বাংলাদেশ

‘বুলবুল’ নয়, ‘উন্নয়ন’কে ভয় করুন1 min read

নভেম্বর ১৩, ২০১৯ 5 min read

author:

‘বুলবুল’ নয়, ‘উন্নয়ন’কে ভয় করুন1 min read

Reading Time: 5 minutes

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল নিয়ে আতঙ্কিত ছিল দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ। এই ভয়ানক গতির ঝড় জান ও মালের কী পরিমাণ ক্ষতি করে তা নিয়েই ছিল শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ভয়ানক এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হানলেও ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে। দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টাকার অঙ্কে তা কয়েকশ কোটি টাকা হবে। তবে মানুষের জানের ক্ষয়ক্ষতি ছিল অনেক কম। ১১ নভেম্বরের দৈনিক ইত্তেফাক জানাচ্ছে ৯ জেলায় ১০ জন লোকের প্রাণহানি ঘটেছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে।

তবে ভয়ানক বুলবুল বিদায় নেয়ার দুই দিনের মাথায় বাংলাদেশের মানুষের ওপর নেমে এসেছে ‘উন্নয়নের ঘূর্ণিঝড়’। গত এক যুগ ধরে প্রতিনিয়ত ‘উন্নত থেকে উন্নততর’ হতে থাকা বাংলাদেশের অপেক্ষাকৃত ‘নিরাপদ’ যাত্রাপথ রেল বিভাগ কেড়ে নিয়েছে ১৬ যাত্রীর প্রাণ। গত ১১ নভেম্বর দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুটি দ্রুত গতির ট্রেন একটি আরেকটির ওপর ওঠে গেল। দেশ ‘উন্নয়নের মহাসড়কে’ উঠার পর এবং রেলে এক যুগ ধরে ‘ব্যাপক উন্নয়নের’ পর ঘটলো প্রাগৈতিহাসিক কালের মতো দুর্ঘটনা। সিগনাল ফেইল করে একটি ট্রেনের ওপর আরেকটি ট্রেন উঠে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা আধুনিক যুগের রেল ব্যবস্থায় খুবই বিরল।

এবার বাংলাদেশ রেল বিভাগের “উন্নয়নের” কিছু ফিরিস্তি দেখবো।

২৯ ডিসেম্বর রাতের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার অনুগামীরা প্রতিনিয়ত রেলের ‘ব্যাপক উন্নয়নের’ যেসব ফিরিস্তি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনগণকে দিয়েছেন তার কয়েকটি নমুনা এখানে তুলে দিচ্ছি। তারপর আমরা দেখার চেষ্টা করবো এত ‘ব্যাপক উন্নয়ন’ এর পরও কতটা বেহাল দশায় আছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কী পরিমাণ “অতিসাধারণ” সমস্যা বিরাজ করছে রেল লাইনগুলোতে এবং কত উদাসীনভাবে এসবকে উপেক্ষা করে যাচ্ছেন সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষ।

গত মে মাসের ২৫ তারিখ রেলের এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা দাবি করেন তার গত দশ বছরের শাসনে তিনি রেলের ‘ব্যাপক উন্নয়ন’ করেছেন। বিডিনিউজ থেকে তার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিচ্ছি–

“রেলের প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যত দিন যাচ্ছে রেল আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। মানুষ এখন রেলে বেশি চড়তে চায়। চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের আরও বেশি যাত্রীবাহী কোচ দরকার। কাজেই আরও বেশি কোচ আমাদের কিনতে হবে।”

শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় গত সাড়ে ১০ বছরের রেলের উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে আরও বলেন, “কাজেই এভাবে আমরা রেলের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছি।”  [সূত্রঃ বিডিনিউজ]

শেখ হাসিনা এমন কথা প্রায়ই বলেন। সাথে বলেন তার ‘উন্নয়ন সাথী’ মন্ত্রী ও দলের নেতারা। যেমন ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তখনকার রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেছিলেন, “রেলপথ অবহেলিত ছিল। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে আলাদাভাবে রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে রেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নয়ন করা হয়েছে।” [সূত্রঃ প্রথম আলো]

তো এত উন্নয়নের পর রেলের বর্তমান অবস্থা কেমন? নিশ্চয়ই খুবই উন্নত হওয়ার কথা তাই না?! সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডের সাথে নিয়মিত বাংলাদেশকে তুলনা করা বাংলাদেশের রেলের অবস্থাও নিশ্চয়ই এসব দেশেরই সমতূল্য হবে!

তাহলে এবার দেখা যাক সরকারি দল আওয়ামী লীগের এক এমপির মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম কী বলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পর?

১২ নভেম্বর বাংলা ট্রাবিউন “রেল দুর্ঘটনার যত কারণ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেটির শুরুতে লেখা হয়েছে–

“একের পর এক দুর্ঘটনায় ‘নিরাপদ বাহন’ ট্রেন এখন অনিরাপদ বাহনে পরিণত হয়েছে। গত সাড়ে ৫ বছরেই এক হাজার ৮টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৩০ জন। গবেষকরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি না থাকায় প্রতিরোধযোগ্য এসব দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। আর রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্ঘটনা রোধে রেলের অনেক বিধিবিধান রয়েছে, সেগুলো মানা হয় না বলেই বাড়ছে দুর্ঘটনা।”

পড়নু প্রতিবেদনটির আরও কিছু অংশ, “পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, … যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলওয়েকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। উন্নয়ন বাজেটও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এর পরেও তেমন কোনও সুফল মিলছে না। একের পর এক স্টেশন বন্ধ, মেয়াদোত্তীর্ণ রোলিং স্টক, জরাজীর্ণ রেল কারখানা, লোকবল সংকট, সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারা, টিকিট পেতে ভোগান্তি, ছেঁড়া ও নোংরা আসনসহ নানা অব্যবস্থাপনা লেগেই আছে।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডিব্লিউবিবি) ট্রাস্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে- মুখোমুখি সংঘর্ষ, ট্রেন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, লেভেল ক্রসিং, সিগনালিং ত্রুটি, লাইনচ্যুতিসহ নানা কারণে রেলপথে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে লাইনচ্যুতির ৭৫ শতাংশই ঘটছে রেললাইনের কারণে। এর অন্যতম কারণ যন্ত্রাংশের সংকট ও রেলপথের যন্ত্রপাতি চুরি। পাশাপাশি রেলওয়ের সংশ্লিষ্টদের অবহেলা, লোকবল ঘাটতি, নিয়মিত তদারকি ও মেরামতের অভাব, রেলপথে মানসম্মত পর্যাপ্ত পাথরের স্বল্পতা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণেও ঘটছে দুর্ঘটনা।”

এই হলো শেখ হাসিনার ‘ব্যাপক উন্নয়ন’ এর পরবর্তী রেলওয়ের অবস্থা। এই অবস্থার কারণে প্রতিদিন কতটি দুর্ঘটনা ঘটছে এবং কত লোকের প্রাণ কেড়ে নেয়া হচ্ছে তার একটি ফিরিস্তিও উঠে এসেছে বাংলা ট্রিবিউনের রিপোর্টে। পড়ুন–

“ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১০ সালের পর থেকে রেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তে থাকে। এটি ২০১৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মারাত্মক আকার ধারণ করে। ওই বছর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত রেলওয়েতে এক হাজার ৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেসব দুর্ঘটনায় ২৯৫জন আহত হওয়ার পাশাপাশি ১১৫ জন নিহত হয়েছেন। এরপর ২৩ জুন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে আরও চার জন নিহত হন। সর্বশেষ সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এতে ১৬ জন ট্রেনযাত্রী নিহত হয়েছেন।

অপরদিকে, রেল কর্তৃপক্ষের হিসাব বলছে, শুধু ২০১৪ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৮৬৮টি দুর্ঘটনায় ১১১ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ২৯৮ জন। এতে রেলের ক্ষতি হয়েছে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি। বেসরকারি হিসাবে এর পরিমাণ আরও বেশি।”

এত ব্যাপক উন্নয়নের পর রেলে বর্তমান বেহাল অবস্থা নিচের কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছে সরকারদলীয় এমপির মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যমটি। পড়ুন সেই পয়েন্টগুলো–

“বর্তমানে রেললাইনের অবস্থা: বর্তমানে সারাদেশে দুই হাজার ৯২৯ কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে। এর মধ্যে মানসম্পন্ন রেললাইন মাত্র ৭৩৯ কিলোমিটার। যা মোট রেললাইনের ২৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের গবেষণায় দেখা গেছে রেল কর্তৃপক্ষ ১৪টি রুটকে মানসম্পন্ন বলে চিহ্নিত করেছে।

সিগনালিং ত্রুটি: রেল দুর্ঘটনায় পড়ার অন্যতম কারণ সিগনাল অমান্য করা বা সিগনালিং ত্রুটি। কোনও কারণে যদি সিগনালে ত্রুটি দেখা দেয় কিংবা চালক অমান্য করেন তাহলে অনেকক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ ঘটে যাওয়া কসবা দুর্ঘটনা সিগনাল অমান্যের কারণেই হয়েছে বলে মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ।

ঝুঁকিপূর্ণ রেল ক্রসিং: রেলপথের ওপরে ক্রসিং থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও যোগাযোগের প্রয়োজনেই অনেক সময় তা করতে হয়। তবে কোনও স্থানে নতুন রেললাইন নির্মাণ করলে প্রয়োজনে লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করে সেখানে গেটকিপার নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু দেশে এখনো দুই হাজার ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং রয়েছে। সেসব স্থানে কোনও গেটকিপার নেই।

অতিরিক্ত বগি সংযোজন: রেল দুর্ঘটনার অন্যতম আরও একটি কারণ হচ্ছে ক্ষমতার অতিরিক্ত বগি স্থাপন করা। যে কারণে অনেক সময় বগি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।

রেললাইনে পাথরের স্বল্পতা: নিরাপদ ট্রেন পরিচালনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেলপথে পাথরের আধিক্য। পর্যাপ্ত পাথর থাকলে গতিবেগ বাড়লেও ট্রেনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যায়। তবে সম্প্রতি রেলপথে পাথরের পরিমাণ কমে এসেছে। রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিবছর পাঁচ লাখ ৫৬ হাজার ঘনফুট ক্রাশড স্টোন বা চূর্ণ পাথর প্রয়োজন হলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র এক লাখ ঘনফুট পাথর। আর যেসব পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোও নিন্মমানের বলে অভিযোগ রয়েছে।

নড়বড়ে ট্র্যাক: দেশে রেলপথ বাড়লেও দীর্ঘদিনের পুরনো লাইনগুলো ঠিকমতো সংস্কার না করায় রেল দুর্ঘটনা বাড়ছে। রেলের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হলেও স্লিপার, ফিশপ্লেটসহ বিভিন্ন উপকরণ নিম্নমানের ব্যবহার হওয়ায় দ্রতগতির ট্রেন চলায়
ব্যাঘাত ঘটছে।

ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতু: দেশে বর্তমানে রেলপথে ছোট-বড় তিন হাজার ১৪৩টি কালভার্ট ব্রিজ রয়েছে। এরমধ্যে ৩২৬টি বড় সেতু (৬০ ফুট বা তার বেশি) ও দুই হাজার ৮১৭টি ছোট সেতু রয়েছে। এর অধিকাংশই ব্রিটিশ আমলের। সেতুগুলো সংস্কার না করায় এরইমধ্যে ৪০২টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে মাঝে মধ্যে ব্রিজ ভেঙে, কিংবা স্লিপার না থাকায় লাইনচ্যুত হয়ে রেল দুর্ঘটনা হচ্ছে।

আধুনিক প্রযুক্তির অভাব: রেল দুর্ঘটনা রোধে নানা প্রযুক্তি আবিষ্কার হলেও দেশে এখনও তার ব্যবহার হচ্ছে না। তবে পাশের দেশ ভারত ট্রেনের মুখোমুখি দুর্ঘটনা রোধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। দেশটির রেললাইনে দুটি ট্রেন মুখোমুখি চলে আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়।

লোকবল সংকট: রেলে এখনও অভিজ্ঞ লোকো পাইলটের অভাব রয়েছে। এই ঘাটতির কারণে নতুন যারা আছে তাদের পর্যাপ্ত ট্রেনিং না দিয়ে চালকের আসনে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অভিজ্ঞ চালক সংকটের কারণে অনেকক্ষেত্রে তাদের অতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে। যে কারণে ক্লান্ত চালকদের মাধ্যমে দুর্ঘটনা ঘটছে।” [সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন]

দেশের যোগাযোগ খাতের মধ্যে রেলকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া এবং হাজার হাজার কোটি টাকার ‘উন্নয়ন বাজেট’ বরাদ্দের পর যদি একটা সেক্টরের দুরাবাস্থা এমন পর্যায়ে থাকে, তাহলে সেই ‘উন্নয়ন’কে আমাদের ভয় পাওয়া উচিত। এমন উন্নয়নের পর যদি প্রাচীনকালের মতো ঘটা ট্রেন দুর্ঘটনা রোধ না করা যায় তাহলে সেই উন্নয়ন আসলেই জনগণের ভীতির কারণ হওয়া উচিত।

এই একই ধরনের উন্নয়নের জন্য নেয়া হয়েছে নতুন মহাপরিকল্পনা।  আগামী ৩০ বছরে নাকি রেলের উন্নয়নে ৫ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে, যার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে চলতি বছরের বাজেট থেকে। সর্বখাতে লুটপাটের
নতুন নতুন নজির গড়া এবং প্রায় প্রতিটা সেক্টরে অব্যবস্থাপনা ও দুরাবস্থা বাড়িয়ে তোলা এই সরকারের এমন উন্নয়ন মহাপরিকল্পনায় দেশের মানুষের ‘মহা ভয়’ পাওয়া কি উচিৎ নয়?

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বুলবুলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও নিজেদের রক্ষা করতে পারলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্য, এ ধরনের একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল।’

হ্যাঁ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আপনার ‘ব্যাপক উন্নয়ন’ এর নামে চলমান দুর্নীতি, অরাজকতার মতো কৃত্রিম দুর্যোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছি না। সত্যিই জাতি হিসেবে এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।

লেখক- আকিব আহমেদ, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *