বাংলাদেশ সংস্কৃতি সাম্প্রতিক

ধর্ষকদের শাস্তির দাবীতে দৌড় প্রতিবাদ!1 min read

মার্চ ২৭, ২০১৮ 3 min read

ধর্ষকদের শাস্তির দাবীতে দৌড় প্রতিবাদ!1 min read

Reading Time: 3 minutes

ধর্ষকদের শাস্তির দাবীতে দৌড় প্রতিবাদ!
বাংলা ইনফোটিউব: সাদা টি শার্ট গায়ে একজন বয়স্ক ভদ্রলোক দৌড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। হাতে তার প্লাকার্ড। লেখা, রুপা’র ধর্ষকদের ফাসি চাই।

মীর্জা শাজাহান নামের ঐ ভদ্রলোক নাকি প্রতিজ্ঞা করেছেন, তিনি আমৃত্যু দৌড়াতে থাকবেন, ধর্ষকদের শাস্তির দাবীতে। এভাবে নিরব প্রতিবাদের সুচনা হচ্ছে হাজারো মীর্জা শাহজাহানের মনের ভিতর।কিন্তু রাষ্ট্র যেন নিরব। আতিক মেহেদী নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর এই পোষ্টটি একদিনে দেড় হাজারের মত মানুষ শেয়ার করেছেন।সেখানে নানাজন নানা মন্তব্য লিখছেন। বিজন ভট্টাচার্য নামে একজন লিখেছেন, ‘আমরাও দৌড়াব আমৃত্যু। মির্জা শাহজাহান আমাদের পথপ্রদর্শক। ‘ বদরুল আলম মিলন লিখেছেনপ্রতিবাদী লোকটিকে সালাম , আমরা’ও আছি উনার সাথে । আবার কেউ কেউ ভিন্ন মত পোষন করছেন। যেমন, আলী নামের একজন লিখেছেন, নিরব প্রতিবাদে কি কাজ হবে??

টাঙ্গাইলের একজন অখ্যত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবী করা মীর্জ শাহজাহান, এই ধর্ষনের প্রতিবাদ করার জন্য ২৫ মার্চ থেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন দৌড়াবার। তিনি নানান অসঙ্গতি আর দাবী দাওয়া পুরণে দৌড়িয়ে প্রতিবাদ করেন। মীর্জা শাহজাজাহান লিখেছেন, ‘
বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুসের মহানায়কের হুকুমে জেগে উঠেছিল সমগ্র জাতি। ছিলনা ভয়, আশা ছিল বুক ভরা।।৪৬ বছর পর আশা কমে যাচ্ছে,বাড়ছে ভয়।।আমি এক অখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ।রেসকোর্স ময়দানে দৌড়াব সাম্যতার জন্য ন্যায্যতার জন্য।।আমার মা,আমার বোন,আমার মেয়ের প্রতিচ্ছবি ” রুপা”র ধর্ষক ও খুনীদের ফাসীর রায় কার্যকরের দাবিতে।’
এই রুপাদের ধর্ষকদের বিচার হয় না। বিচার হলেও, ধর্ষন বন্ধ হয় না, ধর্ষক ভয় পায় না, ধর্ষন কমে না। কি হওয়া উচিৎ ধর্ষনের শাস্তি? বা ধর্ষনের দর্শন?

হবিগন্জে ১৬ বছরের কিশোরী, বিউটির ধর্ষন এবং পরবর্তী হত্যাকান্ডের পর তার নিথর দেহ সবুজ জমিনে পড়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়েছে। এই ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ্যমাধ্যমে নানা রকম রক্তক্ষরন হচ্ছে।

হবিগন্জে ১৬ বছরের কিশোরী, বিউটির ধর্ষন এবং পরবর্তী হত্যাকান্ডের পর তার নিথর দেহ সবুজ জমিনে পড়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়েছে। এই ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ্যমাধ্যমে নানা রকম রক্তক্ষরন হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক, লুৎফর রহমান হিমেল লিখেছেন, বিউটি সর্ম্পকে বিস্তারিত।

‘হবিগঞ্জের কিশোরী বিউটিকে তার দিনমজুর বাবা সায়েদ আলী রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। মেয়েটিকে তুলে নিয়ে একমাস আটকে রেখে ধর্ষণ করেছিল বাবুল নামের এক যুবক। এই বাবুলের মা কমল চাঁন বেগম আবার একজন ইউপি সদস্য।
— দিনমজুর সায়েদ আলী মেয়েকে বাঁচাতে আদালতে গিয়েছিলেন।
— পুলিশে মামলা করেছিলেন।
— স্থানীয়দের কাছে বিচার দিয়েছিলেন।
— মেয়েকে দূরবর্তী নানার বাড়িতে রেখে এসেছিলেন।
কিন্তু তারপরও মেয়েকে রক্ষা করতে পারেননি। বাবুল সেখান থেকেই তাকে তুলে এনে আবারও তিন সহযোগিকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। এবার তাকে বাঁচতেও দেয়নি। নৃসংসভাবে হত্যা করে হাওরে ফেলে রাখে তার নিথর দেহখানি। একজন দিনমজুর বাবা তার মেয়েকে রক্ষায় এরচে আর কিইবা করতে পারেন? বাকি কাজটা ত করবার কথা ছিল আদালতের, পুলিশের, স্থানীয় পঞ্চায়েতের, ইউনিয়ন পরিষদের।
হাওরের সবুজ জমিনে রক্তাক্ত বিউটিকে দেখে বাকরুদ্ধ এই আমি যখন কিছু লিখব ভাবছি, তখনই খবর এলো নিখোঁজের তিনদিন পর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়া এলাকা থেকে তৃতীয় শ্রেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুশরাত জাহান নিশুর (৮) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করছে পুলিশ। এই শিশুটিকেও নাকি ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
বিউটি বা নিশু, সবার বেদনাবিদুর গল্প কিন্তু একই। কেন এই অধপতন সামাজিক মূল্যবোধের— তা বুঝতে কিন্তু গবেষণার দরকার নেই। সুন্দর সমাজ গড়বার বাকি কাজটা যাদের, সেই আদালত, সেই পুলিশ, স্থানীয় পঞ্চায়েত, সেই ইউনিয়ন পরিষদ সেটা করছে না বলেই এই অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না।
দয়া করে জেগে উঠুন
—মাননীয় আদালত
—মাননীয় পুলিশ
—মাননীয় পঞ্চায়েত
—মাননীয় ইউনিয়ন পরিষদ
—মাননীয় রাজনীতিক।
দয়া করে জেগে উঠুন”

কি হওয়া উচিৎ ধর্ষকদের শাস্তি? সাংবাদিক সাহেদ আলম একটি মন্তব্য লিখেছেন ফেসবুকে। সেখানে তিনি সরাসরি মৃত্যুদ্বন্ড দেয়ার দাবী করে লিখেছেন, এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো একটু স্বৈরাচারী হয়ে উঠলেও জনগন তাতে সমর্থন দিতে পারে। তার লেখাটি এমন:

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে,
স্বৈরাচার এর খাতায় যেহেতু নাম উঠেছে, আরো একটু খানি না হয় স্বৈরাচার হয়ে উঠুন। অনেক জায়গায় আইনের শাসন নেই, প্রয়োগ নেই, সেটা মেনে নিয়েই আরেকটি আইন-শাসন বিহীন বিচার ব্যবস্থা প্রণয়ন কি করা যায়? ধর্ষনকারীকে প্রকাশ্যে ‘গনপিটুনী’তে মারার রেওয়াজ অথবা, বড় বড় বাজারে ফায়ারিং স্কোয়াড এ শাস্তি দেয়া যায়? এবং সেটার একটা লাইভ টেলিকাস্ট প্রতিটি টিভির জন্য বাধ্যতামূলক করা যায়। এবং তাদেরকে এই শাস্তি দেয়ার আগে, উন্নয়ন শোভাযাত্রা’র মত করে তাদের শেষ বিদায় জানানো গেলে আরো অনেক মানুষ জানবে। অনেকটা সৌদি’র শাস্তি বলতে পারেন। দেশ যেহেতু মদীনা সনদে চলছে, এতটুকু করাই যায়।
শিশু ধর্ষনকারীদের বেলায় এই শাস্তি আরো একটু বাড়ানো যায় কিভাবে একটু ভেবে দেখবেন? আমার মাথায় আসছে না, কি করা যায়। তবে আপনার মন্ত্রীসভা অথবা পরামর্শকদের মধ্যে ডিজিটাল আইন-টাইন যাদের মাথায় এসেছিল, এমন কুচক্রী আইন বিশরদ যারা আছে আপনার আশে পাশে, তাদের কাজে লাগিয়ে দেন।আর বিউটির মত আরেকটি মেয়ের ছবি-ই বাংলাদেশের প্রতীক হয়ে ওঠার আগে, কিছু একটা করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

গত ৯ মাসে ৩২৫ শিশু ধর্ষিত হয়েছে বলে সংবাদ দেখেছিলাম ক দিন আগে। এটা একটু নয়, অনেক খানি অধ:পতনের ছবি।সুস্থ মস্তিষ্কে মেনে নেয়াটা অনেক কষ্টের। আশা করি নিজের পরিবার ,নাতি নাতিন, অথবা অন্যদেরকে বিউটির জায়গায় রেখে বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *