ইতিহাস বিশ্ব

১৯৯০ থেকে ২০১৫ সময়কালের ভয়াবহ যত ভূমিকম্প 1 min read

জানুয়ারি ১১, ২০২০ 3 min read

author:

১৯৯০ থেকে ২০১৫ সময়কালের ভয়াবহ যত ভূমিকম্প 1 min read

Reading Time: 3 minutes

ভূমিকম্প হলো প্রকৃতির অন্যতম ধ্বংসাত্মক শক্তি যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে তার তান্ডব নৃত্যের মাধ্যমে অপূরণীয়  ক্ষতির কারণ হতে পারে ভূমিকম্পের ফলে ধ্বংসের পরিমাণ, মৃতের সংখ্যা কম্পনের মাত্রার ভিত্তিতে স্মরণকালের ভয়াবহ কিছু ভূমিকম্প আজ আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিবো  

সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়া (২০০৪)

রিকটার স্কেলে ৯. থেকে .  মাত্রার এই ভূমিকম্পটি ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ভারত মহাসাগরে আঘাত হেনেছিলো। এই ভূমিকম্পের কারণে পরবর্তীতে ভারত সাগরের উপকূল রেখাগুলোতে ৫টির বেশি সুনামি আঘাত হানে এটি সিজমোগ্রাফে ধারণকৃত তৃতীয় বৃহত্তম ভূমিকম্প বিজ্ঞানীরা এই ভূমিকম্পের নামকরণ করেছেনসুমাত্রাআন্দামান ভূমিকম্প৷ থেকে ১০ মিনিট স্থায়িত্বের এই ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামিতে বিশ্বের ১৪টি দেশে প্রায় ১ লাখ থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে, সেই সাথে বিলিয়ন ডলারের বেশি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়

পোর্ট-অব-প্রিন্স, হাইতি (২০১০)

১২ ডিসেম্বর, ২০১০ সালে . মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল হাইতির রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে এই ভূমিকম্পে আনুমানিক লাখ ৫০ হাজার ঘর লাখ বাণিজ্যিক ভবন ধসে পড়েছিলো  ভয়াবহ এই ভুমিকম্পে হাইতিতে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষ নিহত ও  প্রায় ৩ লাখ মানুষ আহত হয়েছিলো। 

২০১১ এর ভুমিকম্পে জাপানের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে; Photo Credit: nytimes.com

টোহোকু, জাপান (২০১১)

২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের টোহুকু উপকূলে .০৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে যা জাপানে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলোর একটি এই ভূমিকম্পটি বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি বৃহত্তম ভূমিকম্পগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয় টোহুকু থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে ছিলো ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল 

এই ভূমিকম্প এবং তার ফলে সৃষ্ট সুনামিতে মৃতের সংখ্যা ছিলো ১৫ হাজার ৮৭৮ জন, আহত হয়েছিলেন প্রায় ৬ হাজার জন। এছাড়া জাপানের ২০ টি প্রদেশে ২১৭৩ জন নিঁখোঁজ ছিলেন এই ভূমিকম্পে বহু এলাকায় কাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি, রাস্তা রেলপথের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ১ লাখ ২৯ হাজার ২২২ টি ভবন ধসে পড়েছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান এই ভূমিকম্পের কারণে সবচেয়ে কঠিন সংকটের সম্মুখীন হয়েছিলো। এই ভুমিকম্পে জাপানের চারটি বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়

সিচুয়ান, চীন (২০০৮)

চীনের সিচুয়ানে ২০০৮ সালের ১২ মে . মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে এই ভূমিকম্পটি এতোই তীব্র ছিলো যে এর প্রভাবে বেইজিং এবং সাংহাইয়ের মতো প্রতিবেশী প্রদেশগুলোও কেঁপে উঠেছিলো সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে এই ভূমিকম্পে সিচুয়ান প্রদেশের ৬৮ হাজার ৬৩৬ জন লোকের প্রাণহানি ঘটে৷  ১৮ হাজার ২২২ জন নিঁখোজ হন এবং ৩ লাখ ৭৪ হাজার ১৭৬ জন আহত হন

১৯৭৬ সালের তাংশান ভূমিকম্পের পর এটি চীনের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত হয় কারণ, এই ভূমিকম্পে প্রায় ১৫ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে চীন সরকার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোকে পুনর্নির্মাণের জন্য ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ১৪৬. বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিলো

কাশ্মীর, পাকিস্তান (২০০৫)

অক্টোবর, ২০০৫ সালে . মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্পের সাক্ষী হয় পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীর অঞ্চল এই বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজার এবং আহত হয়েছিল ৬৯ হাজার জন এই ভূমিকম্প জম্বুতে ১৪ হাজার মানুষ নিহত হওয়ার  পাশাপাশি আশেপাশের অনেক অঞ্চল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলো। এই ভুমিকম্পে তাজিকিস্তান এবং পশ্চিম চীনেও কম্পন অনুভূত হয়েছিলো 

প্রকৃতির কাছে কতই না অসহায় মানুষ; Photo Source: theatlantic.com

নেপাল (২০১৫)

২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল নেপালের রাজধানী কাঠমন্ডু এবং পোখরা শহরে আঘাত হানে . মাত্রার এই ভূমিকম্পটি এর ধ্বংসযজ্ঞে কমপক্ষে ৯ হাজার জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ২২ হাজার জন আহত হয়৷ এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পের ফলে কাঠমন্ডুর নিকটে ধরহার টাওয়ার, মন্দির এবং বিশ্বনন্দিত বহু ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা ধ্বংস হয়েছিল

ইজমিট, তুরস্ক (১৯৯০)

১৯৯০ সালের ১৭ আগস্ট  তুরস্কে . মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিলো যার স্থায়িত্ব ছিলো মাত্র . সেকেন্ড স্থায়ীত্ব অপেক্ষাকৃত কম হলেও এই ভূমিকম্পে ইজমিট শহর ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ছিলো ১৭ হাজার ১২৭ জন আহত হয়েছিলো ৪৩ হাজার ৯৫৯ জন

১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, ভূমিকম্পের ফলে দুর্বল কাঠামোর ১ লাখ ২০ হাজার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো এতে ,০০০ টি বিল্ডিং ধসে  পড়ে এবং ,০০০ অন্যান্য ভবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফলে ৩ লাখের বেশি মানুষকে গৃহহীন হয়ে পড়ে  

লেখক- পূজা ধর 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *