কানাডা থেকে, শওকত মিল্টন
উত্তর আমেরিকা অফিস: বাকী জীবন জনহিতকর কাজ করে কাটাতে চান বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা। তিনি বলেন, সিলেটে তাঁদের গ্রামের বাড়ীতে অনেক আগে থেকেই পারিবারিকভাবে বিভিন্ন দাতব্য (চ্যারিটি) কাজ করে থাকেন। মাসে সেখানে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করা হয়। তিনি এসব কাজকে আরো ছড়িয়ে দিতে চান। কানাডা ছাড়ার আগে শনিবার রাতে টরেন্টোতে এক ব্যক্তিগত আলাপচারিতাকালে তিনি একথা বলেন।অবস্য কানাডা ছাড়লেও তার পরবর্তী গন্তব্য কোথায় এখনও পরিষ্কার জানা যায়নি। এই মহুত্বে তিনি বাংলাদেশে ফেরত যাচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে বেশ কিছুদিন কানাডায় অবস্থান করছিলেন। তিনি টরেন্টোতে বসবাস করলেও এখানকার বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে খুব একটা ওঠাবসা করতে দেখা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাঁকে একদিন স্থানীয় ফেয়ারভিউ মলে এবং বাংলাদেশী গ্রোসারী শপে দেখা গেছে। বেশীরভাগ সময় তিনি এখানে বই পড়ে আর টিভি দেখে সময় কাটিয়েছেন। তাঁর সাথে কথা বলার সময় তিনি কোন ধরনের আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতকার দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। আলাপচারিতার ততোটুকু প্রকাশ করা হয়েছে, যতটুকু তিনি অনুমতি দিয়েছেন।
কথা প্রসঙ্গে সাবেক এই প্রধান বিচারপতি জানান, তিনি এখন স্মৃতিকথা লেখার প্রস্ততি নিচ্ছেন। স্মৃতিকথা অনূলিখনের জন্য এক প্রবাসী বাঙ্গালীর সহায়তা নেবেন বলেও জানান। সেই স্মৃতিকথায় সব প্রসঙ্গ থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি হেসে ফেলেন। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বেশ স্বাভাবিক ছিলেন। আড্ডাচ্ছলে তিনি খোলামেলাভাবে গল্প করে যাচ্ছিলেন। কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই বাংলাদেশের একজন মিডিয়া মালিক সম্পর্কে জানতে চান। মি. সিনহা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর আগ্রহের কথা জানান। জানতে চাওয়ার পরিপ্রিক্ষিতে বলেছেন এক এগারো থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে আদালতের কর্মকান্ড নিয়ে। তবে সিঙ্গাপুরের বিষয়ে কোন কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
সুপ্রীম কোর্টে বিভিন্ন বিষয়ে শৃংখলা প্রতিষ্ঠার জন্য যেসব নিয়ম কানুন চালু করেছেন সে বিষয়ের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমি নিয়ম করে দিয়েছিলাম কোন বিচারক অবসর গ্রহনের পর রায় লিখতে পারবেন না। কেননা অবসর গ্রহনের পর তিনি সিভিলিয়ান হয়ে যান। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সরব এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির কথা উল্লেখ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
পরিবেশ পরিস্থিতি অনূকুলে থাকলে দেশে ফিরবেন বলে সাবেক এই প্রধান বিচারপতি আশা প্রকাশ করেন। তবে ঠিক কবে নাগাদ তিনি ফিরবেন সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে নিজে কিছুই বলেননি।
মি. সিনহা টরেন্টোর প্রবাস জীবনে মোটামুটি নিঃসঙ্গ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এখনও ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধান বিচারপতি রোববার এয়ার কানাডার একটি বিমানে কানাডা ত্যাগ করেন।