Site icon Bangla Info Tube

নিউইয়র্কের ২ বাংলাদেশী নেমেছেন নির্বাচনী মাঠে

দুই বাংলাদেশী নেমেছেন নিউইয়র্কের নির্বাচনী মাঠে।

Reading Time: 2 minutes

 

বাংলা ইনফোটিউব: আমেরিকার নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন দুইজন বাংলাদেশী অভিবাসী। কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৫ থেকে কংগ্রেস প্রতিনিধি হিসেবে ডেমোক্রাট দলের মনোনয়ন পেতে নিজের প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন জ্যামাইকার হিলসাইডে বাংলাদেশীদের পরিচিত মুখ মিজান চৌধুরী। আর, এরই মধ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ হিসেবে মনোনীত এটর্নি মঈন চৌধুরী নাম লেখাচ্ছেন, নিউইয়র্ক স্টেট এর সিনেটর পদে লড়াইয়ের প্রার্থী হতে। এউপলক্ষে দুজনই মাঠে নেমেছেন এবং প্রয়োজনীয় জনমত সংগ্রহের কাজ করছেন। কংগ্রেস এবং নিউইয়র্ক স্টেট উভয় ক্ষেত্রে মূল প্রতিদ্বন্দীতায় ডেমোক্রাট মনোনয়ন পেতে হলে, অবস্যই প্রাইমারীতে প্রতিদ্বন্দী র্প্রাথীকে হারাতে হবে, যেটা এ যাবৎকাল কোন বাংলাদেশীর পক্ষে সম্ভব হয়নি, অন্তত নিউইয়র্ক থেকে।

নিউইয়র্ক থেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২ জন বাংলাদেশী প্রতিদ্বন্দীতা করেছিলেন ২০১৭ সালে। কিন্তু প্রাইমারী নির্বাচনের বৈতরনী পার হতে পারেন নি। ওজোনপার্ক ও রকওয়ে এলাকা থেকে সিটি কাউন্সিলর হতে চেয়েছিলেন হেলাল শেখ, কিন্তু তিনি ২ শতাধিক ভোটের অভাবে থেমে গিয়েছিলেন প্রাইমারীতে। অন্যদিকে, জ্যামাইকা থেকে তৈয়েবুর রহমান নিজের প্রাথীতা ঘোষনা করেছিলেন, কিন্তু তার পাশে খুব বেশি মানুষকে তিনি হাজির করতে পারেননি, সে কারনে প্রাইমারীতে তিনি জয় পাননি। কিন্তু ঐ দুজনের প্রতিদ্বন্দীতা নিউইয়র্কের অনেক বাংলাদেশীকে আশাবাদি করে তুলেছিল, ভবিষ্যতের ব্যাপারে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আরো বড় নির্বাচনে নিজেদের যোগ্যতা প্রমানে মাঠে নেমেছেন মিজান চৌধুরী এবং এটর্নী মঈন চৌধুরী।

মিজান চৌধুরী বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলা শহরের বাসিন্দা । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রীধারী। ২৩ বয়সে ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।  দীর্ঘ ১৮ বছর প্রযুক্তি কর্মজীবনে তিনি অনেক ফরচুন কোম্পানীর সাথে কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দী প্রসঙ্গে মিজান চৌধুরী জানান, আমি কুইন্স কাউন্টির ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন অ্যাক্টিভ কর্মী। এলানয়ের রুজভেল্ট ডেমোক্রেটিক ক্লাব, কমিউনিটি বোর্ড-১৩, নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রীন-এর সাউথ এশিয়ান এডভাইজারী কমিটির অ্যাক্টিভ সদস্য এবং আমি অপ্রত্যকক্ষভাবে  অনেক স্থানীয় ও রাজ্য পর্যায়ের নির্বাচিতদের সাথে জড়িত থেকে কমিউনিটির তসকল মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমি সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারী ক্লিনটন , নিউইয়র্ক সিটির বর্তমান মেয়র মি. বিল ডি ব্লাজিও’র নির্বাচনী প্রচারণার একজন গুরুত্বপূর্ণ ও সক্রিয় কর্মী ছিলাম। আমি একজন উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী হিসেবে এবং কুইন্স চেম্বারর্স এন্ড কমার্সের সক্রিয় সদস্য। আমি মনে করি এই সবকিছু আমার নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতার কথাই বলে।

মিজান চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণার মূল স্লোগান ডিস্ট্রিক্ট ৫ এর কর্মসংস্থান বাড়াতে কাজ করা। নিজের প্রযুক্তি কাজের বাজারে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই এলাকায় টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করে কর্মসংস্থান বাড়াতেই তিনি সরকার পরিচালনা কাজের অংশ হতে চান বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক-৫ থেকে কংগ্রেনম্যান হিসেবে নির্বাচিত আছে আফ্রিকান আমেরেরকান গ্রেগরি ডব্লিউ মেক।

অন্যদিকে, দূর্ঘটনায় আইনী সহয়তা দিয়ে অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশীদের কাছে নিজের পরিচিতি তৈরী করেছেন এটর্নী মঈন চৌধুরী। ডেমোক্রাট দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারী ক্লিনটনের আস্থাভাজন বলে অনেকেই চিনেন মঈন চৌধুরীকে। এখন, তিনি বাংলাদেশীদের কাছে পরিচিতি নাম কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলি’র জন্য নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহে তৎপর। মূল ধারার রাজনীতিবিদদের সাথে কাজ করা মঈন চৌধুরী যেতে চান, নিউইয়র্ক রাজ্য সিনেটে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে স্টেট সিনেটর পদে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন চান  বলে জানা গেছে। এটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, আশা করছি কুইন্স কাউন্টি থেকে নির্বাচনের অনুমোদন পেয়ে যাবো।

নিউইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট ১৩-এর বর্তমান স্টেট সিনেটর হোজে পেরেলটা ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে সরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বিধায় এই আসনে এটর্নি মঈন চৌধুরীর ডেমোক্রাট প্রার্থী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এ নিয়ে মঈন চৌধুরী জানান, ‘আমি এখনও সাম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সর্বচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি ডেমোক্রাট দলের সর্বসম্মত সমর্থন আদায়ের জন্য। নিউইয়র্ক যেহেতু ডেমোক্রাট এলাকা, এখানে  দল যাকে সমর্থন করবে তার জয় সুনিশ্চিত। সেক্ষেত্রে দলীয় সমর্থনের চেষ্টা আছি আমি, এর পরেই আমি আনুষ্ঠানিক ভাবে আমার প্রার্থীতা ঘোষনা করবো। কেননা, এখন পর্যন্ত ৩ জন প্রার্থী আছে এই আসনে। এর মধ্যে পার্টির সমর্থন যার দিকে যাবে  সে হয়তো প্রাইমারী জয় করবে।

অবস্য, এখনই বলা যাচ্ছে না নিউইয়র্কের রাজনীতির মূল ধারায় এই দুই বাংলাদেশী কতখানি জায়গা তৈরী করতে পারবেন। তবে, একে একে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দীতায় নাম লেখানোর তালিকায় তারা যে এগিয়ে এসেছেন, তাতেই আশাবাদ তৈরী হচ্ছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী অভিবাসী সম্প্রদায়ে।

Exit mobile version