পারে।  

লেখক- সালেহীন সাকিব 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *