Site icon Bangla Info Tube

সাংবাদিক ফাঁসাতে গিয়ে বিপাকে পুতিন সরকার

সাংবাদিক ফাঁসানোর জেরে বিপাকে পুতিন সরকার

Reading Time: 2 minutes

রাশিয়ায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ভ্লাদিমির পুতিনের দাপটে সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই বললেই চলে। রাশিয়ায় বাক স্বাধীনতার সুযোগও খুব সীমিত। সাংবাদিকদের  সীমার মধ্যে বেঁধে রাখা, এমনকি হত্যা করার ঘটনাও সেখানে ঘটেছে। কিন্তু সম্প্রতি এক সাংবাদিককে পুলিশ মাদক কারবারি সাজিয়ে গ্রেফতার করার প্রেক্ষিতে ফুঁসে উঠেছে রাশিয়ার সাধারণ জনগণ।

আল-জাজিরায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত ৬ জুন মেদুসা নামক এক পত্রিকার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইভান গোলুনোভাকে মাদক উৎপাদন ও গ্রেফতারের অভিযোগে আটক করে পুলিশ। কয়েকটি ব্যাগ ও কেমিক্যাল ল্যাবে ব্যবহার করা হয় এমন কিছু যন্ত্রের ছবি রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তুলে ধরে পুলিশ জানায়, এইসব মাদকদ্রব্য ও মাদক উৎপাদনের যন্ত্র গোলুনোভের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের এই অভিযোগের ফলে ১০ থেকে ২০ বছরের কারাভোগের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন গোলুনোভ।

কিন্তু পুলিশের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে গোলুনোভ ও তার পত্রিকা মেসুদার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সব পুলিশের পাতানো নাটক! তাদের দাবির প্রমাণও মেলে গোলুনোভের রক্ত পরীক্ষায়। তার রক্ত পরীক্ষায় মাদকের কোনো অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় নি। এমনকি যে ব্যাগগুলো পুলিশ গোলুনোভের বাসা থেকে উদ্ধার করেছিল, সেই ব্যাগগুলোতেও তার আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া যায় নি।

পুলিশের এই সাজানো নাটকের খবর জনসম্মুখে প্রকাশ হলে পুরো রুশ সমাজ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মস্কোর প্রধান পুলিশ কার্যালয়ের সামনে বহু লোক বিক্ষোভ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ওঠে রুশ সরকারের তীব্র সমালোচনার ঝড়। বিক্ষোভকারীরা ১২ জুন বড় ধরনের বিক্ষোভ করার ঘোষণা দেন। রাশিয়ায় জনবিক্ষোভের কাছে সরকারের নতি স্বীকার করার ঘটনা খুবই বিরল হলেও এই ঘটনায় চাপের মুখে রুশ সরকার গোলুনোভকে ১১ জুন ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

ক্রেমলিন গোলুনোভের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে স্বীকার করে নেয়। পাশাপাশি যে পুলিশ কর্মকর্তারা গোলুনোভের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল তাদের বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

এই ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, রাশিয়ার মানুষ প্রয়োজনে এক হতে জানে। জনগণের এক হওয়াটা যে সরকার ভয় পায় সেটাও এখন পরিস্কার সবার সামনে। বিশ্বে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে যখন অনেক প্রশ্ন উঠছে সেই সময় এই ঘটনা সবাইকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যমগুলোর শক্তি ও সাহস এখনো সেই দেশের সরকার শেষ করে দিতে পারে নি।

লেখক- হাসান উজ জামান 

Exit mobile version