বাংলাদেশ

সীমান্তে আটকদের মধ্যে বাংলাদেশীরা এগিয়ে!1 min read

এপ্রিল ৩০, ২০১৮ 2 min read

সীমান্তে আটকদের মধ্যে বাংলাদেশীরা এগিয়ে!1 min read

Reading Time: 2 minutes

১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার আরো ৪ জন বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করা হয়েছে টেক্সাস সীমান্তের লারেডো এলাকা থেকে। এরা ৪ জনই অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ডার পেট্রোল বা সীমান্ত টহল দপ্তর। এই নিয়ে ২০১৭ ‘র অক্টোর থেকে এ পর্যন্ত ১৭৯ জন বাংলাদেশী অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হলো। আর বর্ডার পেট্রোল দপ্তর জানিয়েছে, এই লারেডো সেক্টর দিয়ে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার সময় আটকদের মধ্যে বাংলাদেশীল সংখ্যাই সবচে বেশি।

এর আগে ঐ একই সীমান্ত থেকে ২০১৭ সালে ১৮০ জন বাংলাদেশী আটক হয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের বাইরে বাংলাদেশীদের আটকের সংখ্যা প্রতিবছর কম বেশি দেখা যায়। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৩ থেকে এই সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের হার বেড়েছে কয়েক গুন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশী ১৪৯ জন বাংলাদেশী লাতিন আমেরিকা, বিশেষ করে মেক্সিকোয় আটক হয়েছেন। ২০১২ সালে আটকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৭। পরের বছরগুলোয়ও মেক্সিকোর কারাগারগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ পথে গমনের দায়ে আটক অভিবাসন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৩ সালে আটক হয়েছিলেন ৩২৮ জন, ২০১৪ সালে ৬৯০, ২০১৫ সালে ৬৪৮ ও ২০১৬ সালে ৬৯৭ জন।

অভিবাসন প্রত্যাশীদের যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে পাচারকারীরা সাধারণত জনবহুল এলাকা এড়িয়ে মরুভূমি, পাহাড় কিংবা জঙ্গলপথ বেছে নেয়। কারণ এসব স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি কম। দুর্গম এসব পথ পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন অনেকেই। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন। ১৯৯০ সালের পর থেকে শুধু মেক্সিকোর সীমান্ত এলাকায়ই ছয় হাজারের বেশি মরদেহ উদ্ধার করেছে মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এর মধ্যে কতজন বাংলাদেশী, তার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যানও নেই।

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ বাংলাদেশীদের সংখ্যা ২০১০ সালের শুমারী অনুযায়ী প্রায় ২ লক্ষ ৭৭ হাজার জন। এখন সেটা বেড়ে দ্বিগুনেরও বেশি হয়েছে বলে ধারনা করা হয়। আর বৈধ যত নাগরিক আছেন, অবৈধ বা কাগজপত্রহীনদের সংখ্যাও তার কাছাকাছি বলে মনে করা হয়। অভিবাসনের এই হার বাড়তে থাকে মূলত ২০০০ সাল থেকে ডিভি লর্টারীর মধ্য দিয়ে। এখন ডিভি লটারী না থাকলেও, পারিবারিক ভিসায় গ্রিনকার্ড নিয়ে প্রতি বছর ঢুকছেন হাজার হাজার বাংলাদেশী। পিউ রির্সাচ এর এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০০০ সালের পরে শুধুমাত্র পারিবারিক অভিবাসনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে দেড় লক্ষাধিক বাংলাদেশী। এর বাইরে, এমন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা, বা টুরিস্ট ভিসায় এসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা বাংলাদেশীর সংখ্যাই বেশি। টেক্সাকো সীমান্ত দিয়ে এসে অনেকেই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে আটককৃতদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর হার অনেক বেশি।

স্বাধীনতার অল্প কিছুদিন পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে শুরু করে। শুরুর দিকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের পাশাপাশি শিক্ষাগত কারণে কিছু মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ পায়। এরপর ১৯৯০ সালের দিকে এসে ডাইভারসিটি ভিসা তথা ডিভি লটারির সূত্র ধরেও অনেক মানুষ দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ পান। ডিভি লটারি প্রোগ্রামের আওতায় গ্রিন কার্ড পেয়ে দেশটির নাগরিকত্বও পেয়েছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারি অনুযায়ী, ১৯৮০ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী জনসংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৮০০। ২০০০ সালের দিকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৪১২ জনে।  আর এখন, সেটা ধারনা করা হয় সাড়ে ৩ থেকে ৫ লক্ষের মত।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *