বিশ্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো পক্ষে অধিকাংশ আমেরিকান1 min read

এপ্রিল ৩০, ২০১৮ 2 min read

শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো পক্ষে অধিকাংশ আমেরিকান1 min read

Reading Time: 2 minutes

অর্ধেকের বেশি আমেরিকান নাগরিক, শিক্ষকদের বেতন ভাতা বাড়ানোর পক্ষে।এই পরিসংখ্যান দিচ্ছে বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস এবং এরওআরসি’ র একটি যৌথ জনমতজরিপ। এ্যারিজোনানে সম্প্রতি শিক্ষকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির পক্ষে মিছিল করছেন শিক্ষক রা। সেটাতে সাধারণ মানুষের এসে যোগ দিয়েছে তাতে। কেননা, তারা বিশ্বাস করেন, শিক্ষকরাই তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত তৈরী করে দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষকবৃন্দ যদি বেতন-এবং ভাতা কম পান, তাহলে তারা শিক্ষকতায় বিমুখ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির দাবীটি জোরালো হচ্ছে পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে।

গত সপ্তাহে এ্যারিজোনাতে শিক্ষকদের ২০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির বিরোধিতা করে হাজার হাজার শিক্ষক একটি স্ট্রাইক বা বন্ধ এর ডাক দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ২০ শতাংশ বেতন বাড়লেও, ঐ বর্ধিত বেতনের ট্যাক্স ভ্যাট মুক্ত না হওয়ায় সার্বিক বেতন চিত্রে কোন হের ফের হয়নি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

জাতীয় শিক্ষা গবেষনা দপ্তরের হিসার অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে শিক্ষকদের গড় বেতন ছিল বার্ষিক ৫৮, ৯৫০ ডলার। যেটা আগের অর্থবছরের তুলনায় বেশ খানিকটা কম-ই বলা চলে। কিন্তু অনেক রাজ্যে এখনও শিক্ষকদের গড় বেতন বছরে ৫০ হাজার ডলারের নিচে। এ কারনেই এপি-এনওআরসি’র জরিপে দেখা গেছে ৭৮ শতাংশ মানুষ মনে করছে, আমেরিকা শিক্ষকদের যথেষ্ট বেতন দিচ্ছে না। কেবল ১৫ শতাংশ মানুষ মনে করে শিক্ষকরা মোটামুটি ভালই পাচ্ছেন।

নিউইয়র্কে লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শওকত আলী মনে করেন,  যদি নিউইয়র্কের মত শহরে কেউ বার্ষিক ৫০-৬০ হাজার ডলার আয় করেন, তিনি একপ্রকার হোমলেসদের মতই। কেননা, মাসিক ঘর ভাড়া, অননন্য খরচাদি পরিশোধ করে কারো-ই কোন সন্চয় থাকার কথা নয়। এই বেতন, অনন্য রাজ্যে যেখানে ঘরভাড়া এবং জীবন ধারনের ব্যায় খুব বেশি নয়, তাদের জন্য এক প্রকার চলার মত।

নিউইয়র্কে শিক্ষকদের বেতন সন্তোষজন কিনা, সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, অন্য রাজ্যের তুলনায় এখানে ভাল। কারণ, এই রাজ্যে এবং নিউইয়র্ক শহরে, শিক্ষকদের ইউনিয়ন বেশ শক্তিশালী, এবং তারা নিজেদের পক্ষে দাবী আদায়ে অনেকটাই সক্রিয়।

নিউইয়র্কের একটি পাবলিক স্কুলের শিক্ষক সাদিয়া খন্দকার মনে করেন, ‘শিক্ষকদের বেতন ধার্য হয় নিয়োগের সময়, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং সার্টিফিকেট এর নিরিখেই। এর পর, সেখান থেকে এক লাফে বড় বেতনে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই, এমকি স্কুল বদলালেও নেই। তবে প্রতি বছর-ই একটি ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ে, যেটা একেবারেই নগন্য। শিক্ষকতা যেহেতু একটি সম্মানিত পেশা, তাই এই পেশার মানুষদেরকে তার প্রাপ্যটা দেয়া উচিৎ’।

সাদিয়া খন্দকারের অভিযোগ, শিক্ষকতা সম্মানের পেশা হলেও, এই পেশায় বন্চনাও কম নয়। একজন নারী তার মাতৃত্বের জন্য সর্বচ্চ ৮ সপ্তাহের ছুটি পান, সেটাও আবার বিনা বেতনে। অথচ, ঐ সময়টাতে হয়তো তার অর্থের প্রয়োজন সবচে বেশি। সব দিক মিলিয়ে শিক্ষকদের দেশব্যাপী বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনকে যৌক্তিক-ই মনে করেন তিনি।

শিক্ষকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য ধর্মঘটের এই ডাক প্রথমে শুরু হয়ে পশ্চিম ভার্জিনিয়া থেকে। পরে সেটা দ্রুতই ওকলাহোমা, কেন্টাকি কলোরাডো এবং এ্যারিজোনাতে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকদের এই আন্দোলন নিয়ে বেশ কথা -বার্তা হচ্ছে অভিভাবক মহলে। এপির জরিপে দেখা গেছে, ৫২ শতাংশ মানুষ মনে করে, শিক্ষকদের বেতন বাড়াতে যদি আরো বেশি ট্রাক্স দিতে হয় ফেডারেল সরকারকে, তবুও তারা সেটা দিতে প্রস্তত।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *