বিশ্ব

পোখরান উপাখ্যান: যে পরীক্ষার মাধ্যমে ভারত পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পায়1 min read

জুলাই ২৮, ২০১৯ 5 min read

author:

পোখরান উপাখ্যান: যে পরীক্ষার মাধ্যমে ভারত পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পায়1 min read

Reading Time: 5 minutes

১৯৯৮ সালের ১১ মে ভারতের রাজস্থানের পোখরান নামক স্থানে সফলতার সাথে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়। এরপর থেকে ভারত প্রতিবছর ১১ মে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালন করে। এটা ছিল ভারতের দ্বিতীয় পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ভারতের পরমাণু বিজ্ঞানীরা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। প্রথম ভারতীয় পরমাণু বোমার পরীক্ষা করা হয় ১৯৭৪ সালে যা সফল হয় নি।

পাশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন ১৯৬৪ সালের ১৬ অক্টোবর ১৬ কিলোটন পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং পঞ্চম পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে এক্সক্লুসিভ নিউক্লিয়ার-আর্মড স্টেট ক্লাবে এন্ট্রি নেয়। তা দেখে ভারতের নেতাকর্মীরা কিভাবে চীনকে টেক্কা দেওয়া যায় তা নিয়ে অনেকটা চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ মাত্র দুই বছর আগে চীন ভারতকে পরাজিত করেছিল। একজন ঠিকই জানতেন চীনকে টেক্কা দেয়ার সমাধান একটাই। আর সেটা হলো— “অ্যাটম বোমা, অন্যকিছু নয়”। আর সেই একজনটা হলেন তৎকালীন রাজ্যসভার এমপি এবং ভারতীয় জনসংঘ (পরবর্তীতে ভারতীয় জনতা পার্টি)-এর নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী। তিনি চীনের পারমাণবিক পরীক্ষার কিছুদিন পর সংসদে এ প্রস্তাব জানান।

বাজপেয়ীর এ প্রস্তাবনার পর ভারতজুড়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিবিদ ও পার্টির নেতা সুব্রমানিয়া স্বামী নিউক্লিয়ার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ‘সিস্টেম এনালাইসিস অব স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স নিডস’ শিরোনামের এ গবেষণাপত্রটি ভারতের অর্থনীতি ও রাজনীতি বিষয়ক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়।

সুব্রমানিয়া স্বামী তাঁর গবেষণায় দেখান যে, যদি ভারত পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় তাহলে তারা চীন ও অন্যান্য পরাশক্তির দেশ বা পারমাণবিক রাষ্ট্রগুলোর হুমকির মুখে পড়তে পারে। কেননা সেসব রাষ্ট্র ভারতকে পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় না। এতে সেই রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতা কিছুটা হলেও খর্ব হয়ে যেতে পারে।

সুব্রমানিয়াম বলেন, “আমরা চীন হতে পারমাণবিক হুমকির মুখে পড়তে পারি এবং আমরা এ বিষয়ে অন্যান্য পরাশক্তির কাছ থেকে কোনো রকম সাহায্য পাবো না। কারণ এটা হবে তাদের সাথে আমাদের সরাসরি বিরোধিতা এবং এর ফলে তারা নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে আমাদেরকে বিচ্ছিন্নও করে দিতে পারে। অতি ক্ষমতাবান দেশগুলো এটা ভাবতে পারে যে, ভারত যদি নিউক্লিয়ার ক্ষমতার অধিকারী হয় তাহলে তাদের ক্ষমতা ও রণকৌশল কিছুটা শ্লথ হয়ে যেতে পারে।”

প্রারম্ভিক পদক্ষেপ

১৯৭৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রথমবারের মতো ভারত পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর মতো দুঃসাহস দেখায়। ভারতের পোখরান নামক স্থানে পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা করা হয়েছিল বলে এটি পোখরান-১ নামে পরিচিত। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ পরীক্ষার নাম দেওয়া হয় “শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিস্ফোরণ”। শান্তিপূর্ণ কথাটি ব্যবহৃত হয়েছিল পশ্চিমাদের মন গলানোর জন্য। তারা যেন কোনভাবে সন্দেহ করতে না পারে। যদিও সেবার সেই কার্যক্রম ব্যর্থ হয়েছিল।

ভারতের পোখরান-১ চেষ্টা নিউক্লিয়ার স্টেট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। পরবর্তী ২ দশক পর্যন্ত ভারতের অনেক প্রধানমন্ত্রী পারমাণবিক গবেষণা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও। তিনি আমেরিকার কড়া নজরদারি এড়িয়ে পরীক্ষা চালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটাও আমেরিকার স্যাটেলাইটে ধরা পড়ে।

১৯৯৫ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষা পোখরান-১ এর উপর থেকে সন্দেহের অভিযোগ প্রত্যাহার করার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও পুনরায় পারমাণবিক পরীক্ষার পদক্ষেপ নেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফ্রাঙ্ক ওয়াইজনার যেন ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার সমস্ত ছবি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান এবং ভারতকে যেন এসব প্রকল্প বন্ধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। যদি তাতে কাজ না হয় তাহলে ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকি দিতে বলা হয়।

পারমাণবিক পরীক্ষায় বাজপেয়ীর অবদান

১৯৯৬ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী ভারতের ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতায় আসার পরই তিনি তাঁর স্বপ্নপূরণের কাজে তৎপর হন। বাজপেয়ীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিল ভারতকে একটি পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব পরিমন্ডলে তুলে ধরা। তিনি বিভিন্নভাবে সে স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা চালাতে থাকেন। সেজন্য তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সচিব শক্তি সিনহাকে বলেন, ভারতের তৎকালীন প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা এবং ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) এর সেক্রেটারি এপিজে আব্দুল কালাম যেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী আব্দুল কালামের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন।

পারমাণবিক পরীক্ষার পরিকল্পনা শুরুর মাত্র তেরো দিন পূর্বে বাজপেয়ী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। তাই তাঁর দলের দুজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এইচডি দেব গৌদা এবং আইকে গুজরাল পারমাণবিক কর্মসূচী বাস্তবায়নে সমর্থন দেন নি। তাই ১৯৯৬ সালের সে যাত্রায় এ চিন্তা সরকার মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে।

সফল পারমাণবিক পরীক্ষার পরে অটল বিহারী বাজপেয়ী, আব্দুল কালামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা

পোখরান-২ এর সূচনা

১৯৯৮ সালের মার্চ মাসে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পুনরায় ক্ষমতায় আসে এবং অটল বিহারী বাজপেয়ী পুনরায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এপ্রিলের ৮ তারিখে DAE (ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাটমিক এনার্জি) প্রধান আর চিবাম্বরাম এবং DRDO প্রধান এপিজে আব্দুল কালাম সরকারের পক্ষ থেকে নিমন্ত্রণ পান। তাঁরা দুজনেই পারমাণবিক পরীক্ষার ব্যাপারে বাজপেয়ীকে পূর্ণ সমর্থন দেন। সেবার পুরো অপারেশনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন বাজপেয়ী এবং তাঁর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ব্রজেশ মিশরা। অপারেশনটি এতটাই গোপনীয় ছিল যে শুধুমাত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এলকে আদভানী ছাড়া সরকারের অন্য কোন সদস্য এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।

এমনকি প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজকে মে মাসের ৯ তারিখে জানানো হয়েছিল। তিন বাহিনীর প্রধান এবং পররাষ্ট্র সচিবকে আরও তিনদিন পর জানানো হয়েছিল। মন্ত্রী পরিষদ কমিটিকে মে মাসের ১১তারিখে অত্যন্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করে এ ব্যাপারে তথ্য দেয়া হয়েছিল।

পোখরানের সফলতা

পারমাণবিক টেস্ট প্রকল্পের পরিচালক ড. কে সান্থানাম, কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীকে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। এপিজে কালাম এবং চিদাম্বরামকে নিয়ে টিমটি ১৯৯৮ সালের মে মাসে পোখরানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। গবেষক দল যুক্তরাষ্ট্রের স্পাই স্যাটেলাইটকে এড়ানোর জন্য রাতের বেলা কাজ করত। যখন স্পাই স্যাটেলাইট অন্য পথে ঘুরত তখন তারা পারমাণবিক পরীক্ষার জন্য টানেল খুঁড়ার কাজ করতেন। গবেষকরা সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ে ছদ্মবেশে কাজ করতেন। আর পারমাণবিক বোমাগুলোকে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা হয়েছিল যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে।

অবশেষে ১১ মে, ১৯৯৮ সালে আনুমানিক বিকাল ৩:৪৫ টায় তিনটি পারমাণবিক ডিভাইস দিয়ে পরীক্ষার সূচনা করা হয়। ডিভাইসগুলো হলো— থার্মোনিউক্লিয়ার ডিভাইস (শক্তি-১), ফিশন ডিভাইস (শক্তি-২) এবং একটি সাব-কিলোটন ডিভাইস (শক্তি-৩)।

পারমাণবিক বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থল

“এটা নিশ্চিত যে, সেখানে কোন তেজস্ক্রিয় মৌল পরিবেশে ছড়ায় নি। এটি ১৯৭৪ সালের মতো একটি পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ছিল মাত্র। আমি সেখানে নিযুক্ত বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদেরকে উষ্ণ সংবর্ধনা জানাচ্ছি যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ প্রকল্পটি সফল করেছেন। সকলকে ধন্যবাদ।” — কথাগুলো বলছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। মে মাসের ১৩ তারিখে ভারত শক্তি-৪ ও শক্তি-৫ নামে আরও দুটি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়।

আন্তর্জাতিক দ্বিমুখীতা

ভারতের পোখরান-২ এতটাই সুপরিকল্পিতভাবে হয়েছিল যে যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি স্টেট সেক্রেটারি স্ট্রোব টালবট এই তথ্যটি সিএনএন এর মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন। ক্লিনটন প্রশাসন এ তথ্য শুনে খানিকটা ক্ষিপ্ত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ভারতের এ পদক্ষেপকে আইনত অবৈধ বলে ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে একঘরে করার প্রচেষ্টা চালায়। ব্রিটেন এটাকে “অনাকাঙ্ক্ষিত” বলে আখ্যা দেয় এবং জার্মানি বলে, যারা CTBT এর সদস্য তাদের জন্য ভারতের পরমাণু পরীক্ষা ‘চরম অপমানজনক’। শেষপর্যন্ত জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানও এই ঘটনাকে “অত্যন্ত দুঃখজনক” বলে প্রকাশ করেন।

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং কিছু ইউরোপীয় দেশ ও জাপান সাময়িকভাবে সাহায্য স্থগিত করে। অপরদিকে দুই সপ্তাহ পরে পাকিস্তান বিশ্বনেতাদের বাঁধা উপেক্ষা করে ভারতকে দেখানোর জন্য পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়।

বাজপেয়ী ক্লিনটনের কাছে চীনের নাম উল্লেখ না করে একটি চিঠি লিখেন। চিঠিটা অনেকটা এরকম ছিল— “আমাদের সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্র দ্বারা সুসজ্জিত। তারা ১৯৬২ সালে ভারতের উপর বিধ্বংসী অস্ত্রের সাহায্যে হামলা চালিয়েছিল। যদিও বিগত এক দশকে আমাদের মধ্যকার সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তারপরও সীমান্ত সমস্যা থাকায় তাদের সাথে আমাদের বিশ্বস্ততা পুরোপুরি তৈরি হতে পারে নি।”

ভারতবাসীর জয়োৎসব

বিজেপি এত বড় একটা অর্জন খুব উৎসাহের সাথে উদযাপন করল যদিও বিরোধী দল এটা নিয়ে তামাশা করেছিল। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী পরমাণু পরীক্ষার ২০ দিন পর বলেন, “সত্যিকারের শক্তি হলো শত্রুপক্ষকে দমন করা। ‘শক্তি’ কে উড়ানো নয়।” বাকিরা বলেছিল, “এ বোমা যেন দেশপ্রেমের প্রতীক হয় আর দেশের স্বার্থে শক্তি প্রদর্শন করে।”

বাজপেয়ী পরবর্তীতে দেশের ভেতরে যারা পরমাণু পরীক্ষার বিরোধিতা করেছিল তাদের উদ্দেশ্যে বললেন, দেশ যদি পারমাণবিক নিরাপত্তায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় তাহলে সেটা হবে বিশ্বের পরাশক্তিদের কাছে ঈর্ষণীয়। আর তাতে ক্ষতির কিছু নেই; বরং তারা ভারতকে ছোট করে দেখার সাহস দেখাতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, “যখন আমি ১৯৭৪ সালে সংসদ সদস্য ছিলাম, তখন ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতে প্রথমবারের মতো পরমাণু পরীক্ষা করা হয়েছিল। সেদিন আমরা এ কাজের বিরোধিতা না করে স্বাগত জানিয়েছিলাম। কারণ এটা করা হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে। সেসময়টা কি বিপজ্জনক ছিল? আমাদের কি শুধুমাত্র বিপদের দিনে, সংকটের মুহূর্তেই নিরাপত্তার কথা চিন্তা করা উচিত? যদি আমরা আগে থেকে নিরাপত্তা নিয়ে রাখি তাহলে ভবিষ্যতে যেকোন বিপদ খুব সহজেই সামাল দিতে পারব।”

এত সমালোচনা আর অবরোধের পর দেখা গেল বাজপেয়ী সরকারই বিজয়ী। ভারতের অর্থনীতির উপর অবরোধের প্রতিক্রিয়া ছিল খুবই ক্ষুদ্র। আসলে বিশাল জনসংখ্যা আর দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ ভারত ধীরে ধীরে পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে তা মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। ফলে কঠোর অবরোধ আরোপ করে বিশাল বাজার এবং সহজলভ্য বিনিয়োগক্ষেত্র হারাতে চাইবে কে? পোখরান-১ যদি সূচনা হয় তবে পোখরান-২ হলো পরিণতি। ১৯৭৪ সালে ভারত স্বপ্নের যে বীজ বপন করেছিল তা ডালপালা মেলে প্রাপ্তবয়স্ক হয় ১৯৯৮ সালে। আর তাতেই ভারত হাজারো সমস্যা জর্জরিত হলেও গর্ব করবার মতো একটি ব্যাপার ঘটে যায় ভারতবাসীর জন্য, রাতারাতি তারা হয়ে ওঠে সমীহ করবার মতো একটি দেশ।

লেখক- নিশাত সুলতানা  

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *