বিশ্ব

বিবাহ বিচ্ছেদের মূল্য ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার !!!1 min read

জুলাই ১০, ২০১৯ 2 min read

author:

বিবাহ বিচ্ছেদের মূল্য ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার !!!1 min read

Reading Time: 2 minutes

১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন শপিং সেন্টার অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সংসারে বেজে উঠেছে বিচ্ছেদের সুর। জেফ বেজোস ও তার স্ত্রী ম্যাকেনজি বেজোস দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সংসার করে আসছিলেন। দীর্ঘ সংসার জীবনে তারা চারটি সন্তানের জনক- জননী হন। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি তারা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে তাদের বিচ্ছেদের কথা প্রথম সবাইকে জানান দেন। 

তাদের এই বিবাহ বিচ্ছেদ পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে ব্যয় বহুল ডিভোর্স হিসেবে গণ্য হতে যাচ্ছে। জানুয়ারি মাসে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেয়ার পর এপ্রিল মাসে তাদের বিচ্ছেদ অনুমদিত হয়। সেই সময় বিচ্ছেদের কারণে জেফ বেজোসের তার স্ত্রী মাকেনজি বেজোসকে কি পরিমাণ অর্থ দিতে হবে তার নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বলা হয় বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পন্ন হলে বেজোসকে আমাজনের ৪ শতাংশ মালিকানা বা কোম্পানির ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে দিতে হবে।

সর্বশেষ ৫ জুলাই শিয়াটলের এক আদালত ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার নির্ধারণ করেছেন। বর্তমানে ৫৪ বছর বয়সী জেফ বেজোসের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ম্যাকেনজিকে এই পরিমাণ অর্থ দেয়ার পর তার সম্পদের পরমাণ থাকবে প্রায় ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অবশ্য গত মে মাসে ম্যাকেনজি তার প্রাপ্ত সম্পদের অর্ধেকই দান করে দেবেন বলে ঘোষণা দেন। পৃথিবীর শীর্ষ ২ ধনী ওয়ারেন বাফেট ও বিল গেটসের দাতব্য সংস্থায় তিনি এই অর্থ দান করবেন।  

দীর্ঘ ২৫ বছরের সাধনায় কিছুদিন আগেই মাইক্রোসফট এবং অ্যাপেলকে অতিক্রম করে পৃথিবীর সবচাইতে ধনী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় চলে এসেছিল অ্যামাজন।  যেহেতু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর এই ধন সম্পত্তির মালিক হন জেফ বেজোস, তাই আমেরিকার আইন অনুসারে এই বিপুল সম্পত্তির অর্ধেক মালিক হলেন তার স্ত্রী ম্যাকেনজি। এই বিচ্ছেদের পরবর্তীতে পৃথিবীর অন্যতম ধনী মহিলার নামের কাতারে চলে আসবে ম্যাকেনজি বেজোসের নাম। আর একই সাথে অন্যতম ধনী ব্যক্তির তালিকা হতে নেমে আসবে জেফ বেজোসের নাম। যার ফলে আবারও তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করবেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। 

উল্লেখ্য যে, ১৯৯৫ সালে নিজের বাড়ির গ্যারেজে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন জেফ বেজোস এবং প্রথম এক মাসেই তিনি এই অনলাইন শপে শুধুমাত্র বই বিক্রি করেছিলেন ২০ হাজার ডলার সমপরিমাণ অর্থের। তৎকালীন সময়ে অনলাইনে এই বিপুল পরিমাণে বই বিক্রি ছিল অনেকটাই চিন্তার বাইরে এবং অবাক করার মত একটি বিষয়। এভাবেই শুরু হয়েছিল অ্যামাজনের জয়যাত্রা, এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি অ্যামাজনকে। প্রথমদিকে বই দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে গান এবং মুভির সিডি বিক্রি শুরু করে আমাজন। তার বেশ কিছুদিন পরে ডিজিটাল বই পড়ার জন্য অ্যামাজন নিয়ে আসলে কিন্ডেলনামক একটি পণ্য এবং এই পণ্যটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে অ্যামাজন একটি রিটেইল অনলাইন মার্কেট প্লেস অর্থাৎ অন্য যে কোন কোম্পানি নিবন্ধনের মধ্যে তাদের পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। পুরো পৃথিবীব্যাপী অ্যামাজনের ওয়েব সাইটে এখন বিক্রয় হচ্ছে প্রায় ৪০ কোটিরও বেশি পণ্য। 

অ্যামাজনের এই সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়াতে ম্যাকেনজি বেজোসের অবদানও কিছু কম নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জেফ বেজোস বলেন, “ডিভোর্সের প্রক্রিয়াটি সহজ করার জন্য ম্যাকেনজির সহযোগিতায় আমি অনেক কৃতজ্ঞ। আমরা চারটি সন্তানের বাবা মা, ভবিষ্যতেও আমাদের এই সম্পর্ক খুব ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ থাকবে বলে আমি আশা করছি”। 

অপরদিকে ঔপন্যাসিক ম্যাকেনজি টুইটারে বলেছিলেন, “অতীতের একটি চমৎকার সময়ের জন্য আমি কৃতজ্ঞ তবে বর্তমানে আমি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই বেশি আগ্রহী” ।

লেখক- ইকবাল মাহমুদ

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *