Site icon Bangla Info Tube

কাহিনি নির্ভরতায় ঝুঁকছে বলিউড

কাহিনি নির্ভর বলিউড সিনেমার অন্যতম পথিকৃৎ অনুরাগ ক্যাশপের 'গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর' সম্প্রতি 'দ্য গার্ডিয়ান' এর সেরা ১০০ ছবির তালিকার একমাত্র ভারতীয় ছবি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ; Photo Credit: justwatch.com

Reading Time: 7 minutes

সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁরফিল্মের ভাষা বলেছিলেনআমি জীবনে তিনখানা হিন্দি ছবিও দেখিনি এবং অন্য কোন পুণ্য করিনি বলে এই পুণ্যের জোরেই স্বর্গে যাব বলে আশা রাখি। তবে বলা যায় না, সেখানে হয়তো হিন্দি ছবি দেখতে হবে!’ 

এই উক্তিই একসময় বলিউডের বেসামাল অবস্থাকে নির্দেশ করে। হলিউড, ইরান কিংবা হংকংকোরিয়ার চলচ্চিত্রপাড়া যখন নিত্যনতুন নিরীক্ষায় ব্যস্ত ছিল তখনও শুধু ফর্মুলা ছবি দিয়েই চলতো এই ইন্ডাস্ট্রি। নায়কনায়িকাভিলেন, ছখানা গান আরহ্যাপি এন্ডিং’, মাঝে কিছু প্রেম আর মানঅভিমান পর্ব, সামঞ্জস্যহীন একশন দৃশ্যএই গৎবাঁধা কাঠামোয় চলছিল বলিউড। 

তবে ইদানীং কালে বলা যায়, বলিউডের পালে ভিন্ন হাওয়া লাগছে। আচমকাই অবশ্য এর উত্থান ঘটেনি। আবার রাতারাতিও যে সবাই ভিন্নধারার ছবি নির্মাণ করছেন তাও না। তবে আশিনব্বইয়ের দশকে যে মশলাদার হিন্দি ছবির ছড়াছড়ি ছিল তা বদলে কাহিনি নির্ভরতা বাড়ছে। 

একাকীত্ব আর প্রেমের চিরাচরিত রূপই এসেছে ‘দ্য লাঞ্চবক্সে’; Photo Source: Amazon

নেতৃত্বের পরিচালকেরা

করণ জোহর, যশ চোপড়া, রোহিত শেঠি, সুভাষ ঘাই প্রমুখের হাত ধরে বহু জনপ্রিয় ছবিই এসেছে। কিন্তু বিগ বাজেটের কাহিনিহীন ছবিতে দর্শক এখন নাখোশ।স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার ‘, ‘ জিরো‘, ‘ঠাগস অফ হিন্দুস্তান‘, ‘ভারত‘, ‘রেস থ্রি‘, ‘হাউসফুল ‘, ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়প্রভৃতির বক্স অফিস সংগ্রহ আর দর্শকের প্রতিক্রিয়াই বলে দেয়নতুন বোতলে পুরনো মদবেচার ফর্মুলা ছাড়তে হবে।

অনুরাগ কাশ্যপকে বলিউডের নতুন ধারার পথিকৃৎ বলা যায়। সম্প্রতিদ্য গার্ডিয়ানএর সেরা ১০০ ছবির তালিকার একমাত্র ভারতীয় ছবি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে তাঁরগ্যাংস অফ ওয়াসিপুর নিরাজ পান্ডেও এই কাতারে আছেন। তাঁরবেবি‘, ‘ ওয়েডনেস ডে‘, ‘রুস্তম‘, স্পেশাল ২৬‘, ‘এম এস ধোনি‘, ‘নাম শাবানাস্বল্প বাজেটে কাহিনি প্রধান হিসেবে সমাদৃত। বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানেউড়ান‘, ‘লুটেরা‘, ‘ট্র্যাপডপ্রভৃতি দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন শুধু গল্পের জোরেই সিনেমা কতদূর যেতে পারে। 

অনুরাগ, বিক্রমাদিত্য আর বিকাশ- এদের হাতেই বলিউডের ভবিষ্যৎ; Photo Source: The statesman

বিকাশ বেলও তাঁরকুইন‘, ‘সুপার ৩০ কাহিনিকেই সামনে এনেছেন। অন্যদিকে রাজকুমার হিরানি, অনুরাগ বসু,অভিষেক চৌবে,বিশাল ভরদ্বাজ, জোয়া আখতার,মেঘনা গুলজার,সুজিত সরকাররাও বসে নেই সাঞ্জু‘, ‘ইশকিয়া‘, উড়তা পাঞ্জাব‘, দিল ধাড়াকনে দো‘, ‘রাজী‘, ‘ছাপাকদিয়ে নন্দিত করছেন বলিউডকে। 

চরিত্রাভিনেতার উত্থান

গত কয়েক বছরের বলিউড ঘাঁটলে দেখা যাবে, তিন খান কিংবা অক্ষয়ের চাইতে বেশি দর্শক টেনেছে আয়ুষ্মানরাজকুমারভিকিকার্তিকেরা। ঝা চকচকে বলিউড পাড়ায় নায়ক হতে গেলে সিক্স প্যাক, ফর্সা চামড়া আর সুদর্শন মুখ দরকারএই সূত্র এখন মানছে না কেউই। ইরফান খান, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি, মনোজ বাজপাই, রাজকুমার রাও, আয়ুষ্মান খুরানা, কার্তিক আরিয়ান, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, সঞ্জয় মিশরা, জিম সার্ব, বিক্রান্ত মাসি, মানব কৌল, সুশান্ত সিং রাজপুত, অমিত সাধ,আলী ফজল,অভয় দেওল, ভিকি কৌশল, রণদীপ হুদা, বিনীত কুমার,অপারশক্তি খুরানা, রনিত রয়, বিনয় পাঠকের মধ্যে নায়কোচিত প্রভাবের চাইতে অভিনেতাকেই দেখতে পায় দর্শক।

নারী চরিত্রের প্রতিও আলাদা মনোযোগ দিচ্ছে নির্মাতারা। প্রথাগতশোপিসহিসেবে থাকছেন না কেউই। কংকনা রানাউত, বিদ্যা বালান, তাপসী পান্নু, আলিয়া ভাট, দীপিকা পাড়ুকোন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, কৃতি শ্যানন, কিয়ারা আদভানি, সোনম কাপুর, ভূমি পেদনেকার, ইয়ামি গৌতম, রানি মুখার্জি, টাবু, রাধিকা আপ্তে, আনুশকা শর্মা, কালকি কেকলা, কীর্তি কুলহারি প্রত্যেকেই সৌন্দর্য প্রদর্শনের চাইতে অভিনয় দক্ষতাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। অথচ এক যুগ আগেও বলিউডে নায়িকা মানেই ছিল স্বল্পবসনা গুরুত্বহীন এক চরিত্র। নুসরাত বারুচা প্রসঙ্গে বলেন, ’আমি যখন শুরু করেছিলাম তখন অনেকেই বলতো আমার মধ্যে নায়িকার মালমশলা নেই। কাজ করে গেছি। এখন আমি অভিনেত্রী, নায়িকা নই।

মানব, বিক্রান্ত, জিম ও পঙ্কজ ত্রিপাঠি- দক্ষতার জোরেই সমাদৃত; Photo Source: Hindustan Times

পঙ্কজ ত্রিপাঠি  তো মহাতারকা বনে গেছেন কাহিনিপ্রধান ছবিতে কাজ করেই।স্ত্রী’, ‘দ্য তাসখেন্ত ফাইলস’, ‘লুকা ছুপি’, ‘বারেলি কি বারফি’, ‘গুরগাও’, ‘নিউটন’, ‘আনারকলি অফ আরাহতাঁকে এনে দিয়েছে অসংখ্য পুরস্কার আর জনপ্রিয়তা। রাজকুমার রাওকে একসময় কেউ নায়কের কাতারে ভাবতেই পারতেন না। রাজকুমার বলেন।আমি জানতাম আমার মধ্যে নায়কী চেহারা নেই। কিন্তু এটুকু বিশ্বাস ছিল, মেধার জোরে কোন একদিন সুযোগ মিলবে।আয়ুষ্মানকে তো বড় এক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান মুখের উপরই জানিয়ে দিয়েছিল, তারা তারকা বাদে কাউকে ছবিতে নেয় না। অথচ বছর কয়েক বাদে সেই আয়ুষ্মানই তারকার মিছিলে প্রথম সারিতে। 

পিছিয়ে নেই জিম সার্বও। বছরের পর বছর মুম্বাইপাড়ায় কঠোর তপস্যায় থাকলেও প্রথম নজরে আসেননিরজা নেতিবাচক চরিত্র দিয়েই। এরপর সঞ্জয় লীলা বানসালিরপদ্মাবতেসুযোগ পান। শহীদ কাপুর, রণবীর সিং, দীপিকা পাড়ুকোনের মত বড় তারকা থাকলেও মালিক কাফুরচরিত্রে লাইমলাইট টা ঠিকই নিজের দিকে নিয়ে আসেন

বিক্রান্ত মাসির খোলস বদলটা আরও অভাবনীয়।লুটেরা রণবীর সিংয়ের বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। রোল এতটাই ছোট ছিল যে হাতে কোন সংলাপও পাননি সেসময়। আর এখন? দীপিকার বিপরীতেছাপাকেকাজ করছেন তিনি। এর মাঝে কংকনা সেন শর্মা পরিচালিত প্রথম ছবি ডেথ ইন দ্য গুঞ্জশুটুহিসেবে নজর কাড়েন মাসি। জোয়া আখতারেরদিল ধাড়াকনে দো’, ‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখায়ও আলোড়ন তোলেন এই তরুণ। 

গল্পই নায়ক 

ভাবুন তো, ২৬ বছরের যুবক আপনি হুট করে জানলেন আপনার বাবামা নতুন সন্তানের অপেক্ষায় আছেন, কী করবেন তখন? যদি আপনার প্রেমিকা জানতে পারে আপনি নিয়মিত স্পার্ম ডোনেট করেন, কী হবে তখনআচ্ছা, জনশূন্যখাবারজলহীন ঘরে কয়দিন টিকতে পারবেন আপনি?

হানসাল মেহতার’ আলীগড়’ –মনোজ বাজপাই ও রাজকুমার জুটির মাস্টারপিস; Photo Source: IMDb

এমন সব অভাবনীয় কিন্তু আটপৌরে জীবনের গল্পই জায়গা করে নিচ্ছে বলিউডের পর্দায়। ২০১৮ পর্যালোচনা করলেই অবস্থান পরিষ্কার হয়ে আসে।স্ত্রী’, ‘বাধাই হো’, ‘রাজি’, ‘সনু কি টিট্টু কি সুইটি’, ‘আন্ধাধুন’, ‘মুল্কপ্রভৃতি ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি দর্শক চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের সমর্থন পেয়েছে। অথচ এর কোনটাতেই দামি তারকার উপস্থিতি ছিল না, গল্প আর পরিচালনাই ছিল এগুলোর সম্বল। অন্যদিকে তিন খানেরজিরো’, ‘ঠাগস অফ হিন্দুস্তান’, ‘রেস থ্রিবলিউডের নতুন রেসে জিরোই প্রমাণিত হয়েছে। 

পঙ্কজ ত্রিপাঠির মতে চিত্রনাট্যকারের হাতেই অনেক ক্ষমতা থাকে।দেখুন, রামায়ণে রামই হলো নায়ক। কিন্তু চিত্রনাট্যকার চাইলে লক্ষ্মণকেও নায়ক বানাতে পারে। এখন দর্শক বোকা নয়, আপনি ভালো কিছু না দেখালে সহজেই আরেক দিকে মুখ ফেরাবে তারা। গল্পের বেলায় তিনি বলেন, ‘আগে চিত্রনাট্য ছিল মুম্বাই কেন্দ্রিক। এখন বেনারস, এলাহাবাদ, লখনৌ থেকে লোক আসছে, তাদের গল্পেও বৈচিত্র্য মিলছে। কাহিনিতেও আসছে জীবন নির্ভরতা। ফলে অভিনেতারাও ঠিকঠাকভাবে নিজেদের মিলিয়ে নিতে পারছেন। 

স্ক্রিপ্ট বাছাইয়ে আয়ুষ্মানের জুড়ি মেলা ভার; Photo Source: Amazon

ব্যবসায়িক সাফল্য

বিদ্যা বালানেরকাহানি কথা মনে আছে? কিংবা কে কে মেননবিনয় পাঠকেরভেজা ফ্রাই’, অনুপম খেরেরখোসলা কা ঘোসলা’? ২০১২ সালেরকাহানিতে বাজেট ছিল মোটে কোটি রূপি, অথচ ব্যবসা করে ৭০ কোটির! সেসময় বিদ্যাকেও খুব বড় তারকা মানা হতো না। অথচ পরিপুষ্ট গল্প, যথার্থ টুইস্ট আর স্বভাবজাত অভিনয়ের গুণে বলিউডের অন্যতম সেরা থ্রিলার হিসেবে গোনা হয় একে। 

২০১৮ সালে রাজিতে মাত্র ৪০ কোটি রূপি লগ্নি করেই প্রায় ২০০ কোটি ঘরে তুলেছে প্রযোজক। অন্যদিকে ব্যতিক্রমি গল্প আর চটকদার কমেডির গুণে ৩০ কোটির বিপরীতে ২২১ কোটি রূপি অ্যায় করেছে আয়ুষ্মান খুরানারবাধাই হো শ্রীরাম রাঘবনেরআন্ধাধুন৩২ কোটি রূপিতে নির্মিত হলেও আয় করেছে ৪৫৬ কোটি! তারকাহীনসনু কি টিট্টু কি সুইটি২৪ কোটি বাজেটের অপর পিঠে বক্স অফিস থেকে এনেছে ১৫৩ কোটি। রাজকুমার রাওয়েরস্ত্রীহরর কমেডির ভিন্ন জনরা দিয়ে বাজেটের ছয় গুণ ব্যবসা করেছে। রানি মুখার্জিওহিচকি কল্যাণে ফিরে এসেছেন বলিউডে। 

প্রথাবিরোধী গল্পের জোরেই এগিয়েছে ‘মাসান’; Photo Source: IMDb

২০১৯ এও অব্যাহত আছে ‘Content is the king’ ধারণা। আয়ুষ্মানেরআর্টিকেল ১৫ড্রিমগার্লআয় করেছে যথাক্রমে ৯২ কোটি এবং ২২১ কোটি রূপি।মিশন মঙ্গল২৯০ কোটি, ‘উরি৩৪২ কোটি, ‘গালি বয়২৪৫ কোটি, ‘সুপার ৩০২০৮ কোটি আয় করেছে স্রেফ গল্পের পরিপক্বতার জোরেই। ওয়েব মিডিয়াও বৃহৎ পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করছে এক্ষেত্রে। নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার ‘Lust Stories’, ‘Rajma Chawal’, ‘Love per square foot’ এর সাফল্যই এর সত্যতা নির্দেশ করে। 

প্রযোজকদের ভাবনা

জাংলি পিকচারস এর চিফ এক্সিকিউটিভ অমৃতা পাণ্ডে জানান, ‘পাঁচ বছর আগে বলিউডের হাল আর বর্তমান অবস্থাআকাশ পাতাল তফাৎ। গত দুই বছরে দশটি কাহিনি নির্ভর ছবি উপহার দিয়েছি আমরা।এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকেই গত কয়েক বছরের সফল ছবিবাধাই হো’, ‘রাজি’, ‘স্ত্রী’, ‘তালওয়ারমুক্তি পেয়েছে। মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া টুডের আলোচনা সভায় করণ জোহর বলেন , ‘এখন বড় তারকা, পরিচালকের নাম শুনে কেউ হলে আসছেনা। লোকে এখন গল্প চায়। দর্শক অনেক তুখোড়, বুদ্ধিমানও। তাই আমাদেরই উচিত স্ট্র্যাটেজি বদলে ফেলা।‘ 

২০১৮ সালটা আসলে সবার জন্যই শিক্ষণীয় ছিল। এই ধারা ক্রমে গ্রহণযোগ্যতা পাবার ফলেই ২০১৯ সালেউরি’, ‘তাসখেন্ত ফাইলস’, ‘ আর্টিকেল ফিফটিনএর মতো ছবি আমরা পেয়েছি।‘  বলেন আরেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি স্টুডিওর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শারিক প্যাটেল। 

অভিনয়ই এখন প্রধান, দৈহিক সৌন্দর্য নয়; Photo Source: Variety

স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, বিগবাজেট ছবি হটিয়ে কি তাহলে এখন অল্প বাজেটের ছবিগুলোই চলবে? প্রশ্নের উত্তর দেন প্রখ্যাত প্রযোজক রনি স্ক্রুওয়ালা, ‘না। এখনও সেই সময়টা আসেনি। পরিসংখ্যান বলে, যদি তিনটে স্বল্প বাজেটের ছবি সফল হয়, এর পাশে আরও ৫০ টা ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে। সুতরাং বিশাল কারবার ছাড়াও কোন ছবি সফল হতে হলে তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হবেদুর্দান্ত গল্প বা চিত্রনাট্য, আকর্ষণীয় ট্রেইলার আর জবরদস্ত প্রচারণা।‘ ‘উরি’, ‘বরফি’, ‘রাং দে বাসান্তি’, ‘জোধাআকবরসহ বহু ব্যবসাসফল ছবির সাথে যুক্ত ছিলেন রনি। 

অ্যাবান্ডানশা এন্টারটেইনমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম মালহোত্রার মতে মশলাদার বলিউডি ছবি মানে বড় তারকা, বড় পরিচালক আর নয়নাভিরাম স্থানে শুটিং করা। এসবের খরচাটাও পড়ে আকাশছোঁয়া। খরচ যেহেতু বেশি তাই বিশাল আয়ের দুশ্চিন্তাও থাকে। আয় বেশি হলেও অবশ্য খুব একটা লাভ হয়না প্রযোজকদের। কারণ মহাতারকারাই আয়ের ৮০% নিয়ে যান। ওদিকে তাদের জন্যই ছবির বাজেটের আধাটা ওঠে খরচের খাতায়।

বলিউডের প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে ৩ ইডিয়টস প্রথম ২০০ কোটি রুপির ব্যবসা করে

তবে অল্প বাজেটের ছবির ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত মালহোত্রা।এই ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ছে। অধিক সন্ন্যাসিতে যে গাজন নষ্টসেটা সবাই জানি। শিল্পের চাইতে এরা আয়ের দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। একারণেই উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি আমরা দেখাতে পারছিনা।এলিপসিস এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারেতুমহারি সুলুহোয়াই চিট ইন্ডিয়াবেশ আলোচিত হয়েছে। এর ব্যবস্থাপক তনুজ গার্গের মতে, ‘ সিনেমার ক্ষেত্রে কর কমালে এবং শুটিংয়ের অনুমতি আরও সহজলভ্য হলে চলচ্চিত্র শিল্প আরও লাভের মুখ দেখতে পারবে।

অভিনয় আর নিপুণ আঙ্গিকের জোরেই নতুন গল্পকে সাদরে গ্রহণ করছে দর্শক। অবলীলায় একশো কোটির উপরে ব্যবসা করছে অনেক ছবিই। তাই সময়েইএক লাড়কি কো দেখা তো এয়সা লাগা সমকামী চরিত্রে সোনম কাপুর, ‘জাজমেন্টাল হ্যা কেয়াতে মানসিক রোগী হিসেবে কংকনা রানাউত, ‘পিংক নির্যাতিতা হয়ে তাপসী পান্নু কিংবাদ্য স্কাই ইস পিংক মা চরিত্রে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া সাবলীলভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন।

লেখক- সারাহ তামান্না 

Exit mobile version