বিশ্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

এ্যাসাইলাম এর নতুন নিয়মঃ ২১ দিনের মধ্যে শুনানী, ৬ সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত1 min read

ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮ 2 min read

এ্যাসাইলাম এর নতুন নিয়মঃ ২১ দিনের মধ্যে শুনানী, ৬ সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত1 min read

Reading Time: 2 minutes

বিশেষ প্রতিনিধি,

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের জটলা কমাতে নতুন বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। যেখানে, আবেদন করার ২১ দিনের মধ্যে শুনানীর জন্য ডাকা হবে। প্রথম শুনানীর পরই সিদ্ধান্ত হবে বেশিরভাগ আবেদনের, তবে প্রয়োজনে আবেদন কারী আরো ২১ দিন সময় পাবেন তার পক্ষে তথ্য প্রমান হাজির করার জন্য। এর পর, হয় তার আবেদন গ্রহন করা হবে নইলে দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য বলা হবে। একসপ্তাহ আগে ৩১ জানুয়ারী এক প্রজ্ঞাপনে ইমিগ্রেশন দপ্তর এই তথ্য দিয়ে বলেছে, এর আগে যে নিয়মিত এসাইলাম বুলেটিন প্রকাশ করা হতো সেটিও আর থাকছে না।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী জানুয়ারীর ২১ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে নানা দেশ থেকে আসা তিন লক্ষ ১১ হাজার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন ঝুলে আছে। গত পাচ বছরে এই জট বেড়েছে ১৭০০ ভাগ।এমনকি, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বেড়েছে এই সময়ে, আগের চেয়ে তিন গুন বেশি। অনেক সময় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনগুলির সিংহভাগ কেইস ভুয়া কারন দেখিয়ে করা হয় বলেও বলা হয়েছে ইমিগ্রেশন দপ্তরের ঐ প্রজ্ঞাপনে।

ইউসিসি পরিচালক, ফ্রান্সিস কিসনা জানিয়েছেন, ‘ রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনের এই দীর্ঘসুত্রিতার কারণে এই সুযোগের অপব্যবহার করার প্রবনতা বেড়েছে। একই সাথে এর সুযোগ নিয়ে মারাত্বক অপরাধীরা ঢুকে পড়ছে দেশের অভ্যন্তরে।’

২০ বছর আগে ১৯৯৫ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনের যে নিয়ম করা হয়েছিল সেটার সুযোগ নিতে অনেকে মিথ্য তথ্যের আশ্রয় নিতেন। ১৮০ দিনের মধ্যে একটি ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য। প্রাথমিক ভাবে যুতসই কাগজপত্র জমা দেয়া ছাড়াই যেন তেন ভাবে আবেদন করে থাকতেন অনেকেই। সেই সুযোগ বন্ধ হবে এই নতুন বিধানে।

অভিবাসন মানবাধিকার কর্মী কাজী ফৌজিয়া জানিয়েছেন, ‘এখন আমাদের বাংলাদেশীদের মধ্যে থেকে যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করতে চান তাদেরকে আগে জানতে হবে যে কেন তিনি এই আবেদন করছেন।তার যদি সত্যিই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রয়োজন থাকে এবং যেটা তিনি অকাট্য তথ্য প্রমান দিয়ে প্রমান করতে পারবেন, তাহলে আবেদন কারীর ভাগ্যে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি মিলতে পারে। অন্যথায়, তাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফেরত যাওয়ার নোটিশ দেয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন আবেদন কারীদের সতর্ক হতে হবে অনেক বেশি। আর এর ফলে, আগের চেয়ে বেশি হারে ডিপোর্টেশন ও বেড়ে যাবে।’

অন্যদিকে, অভিবাসন আইনের পরামর্শক মঈনুদ্দীন নাসের জানিয়েছেন, ‘ এই নতুন বিধানের ফলে আগে যারা আবেদন করে রেখেছিলেন, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। অনেক ক্ষেত্রে তাদের কেইসগুলি এখন মেশিন নির্ধারিত লটারীর মাধ্যমে ডাকা হবে। অর্থাৎ লটারির মত যারটা সামনে চলে আসবে তাকেই ডাকা হবে। এর বাইরে, আগের আবেদন কারীদের মধ্যে যদি কেউ চান যে তার কেইস এর শুনানীটি তিনি আগে করাতে চান, সেক্ষেত্রে লিখিত আবেদন করলে, স্থানীয় ইমিগ্রেশন দপ্তর তাকেও আগে ডাকতে পারে’।

বলা হয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের জন্য, ডিভি লটারী, পারিবারিক অভিবাসন এর বাইরে সাধারন ভাবে যত আবেদন আসে তার সিংহ ভাগ-ই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন।অনেক বাংলাদেশী এই কোটায় সুযোগ নেন। দেশে রাজনৈতিক সংঘাত, ইসলামি চরমপন্থার উথ্বান, পারিবারিক কোন্দল, বিচারহীনতায় কারাদন্ডভোগের ভয় সহ নানা বিধ কারণ দেখিয়ে তারা আবেদন করেন। এমন অনেক আবেদন কারী আছেন যারা তিন বছর আগে আবেদন করে রেখেও এখনো শুনানীর জন্য ডাক পাননি। আবার নতুন যারা আবেদন করতে চান যাদের মধ্যে অনেকের ক্ষেত্রেই আবেদনের যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ আছে তারাও এই দীর্ঘসুত্রিতার কারণে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করতে ভয় পান। ঐ সব মানুষের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে বর্তমানের নতুন বিধান। কিন্তু যারা এই দেশে ভ্রমন ভিসায় এসে কোন মতে একটি আবেদন ঠুকে দিয়ে ওয়ার্ক পারমিট নেয়ার চিন্তা করতেন তাদের জন্য এই আইন বেশ বিপদে ফেলবে বলেই মনে করছেন আইনী পরামর্শকরা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *