খেলা

ভারত বধের নায়কেরা1 min read

জুলাই ১, ২০১৯ 3 min read

author:

ভারত বধের নায়কেরা1 min read

Reading Time: 3 minutes

উপমহাদেশের ক্রিকেটে এখন মাঠ ও মাঠের বাইরে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচই বেশি উত্তেজনা ছড়ায়। ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ নিয়ে মাঠের বাইরে যতটা উত্তাপ ছড়ায় খেলার মাঠে পাকিস্তান ঠিক তততাই অসহায় হয়ে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে। আর ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনার কারণ অনুমান করাও কঠিন কোন কাজ নয়। বিনা যুদ্ধে হার মানা সেই দল বাংলাদেশ আর নেই।

ভারতের সাথে এখন পর্যন্ত ৩৫টি এক দিনের ম্যাচ খেলে মাত্র পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেলেও বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ভারতকে ছেড়ে কথা বলে নি। বিশ্বকাপে আগামীকালের ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। শিরোপার অন্যতম দাবিদার ভারতের সাথে জিততে হলে বাংলাদেশকে দলগত ভাবে পারফর্ম করতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরও এই ম্যাচে বাড়তি আলো থাকবে এর আগে ভারত জয়ের নায়ক মাশরাফি, সাকিব, মুস্তাফিজের দিকে। ভারতের বিপক্ষে জয় এনে দেওয়া ম্যাচ সেরাদের নিয়েই আজকের এই লেখাটি সাজানো।

মাশরাফি বিন মর্তুজা (২)

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম দুটি জয়ই এসেছে মাশরাফির হাত ধরে। প্রথম জয়টি আসে ২০০৪ সালে। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ২২৯ রান তোলে। আফতাব আহমেদ সেদিন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন। ব্যাট হাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল মাশরাফির। মাশরাফি ৩৯ বলে ৩১ রানের একটি ইনিংস খেলেন।

এরপর বল হাতে ইনিংস ও নিজের তৃতীয় বলে বিধ্বংসী শেবাগকে শুন্য রানে ফিরিয়ে দিয়ে সব মিলিয়ে ৯ ওভার বল করে ২টি মেডেনসহ ৩৬ রান দিয়ে ২ টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ২১৪ রানেই থেমে যায় ভারতের ইনিংস। ব্যাটে বলে মাশরাফির অসাধারণ নৈপুণ্যে ভারতের বিপক্ষে ১৫ রানের জয় অর্জন করে বাংলাদেশ।

২০০৭ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে শেবাগকে বোল্ড করে মাশরাফির উদযাপন

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয় খুব সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে মধুর স্মৃতিগুলোর একটি। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পোর্ট অফ স্পেনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ভারতকে ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। মাশরাফির বোলিং দাপটে  প্রথমে ব্যাটিং করে ভারত মাত্র ১৯১ রানে অল আউট হয়ে যায়। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের প্রথম ৩ ব্যাটসম্যানই সেদিন ছিল মাশরফির শিকার। ৯.৩ ওভার বল করে ২টি মেডেনসহ ৩৮ রানে মাশরাফি এই ম্যাচে তুলে নেন ৪টি উইকেট।

বল হাতে মাশরাফির তাণ্ডবের পর বাকি কাজ শেষ করে সেই সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উঠতি তিন তারকা তামিম, সাকিব, মুশফিক। তিনজনই নিজেদের অর্ধশতক তুলে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তারা।

সাকিব আল হাসান(১)

বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস লেখা হবে আর সেখানে কোনো না কোনো ভাবে সাকিব আল হাসানের নাম আসবে না তা কীভাবে হয়? ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের তৃতীয় জয়ের নায়ক বিশ্ব সেরা এই অল রাউন্ডার।

সাকিবের সাথে যেন ছুটছিল পুরো বাংলাদেশ

২০১২ সালে এশিয়া কাপের এই ম্যাচে ভারত প্রথমে ব্যাটিং করে ২৮৯ রান সংগ্রহ করে। ব্যাটিং জিনিয়াস শচীন টেন্ডুলকার এই ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার শততম সেঞ্চুরি তুলে নেন। বল হাতে সাকিব শুন্য হাতে ফিরলেও ব্যাট হাতে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তামিম ইকবালের ৭০(৯৯), জহরুল ইসলামের ৫৩(৬৮), নাসির হোসেনের ৫৪(৫০) রানের ইনিংস দলকে জয়ের পথে রাখলেও শেষের দিকে রিকোয়ার্ড রান রেট আকাশ ছুঁতে থাকে। সেই অবস্থায় ৩১ বলে ৪৯ রানের একটি ঝোড়ো ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে আবার পথে ফিরায় সাকিব। যদিও শেষের দিকে মুশফিকের ২৫ বলে খেলা ৪৬ রানের ইনিংসটিও এই ম্যাচে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

মুস্তাফিজুর রহমান (২)

শুধু নাসির নয়, মুস্তাফিজের ওপর ভর করে পুরো বাংলাদেশই ভারতের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের আনন্দ উদযাপন করেছে

২০১৫ সালে নিজেদের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। সেই সিরিজেই অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান তার কাটারের জাদুতে ভারতকে ধরাশায়ী করে বলতে গেলে একাই জেতান বাংলাদেশকে।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করে ৩০৭ রানের চ্যালেঞ্জজিং স্কোর ছুড়ে দেয় ভারতকে। কিন্তু মুস্তাফিজের কাঁটার বিষে ভারত অল আউট হয়ে যায় মাত্র ২২৮ রানে । ৯.২ ওভার বল করে ৫০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নিজের অভিষেক ম্যাচেই ম্যাচ সেরা হন মুস্তাফিজুর রহমান।

প্রথম ম্যাচের চেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে যেন মুস্তাফিজ আরও দুর্বোধ্য হয়ে ধরা দেয় ভারতের ব্যাটসম্যানদের কাছে। এই ম্যাচে ১০ ওভার বল করে ৪৩ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে মাত্র ২০০ রানে গুটিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৬ উইকেট হাতে রেখে সহজেই জয়ের লক্ষে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

লেখক- মাহমুদ হাসান 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *