২০১৯- ক্রিকেটে সাকিবময় একটি বছর1 min read
Reading Time: 7 minutesপ্রাদপ্রদীপের আলো সব সময় নিজের ওপর কেড়ে নেয়া যার অভ্যাস সেই সাকিব আল হাসান অনেই দিন ধরেই রয়েছেন খেলার বাইরে। তবে গেল বছর ২০১৯ এর দিকে ফিরে তাকালে আমরা দেখবো আলোচনা হোক কিংবা সমালোচনা, সব কিছুতেই সাকিব উপস্থিত। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স, সেই সাথে বছরের শেষ ভাগে ফিক্সিং বিতর্ক। সব মিলিয়ে সাকিব নিজে, ক্রিকেটমোদী দর্শক, ইতিহাস সবাই ২০১৯ কে সাকিবময় একটি বছর হিসেবে মনে রাখবেন অনেক দিন।
২০১৮ সাল থেকে ইনজুরির জন্য মাঠে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন সাকিব। ২০১৯ এ বাংলাদেশ দল খেলেছে মোট ১৮ টি একদিনের ম্যাচ, ৫টি টেস্ট ম্যাচ এবং ৭টি টি-২০ ম্যাচ। এর মধ্যে সাকিব খেলেছেন ১১টি একদিনের ম্যাচ, ১টি টেস্ট, ৪টি টি-২০।
টেস্ট, টি-২০টি তে বলার মতো কিছু না করতে পারলেও ব্যাট হাতে একদিনের ম্যাচে সাকিব ছিলেন যেন অতিমানব। ২০১৯ এ খেলা ১১ টি একদিনের ম্যাচে সাকিব করেছেন ৭৪৬ রান, গড় ৭৪.৬। সাকিবের রানের খাতা ছিল এমন- ৬৪, ৬৬, ৫১, ৪১, ১২৪*, ১২১, ৬৪, ৭৫, ৫০, ২৯, ৬১। ১১ ইনিংসের ৯ টিতেই পঞ্চাশের বেশি রান, শতক ২ টি। বল হাতে সে তুলনায় বেশ নিষ্প্রভই বলা যায়। সব ম্যাচ মিলিয়ে শিকার করেছেন ১৪টি উইকেট।
২০১৯ বিশ্বকাপ এবং সাকিব
ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় মঞ্চ বিশ্বকাপে নিজের জাত আবার চেনানোর পরিকল্পনা সাকিব আল হাসান যে অনেক আগে থেকে করছিলেন সেটি প্রথম সবার নজরে আসে ২০১৯ আইপিএল চলাকালীন সময়ে। মাঠে তেমন খেলার সুযোগ না আসলে আইপিএলের মাঝেই বিকেএসপির গুরু সালাহউদ্দিনকে ভারতে উড়িয়ে নিয়ে যান, সাথে কমিয়ে ফেলেন শরীরের বাড়তি ওজন। বিশ্বকাপকে ঘিরে সাকিবের এই বাড়তি “সিরিয়াসনেস” সবার নজর কাড়লেও কেউ কি তখন পর্যন্ত ভাবতে পেরেছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপের ইতিহাস বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডার নিজ হাতে লিখবেন?
ইনজুরির কারণে বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরে অংশ নিতে না পারা সাকিব দলের সাথে বিশ্বকাপ মিশনে যোগ দেন আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ-আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় সিরিজের মাধ্যমে। ইংল্যান্ডের মাঠে বিশ্বকাপ খেলার প্রস্তুতি হিসেবেই মূলত এই সিরিজ খেলে টাইগাররা। চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ফাইনাল ম্যাচটিতে খেলতে না পারা সাকিব এই সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে করেন যথাক্রমে ৬১(৬১), ২৯(৩৫), ৫০(৫১) রান। বল হাতে ২৯ ওভার বল করে ১২৫ রান দিয়ে নেন ৩ টি উইকেট।
বিশ্বকাপ শুরু হলে সাকিব যেন আরও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকেন, ৩ নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করতে এসে প্রতিপক্ষের জন্য হয়ে উঠেন বাড়তি চিন্তার কারণ। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সেমিতে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর বাংলাদেশ দল পথ হারালেও পথ হারাননি সাকিব। ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৩ টি ম্যাচে- দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এই তিনটি ম্যাচেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে সাকিবের হাতে।
সাকিব বিশ্বকাপের আট ম্যাচে ৮৬.৫৭ গড় ও ৯৩.০৩ স্ট্রাইক নিয়ে করেন মোট ৬০৬ রান। আট ইনিংসের সাতটিতেই পঞ্চাশের বেশি রান, শতক দুইটি, অর্ধশতক একটি। সাকিবের মোট রানের ৪১.৫৮ ভাগই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। বল হাতে আট ম্যাচে ৭৪ ওভার বোলিং করে ৩৬.২৭ গড় ও ওভার প্রতি ৫.৩৯ রান দিয়ে উইকেট নেন ১১টি।
২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিবের ব্যাটিং ও বোলিং ফিগার-
প্রতিপক্ষ | ব্যাটিং | বোলিং |
---|---|---|
দক্ষিণ আফ্রিকা | ৭৫(৮৪) [৪*৮, ৬*০] | ১০-০-৫০-১ |
নিউজিল্যান্ড | ৬৪(৬৮) [৪*৭, ৬*০] | ১০-০-৪৭-২ |
ইংল্যান্ড | ১২১(১১৯) [৪*১২, ৬*১] | ১০-০-৭১-০ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১২৪*(৯৯) [৪*১৬, ৬*০] | ১০-০-৫০-১ |
অস্ট্রেলিয়া | ৪১(৪১) [৪*৮, ৬*০] | ৯-০-৬৯-১ |
আফগানিস্তান | ৫১(৬৯) [৪*১, ৬*০] | ১০-১-২৯-৫ |
ভারত | ৬৬(৭৪) [৪*৬, ৬*০] | ১০-০-৪১-১ |
পাকিস্তান | ৬৪(৭৭) [৪*৬, ৬*০] | ১০-০-৫৭-০ |
*বৃষ্টির কারণে শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছিল
সাকিবের এমন পারফরম্যান্সে ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় শুরু হয় তোলপাড়। নতুন করে ইতিহাস টুকে নেয় সাকিবের বীরত্ব গাঁথা।
২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিবের যত রেকর্ড
- প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা চার বিশ্বকাপে নিজ দলের উদ্বোধনী ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি।
- ভারতের যুবরাজ সিংয়ের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপের একই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট
- ভারতের কপিল দেব ও যুবরাজ সিংয়ের পর তৃতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বকাপের একই আসরে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পাশাপাশি বল হাতে এক ইনিংসে ৫ উইকেট।
- চার বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচে ১১৪৬ রান নিয়ে বিশ্বকাপের সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সাকিব এখন নবম স্থানে। ৪৫ ম্যাচে ২,২৭৮ রান নিয়ে এই অভিজাত তালিকার নেতৃত্বে আছেন ভারতের ব্যাটিং জিনিয়াস শচীন টেন্ডুলকার।
- বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ সাতটি হাফ সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান সাকিব। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকার ১১ ইনিংস খেলে সাত ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। সাকিব টেন্ডুলকারের চেয়ে তিন ইনিংস কম খেলেই এই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন।
- এক বিশ্বকাপে ৬০০ এর বেশি রান করা তৃতীয় ব্যাটসম্যান সাকিব। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকার ১১ ম্যাচে ৬৭৩ রান, ২০০৭ বিশ্বকাপে ম্যাথু হেইডেন ১১ ম্যাচে ৬৫৯ রান করেছিলেন। যদিও সাকিবের পরে ২০১৯ বিশ্বকাপে ৬০০ রান করার গৌরব অর্জন করেন ভারতের রোহিত শর্মা (৬৪৮) এবং অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার(৬৪৭)।
- একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এক বিশ্বকাপে ৬০০ এর বেশি রান ও ১০ টির বেশি উইকেট।
- একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে ১০০০ এর বেশি রান ও কমপক্ষে ৩০ টি উইকেট।
বিশ্বকাপের এসব রেকর্ডের পাশাপাশি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে ১০০০ রান, অলরাউন্ডারদের মধ্যে দ্রুততম সময়ে ৬ হাজার রান ও ২০০ উইকেট, বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ তম একদিনের ম্যাচ খেলার রেকর্ড সাকিবের পালকে যুক্ত হয় গত বছর।
বিশ্বকাপের এমন অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের পরেও সাকিব কেন টুর্নামেন্ট সেরা হলেন না, এমন প্রশ্ন নিশ্চয়ই আপনার মনেও এসেছিল?
বিশ্বকাপের প্রথম চার আসরে টুর্নামেন্ট সেরা পুরস্কার চালু ছিল না। ১৯৯২ বিশ্বকাপ থেকে এই পুরস্কার চালু হওয়ার পর থেকে যারা টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন তাদের তুলনায় ব্যাট-বলের পারফরম্যান্স বিবেচনায় সাকিব কোন অংশে পিছিয়ে ছিলেন না। পিছিয়ে ছিলেন কেবল মাত্র দলগত পারফরম্যান্সে। সাধারণত অন্তত সেমিফাইনাল পর্যন্ত দলকে টেনে নিয়ে গেছে এমন খেলোয়াড়ের হাতেই এই পুরস্কার তুলে দেয় আইসিসি। সেখানে ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিবের বাংলাদেশের স্থান ছিল দশ দলের মধ্যে অষ্টম।
পাঠক আপনাদের সামনের এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সব টুর্নামেন্ট সেরাদের পারফরম্যান্স তুলে ধরছি। আপনারা নিজেরাই তাদের সাথে সাকিবের পারফরম্যান্স তুলনা করে দেখুন।
আরও পড়ুন- সাকিব আল হাসান নিয়ে যত বিতর্ক
১৯৯২ থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপের সকল টুর্নামেন্ট সেরা
১৯৯২- মার্টিন ক্রো (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যান ৯ ইনিংসে একটি শতক, চারটি অর্ধশতকে করেছিলেন ৪৫৬ রান। তবে তার গড় ছিল চোখ ধাঁধানো, ১১৪।
১৯৯৬- সনাৎ জয়সুরিয়া (শ্রীলঙ্কা)
“মাতারা হ্যারিকেন” হিসেবে জয়সুরিয়ার উত্থান ১৯৯৬ বিশ্বকাপ থেকেই। শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে ৬ ইনিংসে দুইটি অর্ধশতক নিয়ে ৩৬.৮৩ গড়ে করেছিলেন ২২১ রান। বল হাতেও নিয়েছিলেন ৭ টি উইকেট। এই বিশ্বকাপেই জয়সুরিয়ার ধুন্ধুমার ব্যাটিং এর সাক্ষী হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩১.৫৪।
১৯৯৯- ল্যান্স ক্লুজনার (দক্ষিণ আফ্রিকা)
বল-ব্যাটে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ মাতিয়ে রেখেছিলেন ল্যান্স ক্লুজনার। ব্যাট হাতে ৮ ইনিংসে করেছিলেন ২৮১ রান, অর্ধশতক ছিল দুইটি। এই বিশ্বকাপে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করতে নেমে ঝড় তোলা অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন ক্লুজনার। তার ৮ ইনিংসের ৬টিতেই ছিলেন অপরাজিত। গড়টাও ছিল অবিশ্বাস্য, ১৪০.৫০। বল হাতে উইকেট শিকার করেছিলেন ১৭ টি।
২০০৩- শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)
বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যানদের প্রায় সব রেকর্ডের নেতৃত্ব দেয়া শচীন এই বিশ্বকাপে ১টি শতক, ৬টি অর্ধশতক নিয়ে ৬১.১৮ গড়ে করেছিলেন ৬৭৩ রান। এখন পর্যন্ত এটিই বিশ্বকাপের এক আসরে কোন ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। পার্ট টাইমার হিসেবে বল হাতে নিয়ে শিকার করেছিলেন ২টি উইকেটও।
২০০৭- গ্লেন ম্যাকগ্রা (অস্ট্রেলিয়া)
বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার হাতে উঠে গ্লেন ম্যাকগ্রার। অস্ট্রেলিয়ার এই কিংবদন্তী পেসার ১১ ইনিংসে ১৩.৭৩ গড় এবং ওভার প্রতি ৪.৪১ রান খরচ করে শিকার করেন ২৬ টি উইকেট।
২০১১- যুবরাজ সিং (ভারত)
ভারতকে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের স্বাদ এনে দেয়ার মূল নায়ক ছিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ৯ ম্যাচে ৮ ইনিংসে করেছিলেন ৩৬২ রান। গড় ৯০.৫০, শতক ১টি, অর্ধশতক ২টি। সেই সাথে বল হাতে নিয়েছিলেন ১৫ টি উইকেট।
২০১৫- মিচেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া)
বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতে নেন অস্ট্রেলিয়ার ২০১৫ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক মিচেল স্টার্ক। ৮ ম্যাচে তিনি নিয়েছিলেন ২২ টি উইকেট। গড় ১০.১৮, স্ট্রাইক রেট ১৭.৪, ইকোনমি ৩.৫০ !!!
২০১৯ – কেন উইলিইয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিবের (৬০৬ রান, ১১ উইকেট) পাশাপাশি টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে ছিলেন ভারতের রোহিত শর্মা (৬৪৮ রান), অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার (৬৪৭ রান), নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন। তবে টুর্নামেন্ট জুড়ে ব্যাট হাতে এবং মাঠে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে নিয়ে যাওয়ায় উইলিয়ামসনের হাতেই শেষ পর্যন্ত উঠে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার। ১০ ম্যাচে ৮২.৫৭ গড় এবং ৭৪.৯৬ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৫৭৮ রান। বল হাতে নিয়েছিলেন ২টি উইকেট।
বিতর্ক, সমালোচনা এবং নিষেধাজ্ঞা
সাকিবের পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই সফলতা এবং বিতর্ক সমান্তরাল পথ ধরে হেঁটেছে। ২০১৯ তার ব্যতিক্রম ছিল না। বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করার আগে দলীয় ফটোসেশনে অংশগ্রহণ না করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেগুলোয় ব্যাপক আক্রমণের শিকার হন সাকিব। সাকিবের দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে !!!
বিশ্বকাপে নিজের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স দিয়ে সব সমালোচনা বন্ধ করাতে পারলেও অক্টোবরে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে নেতৃত্ব দিয়ে আবার আলোচনায় আসেন সাকিব। সেসময় বিসিবির অনুমতি না নিয়ে বেসরকারী মুঠোফোন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোনের সাথে সাকিবের চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন বিসিবি বস নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সাকিবের ওপর নিজের রাগ প্রকাশ করতে থাকেন কোন রাখঢাক না রেখেই।
ক্রিকেটারদের ঘর্মঘটের রেশ কাটতে না কাটতেই ম্যাচ ফিক্সিং বিতর্কে সাকিবের নাম জড়িয়ে পরে। ম্যাচ ফিক্সিং এর সাথে সরাসরি জড়িত না থাকলেও ভারতীয় এক জুয়াড়ির থেকে পাওয়া ফিক্সিং প্রস্তাব তিনি গোপন করেছিলেন বিসিবি এবং আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট আকসুর কাছে, যা কিনা আইসিসির আইনে গুরুতর অপরাধ। ২৯ অক্টোবর আইসিসি ২ বছরের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট থেকে সাকিবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে অপরাধ স্বীকার করে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করায় ও নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে আইসিসির কিছু নিয়ম মেনে চলার শর্তে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। অর্থাৎ সব ঠিক থাকলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে আবারও ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন সাকিব।