বাংলাদেশ

ভাগনে অপহরণের তদন্ত নিজেই করবেন সোহেল তাজ1 min read

জুন ১৯, ২০১৯ 2 min read

author:

ভাগনে অপহরণের তদন্ত নিজেই করবেন সোহেল তাজ1 min read

Reading Time: 2 minutes

গত ৯ জুন সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে নিখোঁজ হন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগনে  ইফতেখার আলম সৌরভ। এখন পর্যন্ত ভাগনে সৌরভের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে নিজেই তদন্তে নামার ঘোষণা দিয়েছেন সোহেল তাজ। ফেসবুকে তিনি লেখেন “সৌরভ ফিরে না আসা পর্যন্ত পুলিশের উদ্ধার কাজে সহযোগিতার অংশ হিসেবে আমি নিজেই তদন্তের কাজে নামছি- আপনাদেরকে FB live এর মাধ্যমে আপডেট করব।”

তদন্তের প্রথম ধাপ হিসেবে তিনি যেখান থেকে তাঁর ভাগনে সৌরভ অপহৃত হয়েছেন, সেখানে যাবেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের বিবৃতি নেবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘কার কী পরিচয় সেটা মুখ্য বিষয় নয়, আমার কী পরিচয় তাও মুখ্য বিষয় নয়। এখানে আইনের শাসনে রাষ্ট্র চলবে। ন্যায়বিচার সুবিচারের রাষ্ট্রে এ রকমটা হওয়া বা এমন পরিণতির শিকার হওয়া কাম্য নয়।’

এর আগে সোমবার সৌরভের বাবা ইদ্রিস আলী ও মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমানকে নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন সোহেল তাজ। চট্টগ্রামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিরোধের জের ধরেই এই অপহরণ ঘটেছে বলে জানান তারা।

গত ৯ জুন থেকে নিখোঁজ সোহেল তাজের ভাগনে ইফতেখার আলম সৌরভ; Image Source: Facebook

সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমানের লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায় ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সালেহ আজাদ চৌধুরীর মেয়ে সওদার সাথে সৌরভের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে পর্দাশীল পরিবারের মেয়ে সওদা সৌরভকে জানায় তাদের সম্পর্ক অক্ষত রাখতে হলে প্রাথমিক পর্যায়ে টেলিফোনে বিবাহ সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু এর মধ্যে সওদার বাবা তার অমতে অন্য জায়গায় তার বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু ২০১৮ সালের এপ্রিল-মে মাসের কোনো এক সময়ে সেই বিয়ে ভেঙ্গে যায়। আর এজন্য মেয়ের বাবা সালেহ আজাদ সৌরভকে দোষারোপ করেন।

আরজুমান তার বক্তব্যে আরও জানান, ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি উত্তরা র‍্যাব হেড কোয়ার্টারে সৌরভকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ভয় দেখিয়ে সওদার সাথে যোগাযোগ না রাখার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। এর চার দিন পর বনানী থানার ওসি সৌরভকে ফোন করে থানায় ডেকে নেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সৌরভকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেবার হুমকি দেন। সেই ব্যবসায়ীর মেয়ের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না করলে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেন সেই ওসি।

তিনি আরও জানান, গত ১৬ মে সৌরভ বনানীর যে বাসায় থাকতেন সেখান থেকে ডিজিএফআই ও র‍্যাব পরিচয় দিয়ে ৮-১০ জন লোক মোবাইল, ল্যাপটপসহ সৌরভকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। তারা সৌরভকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার সকল সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট এক্সেস করেন এবং পরবর্তীতে একাউন্টগুলো ডিলিট করে দেয়। র‍্যাব জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সৌরভকে চাকরির প্রলোভন দেখায় এবং সওদা থেকে দূরে থাকতে বলে। একদিন আটকে রাখার পর ১৭ মে সৌরভকে তারা বাসায় ফেরত দিয়ে যায় র‍্যাব। সৌরভকে ফেরত দেওয়ার সময় র‍্যাব -১ সৌরভের বাসার পরিচিতজনদের থেকে তাদের প্রাপ্তি স্বীকার ফরমে স্বাক্ষর নেয়।

সৌরভের মা আরজুমান অভিযোগ করেন সর্বশেষ ৮ জুন র‍্যাব সৌরভকে ফোন করে চাকুরী সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পাসপোর্ট, সার্টিফিকেট ও জীবনবৃত্তান্ত রেডি রাখতে বলেন। ৯ জুন দুপুর ৩টায় র‍্যাব সৌরভের সাথে যোগাযোগ করে তাকে প্রয়োজনীয় কাগজ ও পাসপোর্টসহ চট্টগ্রাম মিমি সুপার মার্কেটের আগোরার সামনে সন্ধ্যা ৭টায় উপস্থিত হতে বলে। এরপর সৌরভ তাদের সাথে দেখা করতে বাসা থেকে বের হলে আর  ফিরে আসেনি।

বক্তব্যের শেষে  সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান বলেন, ‘আমি একজন মা হিসেবে আমার হারানো ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমার ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য।’

লেখক- হাসান উজ জামান 

আরও পড়ুন- ১১ দিন পর ময়মনসিংহ থেকে সোহেল তাজের ভাগনে উদ্ধার

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *