বিশ্ব

৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের মৃত্যু এবং মানবিকতার পুনঃজাগরন1 min read

জুন ২২, ২০২০ 6 min read

author:

৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের মৃত্যু এবং মানবিকতার পুনঃজাগরন1 min read

Reading Time: 6 minutes

জর্জ পেরি ফ্লয়েড। বয়স ৪৬ বছর। একজন আফ্রিকান-আমেরিকান ব্যক্তি। জন্মসূত্রেই তিনি কালো বর্ণের। জন্ম তার নর্থ ক্যারোলাইনার ফেয়াতিভিলেতে। টেক্সাসের হিউস্টনে শৈশব কৈশোর পার করেছেন। ইয়েট স্কুলে পড়াকালীন বাস্কেটবল এবং ফুটবল টিমের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৯৫ সালের দিকে হিউস্টনে ‘বিগ ফ্লয়েড’ নামে একটি হিপ হপ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১৪ সালে তিনি মিনেসোটায় চলে আসেন। জীবনের শেষ অব্দি এখানেই ছিলেন জর্জ ফ্লয়েড।

বিগত ৫ বছর যাবৎ সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেছেন একটি রেস্টুরেন্টে। সম্প্রতি করোনা মহামারীতে আর দশজনের মতোই চাকরি হারান তিনি। দুই মেয়েকে নিয়ে ছিল ফ্লয়েডের সংসার। বর্তমানে তার পুরো পরিবার হিউস্টনে থাকছেন। ২৫ মে পর্যন্ত এটাই ছিল তার পরিচয়, কিন্তু এখন জর্জ ফ্লয়েড একটি শক্তি, একটি গোটা আন্দোলনের পথ প্রদর্শক।

সেদিনের নির্মমতা

‘কাপ ফুডস’ নামে একটি খাবারের দোকান থেকে ২০ ডলারের সিগারেট কিনে রাস্তার পাশেই নীল এসইউভি গাড়িতে ড্রাইভিং সিটে বসেছিল জর্জ ফ্লয়েড। সময় সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৪৭ মিনিট।

কাপ ফুডসের দুজন কর্মচারী ফ্লয়েডের কাছে এলেন। অভিযোগ ফ্লয়েড সিগারেটের জন্য যে ডলার দিয়ে মূল্য পরিশোধ করেছেন সেটি নকল। তারা ফ্লয়েডকে সিগারেট ফেরত দিতে বললে ফ্লয়েড তা ফেরত না দেওয়ায় খালি হাতে ফিরে আসে। ঠিক চার মিনিট পর পুলিশকে কল করা হয়। ৯১১ এর দেওয়া তথ্যমতে, একজন কর্মচারী তাদের জানিয়েছিল, ফ্লয়েড নকল ডলার ব্যবহার করেছিলেন। মদ্যপ থাকায় নিজেকে সামলাতে পারছিলেন না ফ্লয়েড। অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে পুলিশের প্রথম গাড়িটি আসে।

অফিসার থমাস লেইন এবং জুনিয়র আলেক্সান্ডার কুয়েং গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যান নীল এসইউভি’র দিকে। এরই মাঝে লেইন তার বন্দুক বের করেন। মিনিট খানেকের মধ্যে ফ্লয়েডকে গাড়ি থেকে বের করে আনা হয়। দ্রুত ফ্লয়েডের দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলা হয়। অফিসার কুয়েং তাকে রেস্টুরেন্টের দেয়াল পর্যন্ত নিয়ে যান। তাকে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করা হয়। আটকের ছয় মিনিটের মাথায় তাকে আবার নিয়ে যাওয়া হয় গাড়ির কাছে। সেখানে নিতেই ফ্লয়েড রাস্তায় পড়ে যান। নয় মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে ২য় এবং ৩য় পুলিশের গাড়ি চলে আসে। ৩য় গাড়িতে ছিলেন ঘাতক পুলিশ অফিসার ডেরেক শওভিন।

ফ্লয়েডের সঙ্গে পুলিশের গাড়ির পেছনের সিটে শওভিনের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে শওভিন ফ্লয়েডকে রাস্তায় ফেলে দেন। রাস্তায় ফ্লয়েডের মাথা উল্টোভাবে পড়ে ছিল। ঠিক এই সময় থেকে রাস্তার দুজন মানুষ দৃশ্যটি নিজেদের ক্যামেরায় ধারণ করা শুরু করেন। তারা কাছে গিয়ে দেখতে পান তিনজন অফিসার ফ্লয়েডকে জোর করে চেপে ধরে আছেন। তার নড়াচড়া করার ক্ষমতাও নেই। তিনজন মিলে ফ্লয়েডের মাথা, ঘাড় আর পা এমনভাবে চেপে ধরে ছিলেন যে তার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল।

৮টা বেজে ২০ মিনিটে প্রথমবার ফ্লয়েডের শব্দ শোনা যায়। তিনি ব্যথায় গোঙাচ্ছিলেন। বারবার বলছিলেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না!’ ফ্লয়েড শওভিনকে বলছিলেন বদ্ধ অবস্থায় তার কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু শওভিন শোনেননি। ভিডিও থেকে দেখা যায়, মেডিকেল ইমার্জেন্সিতে কল করার পরও পুরো সাত মিনিট যাবৎ শওভিন ফ্লয়েডের ঘাড় পা দিয়ে চেপে রাখেন। এ সময় কুয়েং বা লেইন তাকে ধরেননি। ফ্লয়েড বারবার বলছিলেন তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না, কিন্তু শওভিন শোনেননি।

শওভিন পুরো ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ফ্লয়েডের ঘাড় চেপে ধরে ছিলেন!

অফিসাররা তাকে যতই জিজ্ঞেস করছিলেন, তিনি কী চান, ফ্লয়েড ততবারই নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার কথা জানান। পুলিশ অফিসারকে অনুরোধ করেন তার পা ঘাড় থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। পুলিশের গাড়িতে উঠবেন কি না জিজ্ঞেস করা হয়। ফ্লয়েড তাতে রাজিও হয়ে যান। ফ্লয়েড বলছিলেন, তিনি নড়তে পারছেন না। কিন্তু তবু শওভিন সরেননি। ৫ মিনিটে ফ্লয়েড অন্তত ১৬ বার বলেছেন তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না।

ফ্লয়েড যতক্ষণ না অজ্ঞান হয়ে চোখ বুজেছেন ততক্ষণ পর্যন্ত শওভিন তার ঘাড়ের ওপর থেকে পা সরাননি। সন্ধ্যা ৮টা বেজে ২৫ মিনিট। রাস্তার পাশ থেকে মানুষরা চিৎকার করে ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে বলেন। তারা দেখতে পান ফ্লয়েড নড়াচড়া করছেন না। পুলিশের সঙ্গে তাদের ঝগড়াও হয়। পুলিশের দাবী ছিল ফ্লয়েড ভালোই আছেন। তারা সবাই প্রমাণ চান। ফ্লয়েডকে আটকের ২০ মিনিট পর সেখানে অ্যাম্বুলেন্স আসে। ফ্লয়েড জ্ঞান হারিয়েছেন বুঝতে পেরেও শওভিন তার পা দিয়ে আরও মিনিটখানেক ফ্লয়েডকে চেপে ধরে রাখেন। যখন তাকে মেডিকেলের লোক এসে সরতে বলেন তখন তিনি সরে যান। শওভিন পুরো ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ফ্লয়েডের ঘাড় চেপে ধরে ছিলেন! ফ্লয়েডকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হয়। ঘটনাস্থলের সবচেয়ে কাছের হাসপাতালে নেওয়ার পর খবর আসে ৯টা ২৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানানো হয়, ঘটনাস্থলে হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল ফ্লয়েডের।

উত্তাল আমেরিকা

(Photo | AP)

ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ থেকে রীতিমতো বিধ্বংসী অবস্থা দেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিক্ষোভ চলার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পাঁচ পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আর শিকাগোর সিসেরো এলাকায় মৃত্যু হয়েছে দুইজন ব্যক্তির। শিকাগো শহরের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিসেরোর বাইরে থেকে আসা দুর্বৃত্তরা এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। যদিও মৃতদের পরিচয় জানাননি সরকারী এই কর্মকর্তা।

ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে দাবানলের মতো। যা সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ বাহিনী। টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে ওকল্যান্ডের পুলিশ বিভাগ দাবি করেছে বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভঙ্গ করেছে। ৪০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করার কথা জানিয়েছে তারা।

তবে এর বিপরীত চিত্রও দেখা গিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর ফেডারেল পুলিশের চালানো দমন-পীড়নকে ‘লজ্জাজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র মুরিয়েল বৌসের। টুইটারে পোস্টে মুরিয়েল বলেন, ‘আমি সন্ধ্যা ৭টা থেকে কারফিউ জারি করেছিলাম। কিন্তু তার ২৫ মিনিট আগেই কোনোরকমের উসকানি ছাড়াই হোয়াইট হাউসের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভরতদের ওপর পুলিশ অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ওয়াশিংটন পুলিশ বিভাগের কাজকে কঠিন করে তুলবে। এটা লজ্জাজনক।’

বিচারের দাবীতে চার প্রেসিডেন্ট

কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদ করেছেন আমেরিকার চারজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের পূর্ববর্তী বারাক ওবামা, জিমি কার্টার, বিল ক্লিনটন ও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশও আছেন এই তালিকায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দেশজুড়ে আন্দোলনকারীদের ব্যক্তিগতভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রাক্তন আরেক নন্দিত প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ক্ষমতা, সুবিধাজনক অবস্থা আর নৈতিক সচেতনতা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তার বিবৃতিতে জানিয়েছেন, জর্জ ফ্লয়েডের মতো মৃত্যু কারও কাম্য নয়। সত্যি কথা হল, সাদা চামড়ার হলে এমন মৃত্যুর সম্ভাবনা কম। একইভাবে নিন্দা জানিয়েছেন প্রাক্তন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি লরা বুশ। সেইসঙ্গে আমেরিকায় পুলিশের দমনপীড়নের ব্যাপারেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে যাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের সমর্থনও দিয়েছেন বুশ দম্পতি।

ফ্লয়েডের পরিবারের পাশে আমেরিকা

নিহত জর্জ ফ্লয়েডের শিশু সন্তানের লেখাপড়া এবং ফ্লয়েডের কফিন মিনিয়াপলিস থেকে নর্থ ক্যারলাইনা হয়ে টেক্সাসের হিউস্টনে নেয়ার খরচ সংগ্রহ করার লক্ষ্যে তহবিল গঠনে আহ্বান করা হয় তার মৃত্যুর পরপরই। ফ্লয়েড স্মরণে গঠিত সেই তহবিলে জমা পড়েছে ১৩ মিলিয়ন ডলার। মায়ের পাশে শেষ শয্যায় যাবার পর এখন তহবিলের বাকি অর্থ পাবে ফ্লয়েডের পরিবার।

‘অফিসিয়াল জর্জ ফ্লয়েড মেমরিয়্যাল ফান্ড’ সংগ্রহের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিভিন্ন দেশের ৫ লক্ষাধিক মানুষ অনুদান প্রদান করেছেন। যদিও শুরুতে কেবলমাত্র দেড় মিলিয়ন ডলার সংগ্রহে এ তহবিল আহ্বান করা হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত অনেক বেশিই সাহায্য জমা পড়েছে ফ্লয়েডের পরিবারের জন্য।

প্রতিবাদমুখর সারাবিশ্ব

কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড এর হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে ইউরোপের মাটিতেও। লন্ডনে কয়েকদিন যাবত বিক্ষোভ হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ।

যুক্তরাজ্যের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতিবাদ করার অধিকার হচ্ছে গণতন্ত্রের মূল অঙ্গ। তবে প্রতিবাদকারীদের করোনাভাইরাস আইন মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা জানান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, জর্জ ফ্লয়েডের কি পরিনতি হয়েছিলো, তা দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এছাড়াও নিজের বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, জনগনের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে, তবে তাতে শান্তিপুর্ণভাবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহবান জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে কানাডায়  বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কানাডার পার্লামেন্টের সামনে ‘নো জাস্টিস = নো পিস’ নামক সমাবেশে ট্র‌ুডো একটি কালো মাস্ক পরে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় তাঁর সঙ্গে দেহরক্ষীরাও ছিলেন। তবে প্রতিবাদ সভায় কোনো বক্তব্য রাখেননি ট্র‌ুডো। তবে তার এই সংহতি প্রকাশকেই বড় অর্জন বলে মানছেন বিক্ষোভকারী জনতা।

প্রতিবাদে মুখর ক্রীড়াঙ্গন

ফ্লয়েডের  হত্যার প্রতিবাদে মাঠের মধ্যখানে গোল হয়ে হাঁটু গেড়ে বসেন ইংলিশ ফুটবল ক্লাব লিভারপুলের অনুশীলনে থাকা ২৯ সদস্যের সবাই

‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস’ তথা ‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও মূল্যবান’ হ্যাশট্যাগে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে সবখানে। এতে সমর্থন প্রকাশ করেছে অনেক ফুটবল ক্লাব ও ক্রীড়াব্যক্তিত্বরা। ফ্লয়েডের  হত্যার প্রতিবাদের জন্য অভিনব এক পথই বেছে নিয়েছে ইংলিশ ফুটবল ক্লাব লিভারপুল।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করা অনুশীলনের মধ্যেই ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদ করেছেন মোহামেদ সালাহ, সাদিও মানেরা। মাঠের মধ্যখানে গোল হয়ে হাঁটু গেড়ে বসেন অনুশীলনে থাকা ২৯ সদস্যের সবাই।

তালিকায় নাম লেখালেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি এবং তার স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো। ব্ল্যাকআউট করে নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানালেন তারা। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে কোনো ছবি পোস্ট করেননি মেসি। সেখানে দেখান শুধু কালো রঙ। সঙ্গে লেখেন– #বিএলএম। অর্থাৎ ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার। আরও লেখেন– ব্ল্যাক আউট টুয়েসডে। মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লাও একই পন্থা অবলম্বন করেন।

প্রতিবাদ করেছেন জার্মান বুন্দেসলীগার অনেক ক্লাব ও খেলোয়াড়। লিভারপুলের অভিনব প্রতিবাদের পরে চেলসির প্রত্যেক ফুটবলার তাদের অনুশীলনে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন। এমন ভাবে তারা বসেছিলেন যাতে ইংরেজি ‘এইচ’-এর মতো অক্ষর তৈরি হয়। ‘এইচ’ অর্থাৎ ‘হিউম্যান’। মানবিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আরেক ক্লাব নিউক্যাসেল ইউনাইটেডও।

৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ধরে তিনি ছিলেন অসহায় একজন মানুষ। তার আগে নিতান্ত একজন আফ্রো আমেরিকান। এখন জর্জ ফ্লয়েড মানেই মানবতার মহাকাব্য। নোয়াম চমস্কিদের কাছে এই বিক্ষোভ আরব বসন্তের মতোই ডেকে আনবে ‘আমেরিকান স্প্রিং’। জীবিত জর্জ ফ্লয়েডের শেষ ৮ মিনিট তাই নিছক শেষ নিঃশ্বাস নয়, বরং বর্ণবাদ মুক্তির বড় সনদ।

লেখক- জুবায়ের আহম্মেদ 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *