NEWS TUBE

ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন, নিন্দা ছাত্রদলের1 min read

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫ 2 min read

ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন, নিন্দা ছাত্রদলের1 min read

Reading Time: 2 minutes

ছাত্রশিবির সভাপতির অভিযোগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পথ অনুসরণ করছে ছাত্রদল

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

তবে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

রবিবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সই করা এক বিজ্ঞপিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।

ছাত্রদলের দাবি, মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করে। মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় ষড়যন্ত্র বলে শিবির বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদদের অবমাননা করছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দে (মধুদা) ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অপারেশন সার্চলাইট এর হানাদার বাহিনীর হাতে শহিদ হন। জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রসংঘ পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগী হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী ভূমিকা পালন করে। শহিদ মধুদা’র হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় জামায়াতে ইসলামী, তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামি ছাত্রসংঘ এবং পরবর্তীতে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিতে হবে।”

এতে আরও বলা হয়, “স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন শহিদ মধুদার প্রতি এবং তার পরিবারের প্রতি অসম্মানজনক। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবির এর সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”

বিবৃতিতে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, “শহিদের নিজের আঙিনায় খুনির সহযোগীদের বিচরণ খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। অনুতাপ এবং বিবেকবোধ থেকেই ছাত্রশিবির এর মধুর ক্যান্টিনে আসা উচিত নয়।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “অপারেশন সার্চলাইট এ শহিদ মধুদা’র মতো অসংখ্য মানুষ শহিদ হওয়ার প্রেক্ষিতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু ইসলামী ছাত্রশিবির নানাভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় ষড়যন্ত্র বলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে এবং বীর শহিদদের অবমাননা করছে। মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করবে।”

 

এর আগে, বিকেলে ওই সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ছাত্রদল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পথ অনুসরণ করছে।

তিনি বলেন, “নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলকে তাদের পথ অনুসরণ করতে দেখা যাচ্ছে।”

শিবির সভাপতি বলেন, “আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে জনাকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল তা কিছু ছাত্রসংগঠনের আধিপত্যনীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, দখলদারি, ট্যাগিং ও দোষ চাপিয়ে দেওয়ার হীন সংস্কৃতি চালু রাখার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনীতি বিমুখতা তৈরি এবং শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহযোগিতা ও সহাবস্থান নিশ্চিত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সবার দায়িত্ব। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনকে অন্যায়ভাবে দমনের চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, নিজেরা সন্ত্রাসী কায়দায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তার দায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে, যার প্রবক্তা ছিল নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ।”।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, “কুয়েটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততার মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে। খুলনার শিববাড়িতে তাদের মিছিল থেকে ‘একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ এই স্লোগান দেওয়া হয়। এমন ভয়ংকর, হিংস্র স্লোগান আমরা ছাত্রলীগের মুখে শুনতাম। কিন্তু ছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “সারাদেশে শত শত জায়গায় চাঁদাবাজি, দখলদারি দেখে বোঝার উপায় নেই, দেশে কোনো পরিবর্তন হয়েছে। অপরাধীদের হাত বদল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অপরাধ আগের মতোই চলছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি যশোরে চাঁচড়ায় চাঁদা না দেওয়ায় সম্রাট নামের এক মাছা ব্যবসায়ীর চোখ উপড়ে ফেলে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। গতকাল গাজীপুরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদা আদায় করার ঘটনা আপনারা দেখেছেন। প্রতিদিন এমন অসংখ্য ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *