এক বছরে নিহত ৯৫ সাংবাদিকঃ আইএফজে1 min read
সাংবাদিকতা পেশাটাই একটু চাঞ্চল্যকর, কিন্তু সেই চাঞ্চল্য সীমা পরিসীমা ছাড়িয়ে যায় যখন সাংবাদিকদের নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি। পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই দেখা যায় এই সাংবাদিকতা ও জীবনের ঝুঁকির দ্বৈরথ। খুব বেশি পেছন ফিরে তাকানোর দরকার নেই, একটু পেছনে তাকালেই আমরা দেখতে পাব শুধুমাত্র ২০১৮ সালেই পুরো বিশ্বে প্রায় ৯৫ জন সাংবাদিক হারিয়েছেন তাঁদের মূল্যবান জীবন। আইএফজে (ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্ট) এই তথ্য কয়েকদিন আগে বিশ্ব গণমাধ্যম স্বাধীনতা দিবসকে উপলক্ষ করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যানটি প্রকাশ করেছে।
এছাড়া বিবিসির একটি খবরে আইএফজে তথ্য দিয়েছে যে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৮ সালে এই নিহত সাংবাদিকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এক বছরে সবচাইতে বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছিলেন ২০০৬ সালে, সেই বছরে প্রায় ১৫৫ জন সাংবাদিক হারিয়েছিলেন তাঁদের মূল্যবান জীবন।
এছাড়া আইএফজে আরেকটি বিবৃতিতে তথ্য প্রদান করে যে, বিগত বছরে আফগানিস্তান ছিল সাংবাদিকদের জন্য সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। প্রায় ১৬ জনের মত সাংবাদিক শুধুমাত্র আফগানিস্তানেই প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এই ১৬ জনের মধ্যে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলেই ৯ জন সাংবাদিক একটি বোমা হামলার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে মৃত্যু বরন করেন। এছাড়া অন্যান্য আরো বেশ কিছু দেশে অনেক সাংবাদিক মৃত্যু বরন করেছেন তারমধ্যে এগার জন মেক্সিকোতে, আট জন ইয়ামেন ও সিরিয়াতে এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেই প্রায় ৭ জনের মত সাংবাদিক গত বছর প্রাণ হারিয়েছেন।
তবে সাংবাদিক মৃত্যুর এত ঘটনার মধ্যে বিশ্ব মিডিয়াতে সবচাইতে আলোচ্য বিষয়টি ছিল জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ড। তুরস্কে অবস্থিত সৌদি আরবের দূতাবাস এর ভেতরেই তাঁকে হত্যা করা হয় এবং পরবর্তীতে লাশ গুম করে ফেলা হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে সৌদি প্রিন্স সালমানের প্রত্যক্ষ হাত ছিল বলে অভিজগ ওঠে। সৌদি প্রথমে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করলেও পরে তুরস্কের চতুরতা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার চাপে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারটি স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়।
সাংবাদিকতা পেশার ঝুঁকি কেবলমাত্র মৃত্যুই নয় বরং অনেক সাংবাদিককে বিভিন্ন সময়ে কারাবাসও করতে হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এই বিষয়ে সিপিজে (কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট) একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, সেখানে বলা হয়েছে ২০১৮ সালেই প্রায় দুইশত পঞ্চাশ জনের মত সাংবাদিককে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কারাবাস করতে হয়েছে। এই পরিসংখ্যানের সবচাইতে বেশি অংশটি দখল করে আছে তুরস্ক, শুধুমাত্র তুরস্কেই প্রায় ৬৮ জনের মত সাংবাদিককে বন্দী করে কারাবাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া চিনে সাতচল্লিশ জন, পঁচিশ জন মিশরে এবং সৌদি ও ইরিত্রিয়ায় ১৬ জন সাংবাদিককে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে মুক্ত সাংবাদিকতা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে শক্তিশালী রাষ্ট্র, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের গ্রেফতার ও জামাল খাসগির হত্যাকাণ্ড তার একটি বড় উদাহরণ।
জাহেদ
আল্লাহ সবাইকে হেফাজত দান করুন। এভাবে দিন দিন হত্যা কান্ড বেড়েই চলছে ।