ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা দিতে বিপুল পরিমাণ অ্যাপ সাসপেন্ড করেছে ফেসবুক1 min read
Reading Time: 2 minutesসম্প্রতি ফেসবুক প্রায় হাজারের মত থার্ড পার্টি অ্যাপ সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করেছে। এই অ্যাপগুলো মূলত বিনা অনুমতিতে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে অভিযুক্ত। ক্যামব্রীজ অ্যানালিটিক্যা কেলেঙ্কারির পর এক গবেষণায় এসব অ্যাপের সন্ধান পাওয়া যায়।
ফেসবুক তাদের এক বিবৃতিতে জানায়, তৃতীয় পক্ষের এসব অ্যাপের উপর তদন্ত চলছে এবং এই তদন্ত চলাকালীন সময়ে অ্যাপগুলো তাদের কার্যক্রম যাতে না চালাতে পারে তাই সেগুলো সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ফেসবুকের প্রোডাক্ট পার্টনারশিপ ডিপার্ট্মেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমি আর্কিবং জানিয়েছেন, অধিকাংশ অ্যাপ সাসপেন্ড করা হয়েছে যখন এসব অ্যাপের ডেভলপারদের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাওয়া যায়নি। বাকিগুলো এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে এবং পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সেগুলো ব্যবহারকারীদের জন্য অবমুক্ত করা হবে না।
এর আগে ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে ফেসবুককে কাজে লাগিয়ে অনৈতিকভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করেছিল যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। এই কাজে একটি অ্যাপ তৈরি করে তা ইন্টিগ্রেট করে দেয়া হয়েছিলো ফেসবুকের সাথে, যেটির মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য জমা হয়েছিল অ্যাপ ডেভেলপারদের ডেটাবেসে। মূলত এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর ফেসবুক তদন্ত শুরু করে। তখন ধারণা করা হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। কিন্তু তদন্ত শেষে বেরিয়ে আসে যে প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য লুট করা হয়েছে। এই তথ্যগুলোই ট্রাম্প প্রশাসনকে তাদের সুচিন্তিত প্রচারণায় ব্যাপক সফলতা এনে দেয়।
তথ্য চুরির বিষয়টি সাধারণ ব্যবহারকারীর মাঝে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়া সতর্ক ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, তারা ফেসবুকের সাথে সংপৃক্ত সকল সন্দেহপুর্ন অ্যাপ সনাক্ত করার প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যেসব অ্যাপ ডেভলপার তাদের সাথে অসহযোগিতাপূর্ন আচরণ করছে তাদের অ্যাপ বন্ধ করে দিচ্ছে ফেসবুক। এছাড়া ফেসবুকের নীতিমালা না মেনে যেসব অ্যাপ এখনো ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার তালিকায় আছে শতাধিক অ্যাপ যা কেবল শতভাগ স্বচ্ছতা থাকলেই পুনরায় খুলে দেয়া হবে ফেসবুকে। এখানেই শেষ না, এমনকি তৃতীয় পক্ষের ডেভেলপাররা ফেসবুকের কাছ থেকে কী পরিমাণ তথ্য চাইতে পারবেন সীমিত করে দেয়া হয়েছে সে সীমানাটিও।
ফেসবুক বলছে এখন তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের জন্য শতভাগ নিরাপদ এবং তারা ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত এর বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট যত্নশীল রয়েছে। ফেসবুকের কর্ণধার মার্ক জুকারবার্গও নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে এরকম ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।