বিশ্ব

২০২০ মার্কিন নির্বাচন আবারও জিতবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?1 min read

এপ্রিল ১৯, ২০১৯ 3 min read

author:

২০২০ মার্কিন নির্বাচন আবারও জিতবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?1 min read

Reading Time: 3 minutes

দরজায় কড়া নাড়ার অপেক্ষায় আছে ২০২০ সাল, এখনো আরো অর্ধেক বছর বাকি। তবে সে অপেক্ষায় থাকছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হাঁক-ডাক। এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে তোরজোড়, চলছে নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রচার প্রচারণার জল্পনা-কল্পনা। ২০২০ সালের এই নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের পক্ষ হয়ে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প লড়তে যাচ্ছেন, সেটা মোটামুটি ভাবে নিশ্চিতই বলা চলে।  তবে অপরপক্ষের প্রধান দল ডেমোক্রেটিকের হয়ে কে লড়তে যাচ্ছেন নির্বাচন, সে ব্যাপারটি এখনো ধোঁয়াশাই হয়ে আছে।

আগামী নির্বাচনেও কি ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হতে যাচ্ছেন? সেটা হয়তো সময়ই বলে দিবে, তবে একদম শুরু থেকেই যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা তেমন একটা নেই সেটা বেশ ভালোভাবেই বুঝা যাচ্ছে। ট্রাম্প জয়ী হতে যাচ্ছেন কি না সেটা অনেকটাই নির্ভর করছেন বিরোধী দলের হয়ে যারা নির্বাচন করতে যাচ্ছেন তাদের জনপ্রিয়তার উপর। এক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুটা আশ্বস্ত হতেই পারেন, কেননা হিলারি ক্লিনটন সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন না। এই সম্পর্কে হিলারি ক্লিনটন বিবিসিকে জানিয়েছেন তার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার কথা। তবে এর সাথে সাথে তিনি এ সম্পর্কেও নিশ্চিত করেছেন যে, নিজে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।

হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না সেটা কিছুটা নিশ্চিত, তাহলে কে লড়তে যাচ্ছেন ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে এই নির্বাচন? এই পদে আগ্রহী প্রার্থীর সংখ্যা ইতোমধ্যে প্রায় আধা ডজন পার করেছে। প্রাথমিক ভাবে ভাবা হচ্ছিল বাছাই পর্বে পূর্ববর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের মধ্যেই ডেমোক্রেটিক দলের প্রধান হওয়ার ব্যাপারে মোকাবেলা হতে যাচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে শ্যারন ব্রাউন, এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কমলা হ্যারিস সমান তালে এগিয়ে এসেছেন প্রাথমিক বাছাই পর্বে অংশগ্রহণ করতে।

অপরদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ চলছে জোর তালে এবং বলা হচ্ছে যে তিনি ইতোমধ্যেই প্রায়  ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে ফেলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিং মেট কে হতে যাচ্ছে সে নিয়েও চলছে বেশ টানা পোড়ন। কেউ কেউ বলছেন, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইককে রানিং মেট হিসেবে বাছাই না করার সম্ভাবনা বেশ জোরালো। কেননা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি এই ভাইস প্রেসিডেন্ট তেমন একটা আনুগত্য প্রকাশ করেনা বলেই কানাঘুষা শোনা যায়। অপর এক মহল থেকে বলা হচ্ছে যে, নিকি হেইলি হতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিং মেট। নিকি হেইলি জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ করে আসছেন, তবে হয়তো রানিং মেট হওয়ার জন্য তাকে এই পদ থেকে ইস্তফা দিতে হতে পারে বলেও অনেকে মনে করেন। 

সাধারণত, যুক্তরাষ্ট্রে যদি কোন প্রেসিডেন্ট পুনর্বার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যান, তাহলে কেউ তেমন একটা বিরোধিতা করেন না। তবে ২০২০ সালের এই নির্বাচনে কিছুটা ব্যতিক্রম কিছুও দেখতে পারে বিশ্ব। কেননা, এরিজোনার সাবেক সিনেটর জেফ সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন যে, তিনি হয়তো ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রাথমিক বাছাই প্রতিযোগিতায় বিরোধিতা করতে পারেন। তবে তিনিই এই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিবেন সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হয়ে তেমন কিছু একটা বলা যাচ্ছে না।  তিনি বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থিতার ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ থাকা উচিৎ, একচেটিয়া ভাবে কেউ নির্বাচন অংশগ্রহণ কড়া উচিৎ না। তার করা এই বক্তব্যের পরেই কানাঘুষা শুরু হয় যে, তিনি নিজেই হয়ত এই চ্যালেঞ্জ করতে যাচ্ছেন।

অপরদিকে বিরোধী দলের প্রধান হওয়ার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনের কথা বেশ জোরালো ভাবে শোনা যাচ্ছে। কেননা, প্রাথমিক ভাবে নির্বাচনের বাছাই পর্বের জন্য তিনি হয়ত ইতোমধ্যেই প্রচার প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় এক বক্তব্যে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেতনের যে সর্বনিম্ন পরিমাণ রয়েছে, সেটা এমন এক পরিমাণে থাকা উচিৎ যে পরিমাণ অর্থ দিয়ে বাবা অথবা মায়েরা তাদের সন্তানদের সুন্দর, স্বাভাবিক ও সচ্ছল ভাবে বড় করে তুলতে পারেন।  এলিজাবেথ ওয়ারেনের এই ধরনের মন্তব্যকে অনেকেই নির্বাচনী প্রচারণা বলে ধারণা করছেন। 

এছাড়া, প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী হিসেবে জো বাইডেনও বেশ পরিচিত মুখ। তবে তার সম্ভাবনার পরিমাণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কেউ তেমন একটা নিশ্চিত নন। কেননা, বাইডেন শক্তিশালী পদপ্রার্থী না, তবে জনমত জরিপে তিনি অন্যান্য অনেকের থেকেই বেশ এগিয়ে আছেন। তিনি ত্রিশ, পঁয়ত্রিশ এবং চল্লিশ শতাংশ নাম্বার পেয়েছেন এক জনমত জরিপে। তবে এই নাম্বার গতবার মার্কিন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হিলারি ক্লিনটন থেকে অনেক অংশেই কম। এ সম্পর্কে নির্বাচন বিশ্লেষক জিম কেসলার বলেন, গত বছর যেমন হিলারি ক্লিনটন বিপুল পরিমাণে জনমত নিয়ে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এবার একই ধরনের পরিস্থিতি নাও হতে পারে। এবারের প্রতিদ্বন্দ্বীটা হবে বেশ শক্ত এবং তীব্র।

অপরদিকে, রিপাবলিকানদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোন বিকল্প নেই বলেই অনেকে মনে করেন। কেননা, যেখানে হিলারি ক্লিনটনের মত জনপ্রিয় একজনকে হারিয়ে গতবার নির্বাচনে জয়ী লাভ করেছেন সেখানে ২০২০ সালে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মত তেমন শক্ত প্রতিপক্ষ এখন পর্যন্ত কেউ হয়ে উঠতে পারেন নি। এদিকে গত বছর জয়লাভ করার পরে প্রাথমিক অবস্থায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা তেমন একটা না থাকলেও পরে তিনি বিশ্ব মিডিয়ায় অন্যতম একজন আলোচিত ব্যক্তি হয়ে উঠেন, তাই রিপাবলিকান দলে তাকে চ্যালেঞ্জ করে টিকে থাকার মত কেউ নেই বললেই চলে।     

লেখক- ইকবাল মাহমুদ 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *