বিশ্ব

মার্কিন সরকার কর্তৃক হত্যার শিকার আলোচিত ১০ চরিত্র1 min read

মে ২১, ২০১৯ 7 min read

author:

মার্কিন সরকার কর্তৃক হত্যার শিকার আলোচিত ১০ চরিত্র1 min read

Reading Time: 7 minutes

১৯৪০ এর দশক থেকে শুরু করে অদ্যাবধি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তিবর্গের গুপ্তহত্যা  ঘটিয়েছে। এই নোংরা কাজটি তারা করেছে কখনও তাদের নিজস্ব শক্তি ব্যবহার করে আবার কখনও স্থানীয় সামরিক বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে। আজ সেরকমই বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ১০ নেতার হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোকপাত করবো।

১০.  ওসামা বিন লাদেন

আল কায়দার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন; Image Source: defencetalk.com

ওসামা বিন লাদেন ছিলেন ‘আল কায়েদা’র প্রতিষ্ঠাতা প্রধান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া দুনিয়া কাঁপানো সন্ত্রাসী হামলা ৯/১১ এর মূল হোতা। ঐ হামলায় প্রায় ৩০০ জন লোকের প্রাণহানি ঘটে, আহত হয় আরও ৫০০০ এর মতো। ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এফবিআই এর মূল টার্গেট ছিল বিন লাদেনকে আটক করা। ওসামা বিন লাদেনের সন্ধান দেওয়ার বিনিময়ে এফবিআই ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

প্রায় ১০ বছর  ওসামা বিন লাদেন আত্মগোপন করে ছিলেন এবং গোপনে তরুণ যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জিহাদী হিসেবে তৈরি করছিলেন। তাদেরকে নিয়ে তিনি আক্রমণের নতুন নতুন ছক আঁকেন। এদিকে সিআইএ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো লাদেনের গোপন আস্তানা তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে। অবশেষে ২০১০ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তানের এবোটাবাদের একটি বাড়িতে ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়।

এরপর সিআইএ’র গোয়েন্দারা কয়েক মাস ধরে বিন লাদেনের অবস্থানরত বাড়িটি কড়া নজরদারিতে রাখে। বাড়ির ভিতরের কার্যক্রম বুঝার জন্য আকাশ থেকে ড্রোনের সাহায্যে ছবি তোলে। ২০১১ সালের ২ মে নৌবাহিনীর একটি টিম বাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটায়। তারপর বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে লাদেনকে চিহ্নিত করে তার বুকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর ওসামা বিন লাদেনের লাশ আফগানিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ততকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জাতির উদ্দেশ্যে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, “সুবিচার সম্পন্ন হয়েছে”।

৯. চে গুয়েভারা

সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন চে গুয়েভারা

আধুনিক তরুণ সমাজে যে মানুষটির ছবি সবচেয়ে বেশি সমাদৃত তিনি চে গুয়েভারা। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম তাকে আইকন মানে। তাইতো এখনও ব্যাগে, মোবাইলে, টি-শার্টে, পোস্টারে তার ছবি দেখা যায়।

কেন চে গুয়েভারা তরুণ সমাজের আদর্শস্বরূপ? কারণ তিনি সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আর্জেন্টাইন বংশোদ্ভূত তরুণ এই নেতা ১৯৫০ এর দশকের শেষ দিকে কিউবার সাম্যবাদী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর দিকে সাহায্যের হাত বাড়ান। দুই অবিসংবাদিত নেতা মিলে কিউবার ততকালীন স্বৈরশাসক ফুলজেনসিও বাতিস্তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। ফিদেল কাস্ত্রো কিউবার ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং কিউবায় সাম্যবাদের বিপ্লব ঘটান। সেসময় চে গুয়েভারা কিউবার শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬৫ সালে কিউবার ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে চে গুয়েভারা বলিভিয়ায় চলে যান। সেখানে ১৯৬৬ সালে বলিভিয়ানদেরকে তাদের সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য উৎসাহ দেন। তিনি কিছুটা সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারেন নি। মার্কিন গ্রীন ব্যারেট ও সিআইএ’র সহায়তায় বলিভিয়ান সেনাবাহিনী চে গুয়েভারাকে বন্দী করে এবং হত্যা করে। ১৯৯৭ সালে চে গুয়েভারার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয় এবং কিউবায় ফিরিয়ে নিয়ে পুনরায় দাফন করা হয়।

৮. ড্যাগ হ্যামারসকশোল্ড

বিমান দুর্ঘটনার শিকার হন ড্যাগ হ্যামারসকশোল্ড

১৯৬১ সালে রোডেশিয়ার আকাশে বিমান দুর্ঘটনার কী এমন কারণ ছিল যার জন্য জাতিসংঘের সাবেক সচিব ও সুইডিশ কুটনীতিক ড্যাগ হ্যামারসকশোল্ডকে প্রাণ দিতে হয়েছিল? কেউ কেউ ধরে নিয়েছিল এটা পাইলটের ভুল আবার কেউ ভেবেছিল এটা নিছক দুর্ঘটনা। প্রায় অর্ধশত বছর পর্যন্ত এ বিমান দুর্ঘটনার মূল কারণ আড়ালেই ছিল।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘ সেই বিমান বিধ্বস্ততা নিয়ে নতুন তদন্ত প্রকাশ করে, যা নতুন এক সন্দেহের জন্ম দেয়। জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, সেটি দুর্ঘটনা ছিল না, ছিল সম্পূর্ণ  পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড। কারণ হ্যামারসকশোল্ড ঐ ফ্লাইটে কঙ্গো যাচ্ছিলেন, সেখানে কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ময়েস টিসম্বের সাথে গোপন বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। যেখানে জরুরি যুদ্ধবিরতি ও গৃহযুদ্ধ বন্ধ করা নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল।

এ শান্তি চুক্তি বন্ধ করতে পেরে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের। কারণ কঙ্গো ছিল খনিজ সম্পদ, সোনা, হীরা ও তেলে ভরপুর একটি রাষ্ট্র। হ্যামারসকশোল্ডের সাথে শান্তি চুক্তি হলে এ সমস্ত সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের হাতছাড়া হয়ে যেত। যুক্তরাষ্ট্র এত বড় ক্ষতিটা হজম করতে পারে নি। তাই মার্কিন সংস্থা এনএসএ হ্যামারসক শোল্ডকে বহনকারী বিমানের পাইলটের কাছ থেকে নেওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে রেডিও ইন্টারসেপ্টের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড চালায়।

৭. জেনারেল রাফায়েল ট্রুজিলো

জেনারেল রাফায়েল ট্রুজিলো

প্রায় ৩০ বছর ধরে ডোমিনিকান রিপাবলিককে শাসন করে এসেছেন এক নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক– জেনারেল রাফায়েল ট্রুজিলো। ধারণা করা হয় তিনি প্রায় ৫০,০০০ লোকের মৃত্যুর জন্য দায়ী। ট্রুজিলো বোধ হয় ভুলে গিয়েছিলেন যে, এত অত্যাচারের ফল খুব ভালো হবে না। ১৯৬১ সালের ৩০ মে গুলির আঘাতে তিনি নিহত হন। হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল। এ চক্রান্তের মূল নকশাকারীরা হলেন জেনারেল জুয়ান টমাস, অ্যান্টনিয়া ডি লা মাযা, অ্যামাডো গার্সিয়া এবং জেনারেল অ্যান্টনিও ব্যারেরা।

পরবর্তীতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ থেকে বলা হয়, ট্রুজিলো হত্যাকান্ড চালানোর জন্য তারা ৩টি কার্বাইন অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। হত্যার কয়েকদিনের মধ্যে ট্রুজিলোর ছেলে রামফিস দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং বাবার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনে মৃত্যুদন্ড দেন।

৬. আবু আল- খায়ের আল মাসরী

ওসামা বিন লাদেনের সাথে আল-কায়েদার দ্বিতীয় কমান্ডার আবু আল-খায়ের আল মাসরী

২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি আল-কায়েদার দ্বিতীয় কমান্ডার আবু আল-খায়ের আল মাসরীকে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলার মাধ্যমে হত্যা করে। আল মাসরী তখন উত্তর সিরিয়ায় অবস্থান করছিলেন। তিনি ছিলেন ওসামা বিন লাদেনের জামাতা। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি বিশ্ব জিহাদী সংস্থার দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। আল মাসরী আল-কায়েদার সাথে অন্যান্য জঙ্গি সংঘটনগুলোর সমন্বয় করতেন।

ধারণা করা হয়, ১৯৯৮ সালে তানজানিয়া ও কেনিয়ায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে যে বোমা হামলা সংঘটিত হয় তার জন্য দায়ী আল মাসরী। ঐ হামলায় প্রায় ২০০ জন সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার বা আল-কায়েদা, কেউ আল মাসরীর মৃত্যু নিশ্চিত করে নি। তবে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার অফিসিয়াল প্রতিবেদক জানায়, ড্রোন হামলায় আল মাসরীর মৃত্যু হয়। ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর আবু আল-খায়ের আল মাসরীর মৃত্যুই ছিল আল-কায়েদার সবচেয়ে বড় ক্ষতি।

৫. নো দিন দিয়েম

দক্ষিণ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট নো দিন দিয়েম

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সহায়তায় ডুয়াং ভান মিন দক্ষিণ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট নো দিন দিয়েমকে হত্যা করেছিলেন। তখন ছিল ১৯৬৩ সাল। দিয়েমের অপরাধমূলক কাজকর্মের জন্য তার মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষ খুব খুশি হয়েছিল বটে। কিন্তু তার মৃত্যুর পর দেশটিতে প্রচন্ড রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। সেই সুযোগে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরিভাবে ভিয়েতনামের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। উদ্দেশ্য একটাই— কমিউনিস্টদের ফাঁদে ফেলে ভিয়েতনামে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা প্রতিহত করা।

৪. পেট্রিস লুমাম্বা

বৈধভাবে নির্বাচিত কঙ্গোর প্রথম প্রধানমন্ত্রী পেট্রিস লুমাম্বা ।

পেট্রিস লুমাম্বা ছিলেন বৈধভাবে নির্বাচিত কঙ্গোর প্রথম প্রধানমন্ত্রী। বেলজিয়ামের শোষণ হতে কঙ্গোকে মুক্ত করার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল পেট্রিস লুমাম্বার। ১৯৬০ সালে আফ্রিকার এ দেশটি স্বাধীন হওয়ার অল্প কিছুদিন পরই পরিস্থিতি লুমাম্বার প্রতিকূলে যেতে থাকে। উপায় না দেখে অসহায় লুমাম্বা সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা চান। আফ্রিকার একটি দেশ যদি সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে চলে যায় তাহলে সেটা হবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপদস্বরূপ। সেটা ভেবে যুক্তরাষ্ট্রের ততকালীন প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ার ক্ষুব্ধ হলেন। তিনি সিআইএ’র পরিচালককে নির্দেশ দিলেন লুমাম্বাকে যেন পথ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। সিআইএ নির্দেশ পাওয়ামাত্র হত্যার পরিকল্পনা শুরু করল। বিভিন্নভাবে সিআইএ প্রেসিডেন্ট লুমাম্বাকে হত্যা করার চেষ্টা করে আসছিল। এজন্য তারা লুমাম্বার রুমালে বিষও মিশিয়েছিল।

অবশেষে ১৯৬১ সালের জানুয়ারি মাসে একটি ফায়ারিং স্কোয়াড লুমাম্বাকে হত্যা করে। সিআইএ যে লুমাম্বা হত্যার পেছনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল তা ২০১৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র অস্বীকার করে আসছিল।

৩. ইমাদ মুঘনিয়্যাহ

হিজবুল্লাহর নেতা ইমাদ মুঘনিয়্যাহ

২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখের সন্ধ্যাবেলা। সন্ত্রাসী সংঘটন হিজবুল্লাহর নেতা ইমাদ মুঘনিয়্যাহ তার রাতের খাবারের পর নিজ গৃহে পায়চারি করছেন। দামেস্কাস রাস্তা ছিল তখন নীরব, শান্ত। ঠিক সেই সময় ইমাদের বাড়ির অদূরে দামেস্ক শহর থেকে সিআইএ’র একটি গ্রুপ তাকে পর্যবেক্ষণ করছিল। তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যখনই তার পার্ক করা গাড়িতে উঠলেন ঠিক তখনই তার গাড়ির টায়ারে আগে থেকে জুড়ে দেওয়া বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। ঘটনাস্থলেই ইমাদ মুঘনিয়্যাহর মৃত্যু হয়। বোমাটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল তেল আবিব থেকে। সেখান থেকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা বাহিনী দামেস্কে অবস্থিত সিআইএ গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করছিল।

সিআইএ’র একজন সাবেক কর্মকর্তা জানান, ইমাদ হত্যায় ব্যবহৃত বোমাটি নর্থ ক্যারোলিনায় পরীক্ষা করে নেওয়া হয়েছিল যেন এটি ঠিকঠাক কাজ করে। তারপর তারা কৌশলে এটাকে ইমাদ মুঘনিয়্যাহর গাড়িতে লাগিয়ে দেয়। কিন্তু প্রশ্ন জাগতে পারে যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল কেন একসঙ্গে এ হত্যার পরিকল্পনা করল। উদ্দেশ্য তো অবশ্যই আছে।

প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, বেশ কয়েকটি হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী হামলার সাথে ইমাদ মুঘনিয়্যাহ জড়িত ছিলেন। যেগুলোর মধ্যে ছিল লেবাননের বৈরুতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলা এবং আর্জেন্টিনায় ইসরায়েলি দূতাবাসে সন্ত্রাসী হামলা।

২. সালভাদর আলেন্দে

চিলির প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন ১৯৭০ সালে সিআইএ কে এটা পরিস্কার করে জানিয়ে দেন যে, চিলির প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দে তাদের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। তাই তিনি সিআইএ কে আলেন্দের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর জন্য প্ররোচিত করলেন।

১৯৭৩ সালে সিআইএ’র সহায়তায় চিলির সেনাবাহিনী আলেন্দে সরকারের বিরুদ্ধে এক অভ্যুত্থান চালায়। জীবন বাঁচাতে তিনি সান্টিয়াগোতে তার সরকারি বাসভবনে যান। কিন্তু সেখানেও বোমা বর্ষিত হয়। তখন আলেন্দে নিজেই নিজেকে গুলি করে আত্নহত্যা করেন।

অ্যালেনডির মৃত্যুর পর চিলির ক্ষমতায় বসেন এক নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক অগাস্টো পিনোচেট। তার শাসনামলে প্রায় ৩০০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল আর প্রায় ৮০০০০ লোকের ঠাঁই হয়েছিল বিভিন্ন ক্যাম্পে।

১. রেনে স্নেইডার

চিলির আর্মির কমান্ডার ইন চিফ রেনে স্নেইডার

১৯৭০ সালের চিলির নির্বাচনের পর সালভাদর একাই সিআইএ পরিচালিত হামলার শিকার ছিলেন না। চিলির আর্মির কমান্ডার ইন চিফ রেনে স্নেইডারও এদের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। সিআইএ চিলির নির্বাচনের কয়েকদিনের মধ্যেই স্নেইডারকে কিডন্যাপ করার জন্য ফাঁদ পাতে।

নিরপেক্ষ রেনে স্নেইডারের সাথে তার নিজস্ব বাহিনীর কিছু অফিসারের মতবিরোধ ছিল। সে সুযোগে সিআইএ চিলির কিছু আর্মি অফিসারকে নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করে যার নেতৃত্ব দেন জেনারেল কেমিলো ভ্যালেনজুয়েলা।

কিন্তু পরপর দুই বার তাদের পরিকল্পনা বিফলে যায়। তাই তারা স্নেইডারের অফিসিয়াল গাড়িতে হামলা করে। ঘটনাটি ঘটে চিলির রাজধানী সান্টিয়াগোতে। স্নেইডার নিজেকে বাঁচানোর জন্য ফাঁকা গুলি করে। আর তখনই প্রতিপক্ষের গুলিতে তিনি নিহত হন।

পরবর্তীতে চিলির সামরিক আদালত এটা বলেন যে, অফিসার রেনে স্নেইডারের মৃত্যু দু’পক্ষের গুলাগুলিতে হয় যার একপক্ষে ছিল জেনারেল রবার্টো আরবানো আর অপরপক্ষে সিআইএ’র সহায়তায় জেনারেল ভ্যালেনজুয়েলা।

লেখক- নিশাত সুলতানা 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *