বিনোদন

সফল মা, সফল তারকা1 min read

মে ১২, ২০২০ 6 min read

author:

সফল মা, সফল তারকা1 min read

Reading Time: 6 minutes

‘হেরিলে মায়ের মুখ,

দূরে যায় সব দুখ,

মায়ের কোলেতে শুয়ে জুড়ায় পরান।‘

_ মা -কাজী নজরুল ইসলাম

মা। এক অক্ষরের মাঝেই যেন নিগূঢ় বৈভব আর স্বস্তির অসীম আধার প্রতিভাত হয়। শুধু উচ্চারণেই মেলে অপার শান্তি। শূন্য থেকে অনন্তের সৃষ্টি হয় মায়ের জঠরেই। দশ মাসের অকূল ত্যাগের পরেই সন্তান পৃথিবীর আলোর মুখোমুখি হয়।

তবে মায়ের তিতিক্ষার কাহিনী এখানেই শেষ হয় না। প্রথম ভ্রূণ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত পরম মমতায় মা আগলে রাখেন সন্তানকে- সকল বিপদে, সকল প্রাপ্তিতে।

মা দিবসের এই হাকডাক বছর দশেক আগেও তেমন ছিল না। মিডিয়ার জোরেই এখন প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় ‘বিশ্ব মা দিবস’। প্রসঙ্গ যখন পর্দার জগতের এলোই, তবে এক ঝলকে দেখে নিই চলচ্চিত্র জগতের কয়েক সফল তারকা মায়েদের আলাপন।

মৌসুমি

জাতীয় পুরস্কার জয়ী মৌসুমির সংসারও যেন চাঁদের হাট; Photo: Instagram

বাংলা চলচ্চিত্রে তিন দশক ধরে কাজ করে চলেছেন আরিফা পারভিন জামান ওরফে মৌসুমি। ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেমে কেয়ামতে’ সালমান শাহের বিপরীতে অভিষেক ঘটে এই সুনয়না অভিনেত্রীর। প্রথম ছবিতেই আকাশচুম্বী সাফল্য অচিরেই তাঁকে সেরাদের কাতারে নিয়ে আসে। একে একে ‘স্নেহ’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘প্রথম প্রেম’, ‘প্রিয় শত্রু’, ‘দেনমোহর’ প্রভৃতি ব্যবসাসফল ছবির কল্যাণে অল্প সময়েই দর্শক মনে স্থায়ী আসন পান এই সুন্দরী। সাথে মডেলিং ক্যারিয়ারেও ছিলেন সার্থক।

ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে তখনই সহশিল্পী ওমর সানিকে বিয়ে করে ফেললেন। সময়টা ১৯৯৬ সালের ২ আগস্ট। চলচ্চিত্রাঙ্গনের অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন নায়িকার এই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে। ভক্তকুলের হৃদয় একদিকে ভাঙলেও ক্যারিয়ারকে ভাঙতে দেননি মৌসুমি। নিয়মিত কাজ চালিয়ে গেছেন।

‘সুন্দরী রাজকন্যা’, ‘আম্মাজান’,’মোল্লা বাড়ির বউ’,’গোলাপি এখন বিলেতে’, ‘খায়রুন সুন্দরী’, ‘মেঘলা আকাশ’ ইত্যাদি সিনেমা দিয়ে ক্রমাগতই স্পটলাইট নিজের উপরই রেখেছেন মৌসুমি। কিন্তু পরিবারের দিকেও ছিলেন সমান মনোযোগি।

সানি- মৌসুমি দম্পতির ঘরে রয়েছে দুই সন্তান- ফারদিন এহসান স্বাধীন ও ফাইজা। ফারদিনের ইচ্ছে পরিচালনায় নাম লেখানো। টুকটাক স্বল্পদৈর্ঘ্য দিয়েই আরম্ভটা করেছে সে। মৌসুমিও তার আগ্রহে সামিল হয়েছেন। সংসারে সফল হবার মূলমন্ত্র প্রসঙ্গে রূপসী এই অভিনেত্রী স্বভাবজাত মিষ্টি হাসি দিয়েই বলেন,

‘সংসারের সফলতা নির্ভর করে সবকিছুর সঙ্গে যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলার মানসিকতার উপর। পরিবার সামলাতে হয় সমঝোতার সঙ্গে। কাজের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় থেকে যায় যা পরিবারের ঊর্ধ্বে নয়, এগুলো খেয়াল রাখতে হয়।‘

পূর্ণিমা

মেয়ে আরশিয়াই পূর্ণিমার ‘পাওয়ার হাউজ’; Photo: Instagram

রিয়াজ তখন উঠতি তারকা। ‘এ জীবন তোমার আমার’এ তাঁর বিপরীতে সদ্য কৈশোর ছোঁয়া এক মিষ্টি মুখের আবির্ভাব ঘটলো সিনেমাপাড়ায়,নাম দিলারা হানিফ রিতা। পোশাকি নাম ‘পূর্ণিমা’। অর্থের হিসাবে তেমন ব্যবসা না করায় মনটা ভেঙেছিল চলচ্চিত্রের নতুন শশীর।

১৯৯৭ সালে প্রথম পুরোদস্তুর নায়িকা হিসেবে নাম লিখিয়েছিলেন। এর আগে অবশ্য শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। তন্বী এই নায়িকার প্রথম হিট ছবি রুবেলের বিপরীতে ‘যোদ্ধা’। এই ছবির সাফল্যই পরবর্তীতে তাঁর ক্যারিয়ারের গ্রাফ এঁকে দেয়।

ক্যারিয়ারের প্রথমভাগে ৫ বছর ছিলেন মূলধারার বাইরে। এর কারণ হিসেবে বাংলা চলচ্চিত্রাঙ্গনে তুমুল অশ্লীলতার প্রকোপকেই দায়ী করেন তিনি। ২৩ বছরের শিল্পী জীবনে গুজব আর বিতর্ককে প্রশ্রয় দেননি কখনোই।

‘আকাশ ছোঁয়া ভালবাসা’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘রাক্ষুসী’, ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিলো না’, ’সুভা’, ‘শাস্তি’, ‘মেঘের পড়ে মেঘ’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘মনের মাঝে তুমি’ সহ অসংখ্য ছবিতে অঢেল আন্তরিকতার সাথেই অভিনয় করেছেন। ৮০ ছবিতে অভিনয়ের পরেও পূর্ণিমা কিন্তু আজও সন্তুষ্ট নন। সাক্ষাৎকারের সূত্রেই বারবার বলেন এই কথা-

‘ভালো কিছু করার জন্য মনটা ছটফট করে। ভালো চরিত্র শুনলে কাজ করার আগ্রহ বাড়ে। তাই এখন এটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। সাফল্য-খ্যাতি আর আর্থিক সমৃদ্ধি সবই আমি পেয়েছি। পেয়েছি দর্শকদের ভালবাসা। এখন চাই অভিনেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি। এখন শুনতে চাই, পূর্ণিমা অনেক উঁচু মানের অভিনেত্রী।‘

নাট্যাঙ্গনেও ব্যস্ত এই সদাযৌবনা অভিনেত্রী। ‘ল্যাবরেটরি’, ‘সাবলেট’, ‘হলুদ রঙের বায়না’, ‘ভালো বাসাবাসি’, ‘অমানিশা’, ’উল্টো ধনুক’, ‘ওইখানে যেও নাকো তুমি’, ‘প্রেম ও দুঃস্বপ্নের রাত’ প্রভৃতি নাটকে হুমায়ূন ফরিদী, জাহিদ হাসান, তাহসান, অপূর্ব ,ইরেশ জাকের প্রমুখের সাথেই দাপিয়ে কাজ করেছেন। বলা যায় দুই ক্ষেত্রেই সফল তিনি।

২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর পারিবারিক পছন্দেই বিয়ে করেন আহমেদ জামাল ফাহাদকে। ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল পূর্ণিমার কোলে আসে ফুটফুটে মেয়ে আরশিয়া উমায়জা। সেসময় কাজে বিরতি দেন আবারও। কেজি ওয়ান পড়ুয়া উমায়জাকে নিয়েই দিনের সমস্ত সময়টা কাটে এই ভুবনমোহিনী সৌন্দর্যের নায়িকার। এই লক ডাউনেও তাই খুব একটা বদল হয়নি তাঁর দৈনিক রুটিন। সন্তান প্রসঙ্গে হেসেই তাই জানান,

‘আমি এমনিতেই ঘরকুনো। ছোট বাচ্চা নিয়ে সারাদিন কীভাবে সময় কেটে যায় টেরই পাই না।‘

অপর্ণা সেন

মেয়ে কঙ্কণাকেও গড়ে তুলেছেন সংস্কৃতিমনা হিসেবে; Photo: Indian Times

‘আমি মিস ক্যালকাটা নাইন্টিন সেভেনটি সিক্স।‘

গানের সেই চৌকস সুন্দরীর কথা মনে পড়ে?  সেই ষাটের দশকে সত্যজিতের ‘তিন কন্যা’ (১৯৬১) দিয়ে চোখ জুড়িয়েছিলেন। এই চুয়াত্তরেও অনন্ত যৌবনা হয়ে ধরা দেন ক্যামেরার শাটারে, মনপ্রাণ উজিয়ে কাজ করেন চলচ্চিত্রে, সাহিত্যে, আবৃত্তি অথবা নাটকের মঞ্চে।

লোকে বলে, বুদ্ধি, শিক্ষা আর সৌন্দর্য এক আধারে ধরা দিলে তবেই নাকি মেলে অপর্ণা সেন। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না রায় বাবুর সেই ষোড়শী মৃন্ময়ীর প্রথম নাম মোটেই অপর্ণা নয়।

বাবা ছিলেন পরিচিত মুখ; পেশায় সাংবাদিক-পরিচালক। সেই চিদানন্দ দাশ ও সুপ্রিয়া দাশগুপ্তের কন্যা রীণা দাশগুপ্তই কালের প্রবাহে অপর্ণা সেনে পরিণত হন। এর মাঝে সাংবাদিক চিরঞ্জীব সেনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়ে দ্রুতই। তবে দমে যাননি অপু।

‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘অপরিচিত’,’ বোম্বে টকি’, ‘এখনই’, ‘সুজাতা’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘জন অরণ্য’, ‘নৌকাডুবি’, ‘একদিন আচানক’, ‘তিতলি’, ‘চতুষ্কোণ’, ‘অন্তহীন’, ‘ইতি মৃণালিনী’ প্রভৃতি দিয়ে নিজের বহুমুখী প্রতিভাকেই বারবার প্রমাণ করেছেন তিনি।

তবে শুধু অভিনয়েই নয়। পরিচালনা আর লেখনী দিয়েও জাতীয় পুরস্কার, পদ্মশ্রী সহ দেশি বিদেশি পুরস্কার নিয়মিত ভরেছেন কীর্তির ঝুলিতে। ’৩৬ চৌরঙ্গী লেন’, ‘পরমা’, ‘ মিস্টার এন্ড মিসেস আইয়ার’, ‘যুগান্ত’, ‘ ১৫ পার্ক এভিনিউ’, ‘পারমিতার একদিন’ সহ বেশ কিছু সমালোচক ও দর্শকপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন। নিজের কাজ সম্পর্কে অপর্ণা নিজেই বলেছেন,

‘ছকের বাইরে গিয়ে নয়, বাস্তবকে অগ্রাহ্য না করেই ছবি বানাই। তাই আমার ছবির নারীরা অনেক বেশি জীবন্ত। আমার ভাবনায় পুষ্ট। ওরা আমার মতোই ভালো-মন্দয় মেশানো।’

বিজ্ঞান লেখক মুকুল শর্মার সাথে দীর্ঘদিনের দাম্পত্যে দুই কন্যার মা হন তিনি। মেয়ে ডোনা ও কঙ্কণা সেন শর্মা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কঙ্কণা তো পুরোদস্তুর মায়ের পথেই হাঁটছেন, খ্যাতিও মিলেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্টি কলেজ অফ মরিসের অধ্যাপক কল্যাণ রায়ের সাথে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন ২০১৪ সালে। কাজ ও ভালোবাসার টানে এই দম্পতি দুই দেশেই তৎপর। এর মাঝেও অপর্ণা তাঁর কন্যাদ্বয়ের উপর রয়েছেন বটগাছের মতো ছায়া হয়ে।

সোনি রাজদান

কন্যা শাহীন ও আলিয়াকে ঘিরেই সোনির জীবন; Photo: Instagram

‘মায়ের সাথে সম্পর্কটা হবে ধৈর্যের, ভালোবাসার। কেননা পৃথিবীতে সেই সবচেয়ে কাছের মানুষ, সেই সবার থেকে বেশি ভালো চায় সন্তানের। তবে মা আজীবন উদারভাবে ভালোবেসে যাবে তা হবে না, সন্তানেরও তার প্রত্যুত্তরে সম্মান, প্রেম দেয়া চাই।‘

সফল কন্যা আলিয়া ভাটের মা সোনি এভাবেই সংজ্ঞায়িত করেন মা-সন্তান সম্পর্কের বালিঘড়িকে।

জার্মান মা গারট্রুড এবং ভারতীয় পিতা নরেন্দ্র রাজদানের কন্যা সোনি রাজদানের জন্ম ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। তরুণ বয়সে সেখানকার থিয়েটারেই অভিনয়ে পাঠ নিয়েছিলেন। পরে ভারতে আসায় কাজের সুযোগ পান টেলিভিশন ও সিনেমায়।

’৩৬ চৌরঙ্গী লেন’, ‘আহিস্তা আহিস্তা’, ‘সড়ক’, ‘ গুমরাহ’, ‘সাথী’, ‘ত্রিকাল’,’মনসুন ওয়েডিং’, ‘পেজ থ্রি’ ,’স্যার’, ‘রাজি’, ‘নো ফাদারস ইন কাশ্মীর’ সহ নানান ছবিতে অভিনয় করেছেন এই তিলোত্তমা নায়িকা। টেলিভিশনে সাহিল, গাঁথা ইত্যাদি নাটকে ছিলেন প্রিয়মুখ। ২০১৮ সালের ‘রাজি’ ও ‘ইউরস ট্রুলি’ পুনরায় জাত চেনান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রাপ্ত এই অভিনেত্রী।

নিজস্ব প্রতিভায় আলোকিত হলেও অন্য দুই পরিচয়েও লোকে চেনে তাঁকে। প্রযোজক- পরিচালক মহেশ ভাটের দ্বিতীয়া স্ত্রী তিনি, আর আলিয়া ভাটের মা। ক্যারিয়ারের উঠতি হালেই বিতর্কিত পরিচালক মহেশকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সোনি। ২০ এপ্রিল ১৯৮৬ সালের এই বিয়ে বি টাউনের সবচাইতে আলোচিত ঘটনা ছিল সেকালে।

১৯৮৮ সালেই প্রথম কন্যা শাহীন ভাটের জন্ম হয়। কিছুদিন বিরতি দিয়ে ফের অভিনয়ে নামেন সোনি। ১৯৯৩ সালে ‘গুমরাহ’ সিনেমার শুটিং চলাকালে টের পান আবার গর্ভধারণ করেছেন তিনি। এবারের কন্যা আলিয়া। দুই সন্তানকে ঘিরেই বিরাট একটা সময় পার করেছেন এই সুঅভিনেত্রী।

শুধু কাজের ব্যাপারেই যে তাঁর দৃঢ়তা- তা নয়। মি টু আন্দোলন, বয়স্ক অভিনেত্রীদের অবহেলা কিংবা সরকারের নীতি নির্ধারণের সমালোচনায় বরাবরই সরব তিনি।

মনিকা বেলুচ্চি

পঞ্চান্নতেও অমলিন মনিকা, কন্যা ডিভার সাথে; Photo: Getty Images

‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য;

অতিদূর সমুদ্রের পর হাল ভেঙ্গে যে নাবিক হারায়েছে দিশা

সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি- দ্বীপে র ভিতর…’

শ্রাবস্তীর কারুকার্যের মুখশ্রীর এই নায়িকা কারো কাছে প্রথাবিরোধী বন্ডগার্ল, আবার কারো কাছে সাহসি, বুকে আগুন জ্বালা ‘ম্যালেনা’, কেউ তাঁকে চেনে ম্যাট্রিক্সের ‘পারসেফোন’ হিসেবে ,আবার কারো কাছে তাঁর পরিচয় ‘ভ্যাম্পায়ারের স্ত্রী’।

বিশাল ভূমিকা সমাপ্ত হলো। এতক্ষণে ঠিক ধরে ফেলেছেন, অসাধারণ লাবণ্যের মনিকা বেলুচ্চির নামই জপছিলাম। ইতালিয়ান এই মডেল কাম অভিনেত্রীর দেহবল্লবীর প্রশংসা যতই হোক না কেন, বিজ্ঞজন মাত্রেই জানেন তাঁর প্রখর ব্যক্তিত্বের কাছে সহজেই ম্লান হয়ে যায় সব।

বিখ্যাত ফ্যাশন হাউস ‘ডলসি এন্ড গাবানা’ ও ‘ডায়োর’এর মডেল হিসেবেই সূচনা করেছিলেন। ক্রমে তাঁর সৌন্দর্যের দ্যুতি র‍্যাম্প থেকে রিলে গড়ায়। ১৯৯১ সালে ‘লা রিফা’ দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও মূল স্পটলাইট পান ১৯৯৬ সালের ‘দ্য এপার্টমেন্ট’ এর লিসা ভূমিকায় অভিনয় করে।

সর্বজনবিদিত হন ২০০০ সালের রোমান্টিক মাস্টারপিস ‘ম্যালেনা’র মধ্য দিয়ে। তাঁর মাদকতাময় চাহনি, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ কেড়ে নেয় কোটি তরুণ-যুবার রাতের ঘুম। এরপরে আর পেছনে তাকাতে হয়নি মনিকাকে।

১৯৯৬ এই সহশিল্পী ফরাসি অভিনেতা ভিনসেন্ট কাসেল সাথে প্রেম গড়ে ওঠে মনিকার, গাঁটছড়া বাঁধেন এর তিন বছর পর। এর আগে অবশ্য চিত্রগ্রাহক ক্লডিও কার্লোস বাসোর সাথে ১৮ মাসের সংসার ছিল তাঁর।

কাসেলের সাথে সংসার টিকেছিল সুদীর্ঘ ১৪ বছর। তাঁদের দুই সন্তান ডেভা ও লিওনি কাসেল দায়িত্ব অবশ্য পেয়েছেন মনিকাই। বর্তমানে কাজ, সন্তান নিয়েই ব্যস্ত আছেন। দুই কন্যাকেই স্বাধীনভাবে বড় করায় মনোযোগ তাঁর। এর মধ্যেই ডিভা নাম লিখিয়েছেন ‘ডলসি এন্ড গাবানা’র মডেলিং জগতে। দেখা যাক, মায়ের দাপুটে প্রতিচ্ছবি কতটা উতরে যান এই পনেরোর কিশোরী।

এই অভিনেত্রীরা শুধু যে মা হিসেবেই সফল তাই শুধু নন, ‘বিয়ে-সন্তানের আবির্ভাব ঘটলেই যে নায়িকারা ঝরে পড়েন’ এই পুরনো ধারণাকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এগিয়ে চলেছেন।  প্রথা বিরোধী হয়ে নিজস্ব স্রোতে এগিয়ে চলা এই মায়েরাই পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছেন আদর্শের নতুন সংজ্ঞা।

লেখক- সারাহ তামান্না 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *